18 C
London
September 19, 2024
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

‘অনির্ভরযোগ্য আচরণের’ জন্য আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট ১৪৮ অ্যাকাউন্ট-পেজ সরিয়ে দিলো ফেসবুক

বাংলাদেশের মোট ১৪৮টি অ্যাকাউন্ট ও পেজ ফেসবুক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির মূল প্রতিষ্ঠান মেটা তাদের চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে। এর মধ্যে ৫০টি হচ্ছে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট।

এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভুয়া পরিচয়ের এসব অ্যাকাউন্ট ও পেজগুলোর বিষয়ে মেটা যে অনুসন্ধান করেছে তাতে এগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং এর গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের যোগসূত্র পাওয়া গেছে।

মেটা তার রিপোর্টে বলেছে, “সমন্বিত অনির্ভরযোগ্য আচরণের জন্য আমরা ফেসবুক থেকে ৫০টি অ্যাকাউন্ট ও ৯৮টি পেজ সরিয়ে ফেলেছি। এই নেটওয়ার্কটি বাংলাদেশেরই এবং তারা বাংলাদেশের স্থানীয় অডিয়েন্সকে টার্গেট করেছিল।”

এসব অ্যাকাউন্ট ও পেজগুলোর মোট প্রায় ৩৪ লাখ ফলোয়ার ছিল। একইসাথে এসব পেজ থেকে প্রায় ৬০ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ বিজ্ঞাপনে ব্যয় করা হয়েছে।

ভুয়া অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে এ ধরনের তৎপরতার পেছনে যারা আছে, তাদের কয়েকজনকে অনুসন্ধানের আগেই অটোমেটেড সিস্টেমেই চিহ্নিত করে অকার্যকর করা হয়েছে। তারা এ ধরনের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে কনটেন্ট পোস্ট করতো বা পেজগুলো চালাতো।

এর মধ্যে কিছু পেজ কাল্পনিক নতুন পরিচয় নিয়ে এবং অন্যগুলো বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমগুলোর নাম ব্যবহার করতো। আবার কিছু পেজ বিএনপির নাম ব্যবহার করতো এবং বিএনপি বিরোধী কনটেন্ট পোস্ট করতো।

এসব ভুয়া অ্যাকাউন্ট ও পেজগুলোর নেটওয়ার্ক ইউটিউব, এক্স (সাবেক টুইটার), টিকটক, টেলিগ্রাম ও তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটসহ একাধিক প্ল্যাটফর্মে রয়েছে বলে মেটার অনুসন্ধানে উঠে এসেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই নেটওয়ার্ক প্রাথমিকভাবে বাংলাতেই কনটেন্ট পোস্ট করতো। তবে নিউজ ও বাংলাদেশের চলতি ঘটনাবলী ইংরেজিতেও প্রকাশ করা হতো।

এসব ঘটনাবলীর মধ্যে ছিল নির্বাচন, বিএনপির সমালোচনা, বিএনপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এবং নির্বাচন পূর্ব সহিংসতায় দলটির ভূমিকা, বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত উন্নয়নে দলটির ভূমিকা।

“আমরা অভ্যন্তরীণ তদন্তের ফল হিসেবে এসব সন্দেহজনক ও অনির্ভরযোগ্য অতিরিক্ত তৎপরতা দেখতে পেয়েছি, যা গত বছর আমরা সরিয়ে দিয়েছি। আমরা সমন্বিত অনির্ভরযোগ্য আচরণের একটি নেটওয়ার্ক উন্মোচন করতে পেরেছি, যা এই রিপোর্টে বলা হয়েছে,” প্রতিবেদনে বলেছে মেটা।

এতে আরও বলা হয়েছে, “যদিও এগুলোর পেছনে থাকা ব্যক্তিরা তাদের পরিচয় ও নিজেদের মধ্যকার সমন্বয়ের বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করেছে কিন্তু আমাদের অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে যে যারা এগুলোর সাথে জড়িত তাদের সাথে আওয়ামী লীগ ও অলাভজনক সংস্থা সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন এর যোগসূত্র রয়েছে।”

বাংলাদেশের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গত বছর আগস্টে মেটার কর্মকর্তারা ঢাকায় এসে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিল। পরে এ নিয়ে বিবিসি বাংলার ই-মেইলের জবাবে মেটা গুজব মোকাবিলা করতে ও ক্ষতিকর কনটেন্টের বিরুদ্ধে ফেসবুকসহ মেটার প্ল্যাটফর্মগুলোতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তা জানিয়েছিল।

তখন মেটা বলেছিল, গুজব ঠেকাতে সারা বিশ্বে ৯০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করে তারা। বাংলাদেশে তারা যেসব প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করে, এর মধ্যে রয়েছে ফ্যাক্টওয়াচ, এএফপি ও বুম বাংলাদেশ।

গুজব ছড়ানো কনটেন্টের পাশাপাশি যেসব অ্যাকাউন্ট থেকে গুজব ছড়ানো হয়, সেগুলোও ডিলিট করা হয় বলে তখন বলেছে মেটা।

আর কোনো বিষয়ে গুজব ছড়িয়ে যাওয়ার পর সেই ঘটনা সংক্রান্ত সঠিক খবর বা পোস্টের লিংক বেশি করে প্রচার করা হয় যেন ব্যবহারকারীরা ঐ নির্দিষ্ট বিষয়ে সঠিক তথ্য জানতে পারে।

মেটা জানায়, তাদের প্ল্যাটফর্মের নিয়মকে ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে অনেকে কনটেন্ট তৈরি করে থাকে, যে বিষয়ে তারা ওয়াকিবহাল।

এরকম ঘটনা ঠেকাতে তারা নিয়মিত তাদের আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স সিস্টেমের উন্নয়ন করছে এবং সুশীল সমাজ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনের সাথে কাজ করছে বলে উঠে আসে মেটার বিবৃতিতে।

সূত্রঃ বিবিসি

এম.কে
০২ জুন ২০২৪

আরো পড়ুন

টি-২০ তে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টাইগারদের জয়

পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত সিলেটের গোয়াইনঘাট, প্লাবিত ৭০ শতাংশ এলাকা

১ আগস্ট পর্যন্ত এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত