প্রায় ৫০ বছর ধরে মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করছে একটি হিন্দু পরিবার। বিভিন্ন উন্নয়ন খরচও বহন করছেন তারা। শুধু তা-ই নয়, সেহরির সময় ইমামকে ডেকে দেওয়া, ওজুর পানি সরবরাহ, মসজিদ পরিষ্কারসহ নানা কাজ করছে পরিবারটি। ধর্মীয় সম্প্রীতির এ ঘটনা ভারতের উত্তর ২৪ পরগনায়।
‘আমানতি মসজিদ’ নামে পরিচিত ওই মসজিদ প্রায় অর্ধ শতাব্দী ধরে রক্ষণাবেক্ষণ করছে সেই হিন্দু পরিবার। ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের দাবি, ১৯৬৫ সালে বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনায় পাড়ি জমান খুলনার নীরদ কৃষ্ণ বসু।
স্থানীয় মোড়লের সঙ্গে বিনিময়ের মাধ্যমে মসজিদের জায়গাসহ মালিক হন ১৬ বিঘা জমির। এরপর থেকে শতবর্ষ পুরোনো মসজিদটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন নীরদ বসুর ছেলে দীপক বসু। এখন এটি রক্ষণাবেক্ষণ করছেন দীপক বসুর ছেলে পার্থ সারথি বসু। অর্থাৎ বংশ পরম্পরা ধরেই মসজিদটির সেবায় নিয়োজিত পরিবারটি।
পার্থ বসুর দাবি, ছোটবেলায় তিনি খুব অসুস্থ হলে চিকিৎসক তার বেঁচে থাকার আশা ছেড়ে দেন। পরিবারও উপায় না দেখে এই মসজিদে ফেলে রেখে যান তার মা। পরে মসজিদের ইমাম তাকে দেখভাল করলে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন। সেই স্মৃতি নিয়ে এখনো হাসিমুখে থাকেন।
শুধু নিজের অর্থে মসজিদটি পুনর্নির্মাণই নয়, এখন স্বপ্ন দেখছেন, একটি মিনার নির্মাণের। ধর্মের নামে যুদ্ধ-লড়াই ভুলে সবাইকে মিলেমিশে একসঙ্গে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন পার্থ বসু।
৩০ ফুট দৈর্ঘ্য আর ২৫ ফুট প্রস্থের এই মসজিদের ইমাম মাওলানা আখতার আলি। পার্থ বসুর নিবেদন মুগ্ধ করে তাকে। বলেন, পার্থ বসুর আচরণে মনেই হয় না তিনি অন্য সম্প্রদায়ের মানুষ। মসজিদের সব কাজেই যুক্ত থাকেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, পার্থর এ কাজ অন্যদের জন্য উদাহরণ। যারা সাম্প্রদায়িক, সমাজের শান্তি বিনষ্টকারী, পার্থ বসুর এই কাজ থেকে তাদের শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
এম.কে
২১ নভেম্বর ২০২৩