17.2 C
London
November 24, 2024
TV3 BANGLA
বাকি বিশ্ব

সিঙ্গাপুরের রাজপুত্রের যুক্তরাজ্যে আশ্রয় আবেদন মঞ্জুর

স্বাধীনতার পর থেকে সিঙ্গাপুরে আধিপত্য বিস্তারকারী এক রাজ পরিবারের একজন প্রবীণ সদস্যের, যুক্তরাজ্যে আশ্রয় আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা যায়।

দ্য গার্ডিয়ানকে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে, লি হসিয়েন ইয়াং বলেন তার পিতার প্রতিষ্ঠিত কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থাকে তিনি চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। তিনি বিভিন্ন বিষয়ে সরকার বিরোধীদের সমর্থন দিয়ে এসেছেন। যা তাকে বিপদশঙ্কুল পরিস্থিতিতে ঠেলে দেয়।

তিনি আরো বলেন, ” সিঙ্গাপুরের খুব উন্নত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি থাকা সত্ত্বেও, এর একটি অন্ধকার দিকও রয়েছে। যা হল সরকার বিরোধীদের দমনপীড়ন। বাইরের পৃথিবীর লোকেরা ভাবেন, সিঙ্গাপুর স্বর্গরাজ্য কিন্তু আদৌ সেটা ঠিক নয়”।

সিঙ্গাপুরের সরকারী মুখপাত্র জানিয়েছেন, লি হসিয়েন ইয়াং এবং তার পরিবার “সিঙ্গাপুরে নির্দ্বিধায় ফিরে আসতে পারেন। মুখপাত্র আরো বলেন, তার করা সকল অভিযোগ সম্পূর্ণ “ভিত্তিহীন”।

লি হসিয়েন ইয়াং দাবি করেন সিঙ্গাপুর সরকার ও কর্তৃপক্ষ তাকে, তার স্ত্রী এবং তার ছেলের বিরুদ্ধে একাধিক আইনী পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে যাতে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন। নিজের ব্যক্তিগত সুরক্ষার জন্য তিনি বিশ্বাস করেন সিঙ্গাপুরে বাস করা তার জন্য ঠিক নয়”।

তিনি আরও যোগ করেন, ” বিশ্বের আরও ঘনিষ্ঠভাবে দেখা উচিত সিঙ্গাপুরে কি ঘটছে। কারা সিঙ্গাপুরে মূল সুবিধাভোগী? সিঙ্গাপুরের দিকে তাকালে দেখা যায় মানিলন্ডারিং, মাদকের অর্থ, ক্রিপ্টো অর্থের খেলা চলছে সেখানে যা বহিঃ বিশ্বে অবৈধ। সিঙ্গাপুরের আর্থিক ব্যবস্থা সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বারবার আন্তর্জাতিক দুর্নীতি কেলেঙ্কারীগুলিতে একটি ভূমিকা পালন করেছে।”

সিঙ্গাপুর সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, দেশটির “অর্থ পাচার এবং অন্যান্য অবৈধ আর্থিক প্রবাহকে নিরস্ত এবং মোকাবেলার জন্য একটি শক্তিশালী ব্যবস্থা রয়েছে”, যা যুক্তরাজ্যের চেয়েও স্বচ্ছ। আন্তর্জাতিক দুর্নীতি অনুধাবন সূচকের র‌্যাঙ্কিংয়ের দিকে তাকালেই বোঝা যায়।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ইউকে-র পরিচালক ডানকান হেমস বলেন: “ ব্রিটেন খুব ভাল জানে কিছু দুর্নীতি ব্যবস্থা নিয়ে। অনেক দেশের তাদের ঘরোয়া দুর্নীতির কোনো সমস্যা নেই তা ঠিক তবে অন্য কোথাও দুর্নীতিগ্রস্থ নেটওয়ার্কগুলিকে সক্ষম রাখতে তাদের একটি ভুমিকা আছে। যে কথাটি সিঙ্গাপুরের জন্য প্রযোজ্য। সিঙ্গাপুর একটি প্রধান আর্থিক কেন্দ্র হিসাবে কাজ করে যার মাধ্যমে অবৈধ তহবিল সরানো বা আড়াল করতে রাস্তা হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে দীর্ঘদিন হতে।”

উল্লেখ্য যে, লি হসিয়েন ইয়াংয়ের বাবা লি কুয়ান ইউ, সিঙ্গাপুরকে দারিদ্র্য ও বেকারত্বমুক্ত করে গড়ে তুলতে মূল ভুমিকা নিয়েছিলেন। যার কারণে সিঙ্গাপুর হয়ে উঠেছিল একটি অর্থনৈতিক পাওয়ার হাউস। লি কুয়ান ইউ, ১৯৫৯ সাল থেকে তার কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে প্রাক্তন ব্রিটিশ কলোনি হতে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলেন।
যদিও তার উপর শত শত বিরোধী গ্রুপের লোকদের উপর নির্যাতন ও প্রেস এবং সামাজিক স্বাধীনতা হ্রাসের অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন বিশ্ব মিডিয়ায় তাকে “গণতান্ত্রিক বিশ্বের প্রিয় স্বৈরশাসক” হিসাবেও বর্ণনা করা হয়েছে।

তথ্যমতে জানা যায় লি কুয়ান ইউ, ১৯৯০ সালে পদত্যাগ করার পরে ২০০৪ সাল পর্যন্ত সিনিয়র মন্ত্রী হিসাবে সরকারে উল্লেখযোগ্য প্রভাব বজায় রেখেছিলেন। সেই সময় তার বড় সন্তান লি হসিয়েন লুং প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। ২০২৪ সালের মে মাস পর্যন্ত দুই দশক ধরে এই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন তার বড় সন্তান লি হসিয়েন লুং। তার বাবার মতো তিনিও মন্ত্রিসভায় সিনিয়র মন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে অব্যাহত দমনপীড়ন অব্যাহত রেখেছেন বলে জানা যায়।হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এখনও দেশটিকে “অপ্রতিরোধ্যভাবে বিরোধীমতের দমনকারী” হিসাবে বর্ণনা করে।

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
২২ অক্টোবর ২০২৪

আরো পড়ুন

ভারতের মুসলিম বিরোধী আচরণের সমালোচনা করে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া বক্তব্য

বাংলাদেশ এখন পাকিস্তানের বড় ভাই হয়ে যাবে: ভারতীয় মন্ত্রী

ভারত এখন বিশ্বের ক্যান্সার রাজধানীঃ অ্যাপোলো হসপিটালস