নতুন উদ্ভাবিত রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ৫০টিরও বেশি প্রকার ক্যান্সার সনাক্ত করা সম্ভব, পাশাপাশি ক্যান্সারের লক্ষণ বিকাশের আগেই শরীরের কোথায় তাদের উদ্ভব তা নির্ণয় করা যাবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের গবেষকরা এই পরীক্ষাটি উদ্ভাবন করেছেন এবং তাদের গবেষণাটি আন্নালস অব অনকলোজি জার্নালে প্রকাশ করেছেন।
মরণব্যধি ক্যান্সার চিকিৎসার ভালো ডায়াগনস্টিক সরঞ্জাম জরুরি প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বে। প্রতিটি ক্ষেত্রে এই রোগের লক্ষণগুলো বিকশিত হওয়ার পরে চিকিৎসকদের পক্ষে তা নির্ণয় সম্ভব হয়। ততোদিনে অনেক দেরি হয়ে যায়।
স্ক্রিনিং প্রোগ্রামগুলো, যেমন স্তন ক্যান্সারের জন্য ম্যামোগ্রাম এবং জরায়ু ক্যান্সারের জন্য পাপ স্মিয়ার্সের মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যয়ে ক্যান্সার সনাক্ত করে। কিন্তু এই পরীক্ষাগুলো বেশিরভাগ মানুষের নাগালের বাইরে। এভাবে খুব অল্পসংখ্যক ক্যান্সার নির্ণয় সম্ভব। অপরদিকে এসব পদ্ধতির কোনোটা আক্রমণাত্মক বা অস্বস্তিকরও হতে পারে, যার কারণে এই পরীক্ষা করাতে নিরুৎসাহ জন্মানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
এখন, গবেষকরা একটি সাধারণ ব্লাড টেস্ট উদ্ভাবন করেছেন, যা রক্তের একক অঙ্কন থেকে কোনো ক্লিনিকাল লক্ষণ বা লক্ষণগুলো বিকাশের আগে অনেক ক্ষেত্রে ৫০টিরও বেশি ক্যান্সার সনাক্ত করতে পারে।
টিউমার সেল থেকে বের হওয়া ডিএনএ ব্যবহার করে এই পরীক্ষাটি করা হয়। এই ডিএনএগুলো রক্তে মিশে থাকে, যাকে বলা হয় সেল ফ্রি ডিএনএ (সিএফডিএনএ)। কিন্তু টিউমার থেকে মুক্তি পাওয়া সিএফডিএনএ সনাক্ত বেশ চ্যালেঞ্জিং। কারণ, দেহের অন্য অনেক কোষও রক্তে ডিএনএ ছাড়ে।
রক্তের নমুনা থেকে ক্যান্সার সেল থেকে বের হওয়া সিএফডিএনএ আলাদা করার পর সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করা হয়। চিকিৎসকরা এই তথ্য কম্পিউটারে প্রবেশ করালে পরীক্ষার ফলাফল পাবেন।
১৫ হাজার লোকের ওপর গবেষণাটি পরিচালিত হয়। চার হাজারেরও বেশি লোকের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এদের প্রায় অর্ধেকেরই ক্যান্সার ছিল। গবেষণায় ৫০ ধরনের ক্যান্সার সনাক্ত করা গেছে।
গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, পরীক্ষাটি ৯৩ শতাংশ কার্যকর এবং ৯৬ শতাংশ ক্ষেত্রে শরীরের কোথায় ক্যান্সারটি হয়েছে তা সঠিক অনুমাণ করতে পারে।
পরীক্ষাটির ফলস পজিটিভ রেট ০.৭ শতাংশ। অর্থাৎ, ১ শতাংশেরও কম লোকের ভুল ফলাফল দিয়েছে। অপরদিকে স্তন ক্যান্সারের ফলস পজিটিভ রেট ১০ শতাংশ।
২৫ জুন ২০২১
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান