6.4 C
London
December 23, 2024
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

হবিগঞ্জে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, গুলিতে পথচারী নিহত

বিক্ষোভকারী ও পুলিশের সংঘর্ষে হবিগঞ্জ শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এ সময় সংঘর্ষে এক পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। তার নাম মোস্তাক মিয়া (২৬)। এ ছাড়া সংঘর্ষে প্রায় শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে।

আজ শুক্রবার বিকেলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, নিহত মোস্তাক মিয়া সিলেট টুকেরবাজার এলাকার মারুফ মিয়ার ছেলে। তিনি হবিগঞ্জ পিডিবিতে অস্থায়ী কর্মচারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

হবিগঞ্জ জেলা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মমিন উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘মোস্তাক মিয়ার বুকে বুলেটের আঘাত বলে মনে হচ্ছে। ডান হাতে একটি গুরুতর আঘাত আছে। ময়নাতদন্ত হলে বিষয়টি নিশ্চিতভাবে জানানো যাবে।’

বাদ জুমা শহরের কোর্ট মসজিদ চত্বর ও অপর প্রান্তে খোয়াই নদের তীরে নূরুল হেরা জামে মসজিদের সামনে গণমিছিল কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। দীর্ঘ সময় ধরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা শহরের কোর্ট মসজিদ প্রাঙ্গণে অবস্থান নিয়ে প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে বিএনপি নেতা-কর্মীরা সংহতি জানিয়ে শিক্ষার্থীদের গণমিছিলে যোগ দেন। মিছিলটি টাউন হল এলাকায় পৌঁছালে একই সময়ে চৌধুরী বাজার এলাকার মিছিলটিও টাউন হলে সামনে এসে একত্রিত হয়। এরপর আন্দোলনকারীরা টাউন হল এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করেন। একই সময় তাঁরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য মো. আবু জাহিরের বাসভবনের সামনে রাখা চারটি মোটরসাইকেল ও একটি প্রাইভেট কার পুড়িয়ে দেন। একই সঙ্গে আন্দোলনকারীরা আওয়ামী লীগ সভাপতির বাসভবনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পাশাপাশি টাউন হল এলাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতাল, কয়েকটি বিপণিবিতান ও দোকানপাটে ব্যাপক ভাঙচুর করেন।

পুলিশ আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার শেল, রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এ সময় আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে শহরের তিনকোনা পুকুরপাড় এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন মোস্তাক নামের এক যুবক। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মুমিন উদ্দিন চৌধুরী মোস্তাককে মৃত ঘোষণা করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সঙ্গে যোগ দেয় বিজিবি, র‍্যাব ও সেনাবাহিনী। পরে জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আলমগীর চৌধুরীর নেতৃবৃন্দ জড়ো হয়ে শহরের সিনেমা হল এলাকায় বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করে আগুন দেয়।

হবিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আগুনের খবর পেয়ে আমাদের দুটি ইউনিট রওনা দিয়েছিল, কিন্তু রাস্তায় সংঘর্ষ চলায় তারা ঘটনাস্থলে যথাসময়ে যেতে পারেনি।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আলমগীর চৌধুরী বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা শহরের টাউন হলে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি পালন করছিলাম। এ সময় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বিএনপি, জামায়াত, ছাত্রদল, শিবির অংশ নিয়ে অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করে। পরে তারা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির বাসভবনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।’

হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ‘আন্দোলনকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়ে। এতে আমাদের কয়েকজন পুলিশ আহত হন। আমরা জনগণের জানমাল রক্ষার্থে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করি। শহরে এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।’

এম.কে
০২ আগস্ট ২০২৪

আরো পড়ুন

অন্তর্বর্তী সরকারই তত্ত্বাবধায়কে রূপান্তরিত হতে পারেঃ অ্যাটর্নি জেনারেল

অসহযোগ আন্দোলন ঘিরে দেশবাসীকে শিক্ষার্থীদের ১৫ জরুরি নির্দেশনা

কোটা আন্দোলকারীদের উপর হামলা, যে বিবৃতি অ্যামনেস্টির