ব্রিটিশ সরকারের ‘স্টপ দ্য বোটস’ বা ‘নৌকাযাত্রা বন্ধ’ করার নীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা। তিনি বলেছেন, অভিবাসন ইস্যুতে সমস্যাগুলোর প্রতি দেশটি ‘কপট প্রতিক্রিয়া’ দেখাচ্ছে।
গত বছরের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের ঘোষণা করা ২০২৩ সালের পাঁচ অগ্রাধিকারের মধ্যে ছিল “নৌকাযাত্রা থামানোর” প্রতিশ্রুতি। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি মনে করেন, অভিবাসীরা ‘সহজ লক্ষ্যবস্তুতে’ পরিণত হয়েছে।
আগামি এক বছরের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এবং যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচন। গ্রান্ডি মনে করেন, এর আগে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো অভিবাসন ইস্যুতে নির্বাচকদের চাপের মুখে রয়েছেন।
বিবিসি রেডিও ফোর এর টুডে প্রোগ্রামকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “কিন্তু মূলত রাজনীতিবিদরাই ইস্যুটিকে উসকে দিচ্ছেন।”
তিনি বলেন, “ভোট পাওয়ার জন্য প্রায়ই একগাদা জাল খবর তৈরি করে কারসাজি করা হয়। অভিবাসী, শরণার্থীরা সহজ লক্ষ্যবস্তু। ‘আমাদের কোমড় বেঁধে এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতে হবে’ বলাটা আকর্ষণীয় নয়। বরং ‘আসুন তাদের পেছনের দিকে ঠেলে দেওয়া যাক এবং এটাই আমাদের সমস্ত সমস্যার সমাধান করবে’ বলাটা বেশি আকর্ষণীয়। যদিও এতে আসলে সমস্যার সমাধান হবে না।”
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক জাতিসংঘের শরণার্থী প্রধানকে জিজ্ঞেস করেন, তিনি সুনাকের ‘নৌকা থামাও’ এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘দেয়াল বানাও’ নীতির দিকে ইঙ্গিত করছেন কিনা। উত্তরে গ্রান্ডি বলেন, “একদম তাই”।
“এগুলো কপট প্রতিক্রিয়া যা এই সমস্যার সমাধানও করবে না। সমস্যা হলো এর ফলে জটিল চিন্তাভাবনার মাধ্যমে বাস্তবিক সমাধান বের করার বদলে মনোযোগ অন্যদিকে সরে যায়।”
বিবিসিকে সাক্ষাৎকার দেয়ার সময় ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে অবস্থান করছিলেন গ্রান্ডি। যুক্তরাজ্য সরকারের রুয়ান্ডা প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
প্রস্তাবিত পাঁচ বছরের চুক্তিতে যুক্তরাজ্যে আগত কিছু আশ্রয়প্রার্থীকে তাদের আবেদন প্রক্রিয়াকরণের জন্য আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডায় পাঠানো হবে। বর্তমানে এই আইন পার্লামেন্টের অনুমোদন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
এই পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, কারো আশ্রয় আবেদন সফল হলে তাদের শরণার্থী মর্যাদা দেওয়া হতে পারে এবং মধ্য আফ্রিকার দেশটিতে বাস করার অনুমতি দেওয়া হতে পারে। তারা চাইলে রুয়ান্ডায় স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন বা অন্য একটি ‘নিরাপদ তৃতীয় দেশেও” আশ্রয় চাইতে পারবেন।
২০২৩ সালের নভেম্বরে যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট সর্বসম্মতিক্রমে রুয়ান্ডা প্রকল্পকে ‘বেআইনি’ ঘোষণা করে রায় দেয়। এই রায়ের পর সরকার যুক্তরাজ্যের আইনে রুয়ান্ডা যে একটি নিরাপদ দেশ তা স্পষ্ট করার জন্য নতুন একটি বিল এনেছে।
সূত্রঃবিবিসি
এম.কে
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪