20.1 C
London
July 23, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

অবৈধ ডেলিভারি রাইডার চিহ্নিত করতে অ্যাসাইলাম হোস্টেলের ঠিকানা দেবে ব্রিটেন সরকার

ব্রিটেনে অবৈধভাবে অবস্থানরত অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে চলেছে কিয়ার স্টারমারের নতুন লেবার সরকার। বিশেষ করে যারা ফুড ডেলিভারি প্ল্যাটফর্মে রাইডার হিসেবে কাজ করছেন, তাদের শনাক্ত করতে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।

 

সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা এসেছে, আশ্রয়প্রার্থী বা অ্যাসাইলাম দাবিদারদের যেসব হোস্টেলে রাখা হচ্ছে, সেই সব ঠিকানা সরাসরি Deliveroo, Just Eat এবং Uber Eats-এর মতো জনপ্রিয় ফুড ডেলিভারি কোম্পানির সঙ্গে শেয়ার করা হবে। উদ্দেশ্য একটাই—যাতে এই প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের রাইডারদের মধ্যে কেউ এসব ঠিকানায় বসবাস করছে কি না, তা যাচাই করতে পারে এবং প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারে।

এই পদক্ষেপের মাধ্যমে কিয়ার স্টারমার সরকার স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে—ব্রিটিশ জনগণের ন্যায্যতা ও সুশৃঙ্খল অভিবাসন নীতি রক্ষায় তারা আপসহীন। প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেছেন, “আমরা ব্রিটিশ জনগণের প্রতি ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে যা কিছু প্রয়োজন, তাই করব।”

সরকারের এই পদক্ষেপ অভিবাসন পরিস্থিতি নিয়ে চলমান বিতর্কের প্রেক্ষাপটে এসেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে আশ্রয়প্রার্থীদের একটি অংশ Uber Eats বা Deliveroo-এর মতো প্ল্যাটফর্মে কাজ শুরু করেন, যেখানে নিয়োগের ক্ষেত্রে সরাসরি চুক্তির মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং অনেক ক্ষেত্রে পরিচয় যাচাইয়ের ঘাটতি থেকে যায়।

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, এই উদ্যোগের পেছনে অভিপ্রায় শুধু নিয়ন্ত্রণ নয়, বরং বড় পরিসরে অবৈধ শ্রমবাজারের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা নেওয়া। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আশা করছে, ডেলিভারি প্ল্যাটফর্মগুলো আশ্রয়প্রার্থীদের তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনে সেইসব কর্মীদের কাজ থেকে সরিয়ে দেবে যাদের বৈধভাবে কাজ করার অনুমতি নেই।

এদিকে মানবাধিকার সংগঠনগুলো সরকারের এই পদক্ষেপকে উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছে। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, এভাবে আশ্রয়প্রার্থীদের ঠিকানা ও অবস্থান বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া হলে তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

অন্যদিকে সরকার বলছে, এই ব্যবস্থা কেবলমাত্র আইনশৃঙ্খলা ও অভিবাসন নীতির সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করতে নেওয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, এই তথ্য ব্যবহার করে কোনও সংস্থা যেন আশ্রয়প্রার্থীদের হয়রানি বা বৈষম্যের শিকার না করে, সে বিষয়েও কড়া নজরদারি থাকবে।

ফুড ডেলিভারি কোম্পানিগুলো সরকারের প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে কি না, সে বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে, বড় বড় প্ল্যাটফর্মগুলো সরকারের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদানের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে।

কিয়ার স্টারমারের সরকার এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দেখাতে চাইছে, তারা শুধুমাত্র কঠোর অভিবাসন নীতি নয়, বরং একটি সংগঠিত ও দায়িত্বশীল শ্রমবাজার গঠনেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে এই সিদ্ধান্ত কতটা কার্যকর ও মানবিকভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, তা এখন সময়ই বলবে।

সূত্রঃ স্যোশাল মিডিয়া

এম.কে
২৩ জুলাই ২০২৫

আরো পড়ুন

দক্ষ শরণার্থীদের ৫ বছরের ওয়ার্ক ভিসা দিবে যুক্তরাজ্য

লন্ডন এমব্যাঙ্কমেন্ট টিউব স্টেশনে একটি ভালোবাসার গল্প

বাংলাদেশি দুর্নীতিবাজদের বিলাসী জীবন লন্ডনে, তদন্ত চাইছে আন্তর্জাতিক মহল