5.3 C
London
December 23, 2024
TV3 BANGLA
আন্তর্জাতিক

অনিয়মিত অভিবাসন ঠেকাতে মিশরকে ইইউর ৮০০ কোটি ডলার সহায়তা

তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে থাকা আফ্রিকার দেশ মিশরকে আটশ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা দেয়ার একটি প্রকল্প ঘোষণা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ মিশরে চলমান অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং এর প্রতিবেশী দেশগুলোতে রাজনৈতিক সংঘাতের ফলে মিশর হয়ে অনিয়মিত পথে ইউরোপমুখী অভিবাসন ঠেকাতেই এই সহায়তা প্রকল্প হাতে নেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷

রোববার মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ এল-সিসি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লেয়েন সহায়তা চুক্তিতে সই করেন৷ যদিও ইউরোপের ডানপন্থি দলগুলো এমন চুক্তির বিরোধিতা করছে৷

বেলজিয়াম, ইটালি, অস্ট্রিয়া, সাইপ্রাস এবং গ্রিসের নেতারাও চুক্তি সই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন৷ এই চুক্তিটিও ইইউর সাথে আফ্রিকার দেশ টিউনিশিয়া এবং মৌরিতানিয়ার করা চুক্তির মতোই। ওই দুই দেশের সাথেও একই রকম এক চুক্তি সই করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ বলা হয়, দেশ দুটির সীমান্ত সুরক্ষিত করতে অর্থ সহায়তা দেবে ইইউ৷ ওই দুই দেশের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আফ্রিকার অনেক দেশ থেকে ইউরোপ অভিমুখে যাত্রা করেন অভিবাসন প্রত্যাশীরা৷

চুক্তি সই অনুষ্ঠানে মিশরের প্রেসিডেন্ট এল-সিসি চুক্তিটিকে মিশর ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্কের মাঝে একটি বাঁক বদল বলে মন্তব্য করেন৷

জানা গেছে, তিন বছরের এই সহায়তা প্রকল্পটিতে মিশরকে ঋণ এবং অনুদান দেয়া হবে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের কায়রো মিশন জানায়, প্রদেয় অর্থের একটি বড় অংশ অর্থাৎ পাঁচশ কোটি ডলার মাইক্রো ফিনান্সিয়াল অ্যাসিসটেন্সের আওতায় দেয়া হবে৷

এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে ভূমধ্যসাগরীয়, নিকট প্রাচ্য এবং আফ্রিকা অঞ্চলে নিরাপত্তার এবং শান্তি স্থাপনের ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে মিশর৷ আর ইটালির প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনি এই চুক্তিটিকে একটি ‘ঐতিহাসিক’ পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেন৷

তিনি বলেন, ‘‘এই চুক্তি ভূমধ্যসাগরের দুই পাড়ের অংশীদারদের ইচ্ছাকে ফুটিয়ে তুলছে এবং সহযোগিতার একটি নতুন কাঠামোকে অনুপ্রাণিত করছে৷’’

ইউরোপীয় কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, জয়েন্ট ডিক্লারেশন নামে এই চুক্তিটি গণতন্ত্র, মৌলিক স্বাধীনতা, মানবাধিকার এবং লিঙ্গ সমতা নিশ্চিতের বিষয়েও কাজ করবে৷ তাছাড়া অভিবাসন এবং সন্ত্রাসবাদের হুমকি মোকাবিলায়ও পারস্পরিক সম্পর্ক আরো গভীর করবে৷

চুক্তির অংশ হিসেবে লিবিয়ার সাথে থাকা সীমান্ত সুরক্ষিত রাখতে মিশরকে সহযোগিতা করবে ইইউ৷ এই সীমান্ত দিয়ে আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশের অভিবাসন প্রত্যাশীরা অনিয়মিত পথে ইউরোপের দিকে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করে থাকেন৷ তাছাড়া সুদানের চলমান রাজনৈতিক সংঘাত এড়িয়ে আসা শরণার্থীদের আশ্রয় দিতেও মিশরকে সহযোগিতা করবে ইইউ৷ উল্লেখ্য, গত বছরের এপ্রিলের পর থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে চার লাখের বেশি সুদানি শণার্থীকে মিশরে আশ্রয় দিয়েছে।

মিশরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশটিতে মোট শরণার্থীর সংখ্যা ৯০ লাখেরও বেশি৷ এরমধ্যে চার লাখ ৮০ হাজার জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থায় লিপিবদ্ধ৷ তাদের অনেকেই ব্যবসাবাণিজ্য গড়ে তুলেছেন আর অনেকেই দেশটির অনানুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক খাতে যুক্ত রয়েছেন৷

দশকের পর দশক ধরে সাব সাহারা আফ্রিকার শরণার্থীদের গন্তব্য হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে মিশর৷ তাছাড়া অনেকেই আবার ইউরোপে পাড়ি জমানোর উদ্দেশে মিশরের সমুদ্র উপকূলকে বেছে নেয়৷

এদিকে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা, করোনা মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ সব মিলিয়ে ভঙ্গুর পরিস্থিতিতে মিশরের অর্থনীতি৷ এমন পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে করা এই সহযোগিতা চুক্তি দেশটির অর্থনীতির জন্য সহযোগী হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা৷

সূত্রঃ এপি

এম.কে
১৯ মার্চ ২০২৪

আরো পড়ুন

বাংলাদেশ ছেড়েছেন ৬ হাজার ৭০০ ভারতীয়

নিউইয়র্কে বাড়িতে ঢুকে হামলা, শিশুসহ একই পরিবারের ৪ জন নিহত

এক মিনিটেরও কম সময়ে পুরো উপন্যাস পড়বে এআই