TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

অভিবাসীদের ওপর দ্বিগুণ বোঝাঃ এনএইচএস বিল ও ভিসা ফি বাড়াতে যাচ্ছে ব্রিটিশ সরকার

যুক্তরাজ্যে দক্ষ অভিবাসীদের স্থায়ী বসবাসের পথ আরও দীর্ঘ করার প্রস্তাবে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। অভিবাসীরা বলছেন, এভাবে তাদের “দ্বিগুণ মূল্য” দিতে হচ্ছে—একদিকে কর ও ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স, অন্যদিকে ভিসা ফি ও এনএইচএস চার্জ।

বর্তমানে স্থায়ী বসবাসের জন্য অপেক্ষার সময়সীমা পাঁচ বছর। এ সময়ে অভিবাসীদের প্রতি বছর এনএইচএস সারচার্জ বাবদ প্রায় ১,০৩৫ পাউন্ড দিতে হয়। এর সঙ্গে যুক্ত হয় ভিসা নবায়ন খরচ, যা কয়েক হাজার পাউন্ড ছাড়িয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মারের নেতৃত্বাধীন লেবার সরকার এই সময়সীমা ১০ বছরে বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে, যা ইতোমধ্যেই অভিবাসী পরিবার ও অভিবাসন অধিকার কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

লন্ডনের দক্ষিণাঞ্চলে বসবাসরত নাইজেরীয় বংশোদ্ভূত উচে ও তার স্বামী ২০১১ সালে যুক্তরাজ্যে আসার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৩ হাজার পাউন্ড খরচ করেছেন ভিসা ও স্বাস্থ্যসেবার বাড়তি চার্জে। উচে অভিযোগ করে বলেন, “আমরা কর দিই, তবু আবার স্বাস্থ্যসেবার জন্য হাজার হাজার পাউন্ড দিতে হয়। আমার স্বামী উচ্চ আয়ের চাকরির যোগ্য হলেও ‘ফারদার লিভ টু রিমেইন’ থাকায় তিনি সুযোগ পাচ্ছেন না।”

সংসদীয় বিতর্কেও বিষয়টি আলোচিত হয়। লেবার এমপি বেন গোল্ডসবোরো বলেন, অভিবাসন নীতি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে, অথচ এর ফলে অর্থনীতি ও স্বাস্থ্যখাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। লিবারেল ডেমোক্র্যাট এমপি টিম ফ্যারন একে “নিষ্ঠুর” আখ্যা দিয়ে বলেন, “যারা ভেবেছিল স্থায়ী হওয়ার পথে আছে, তারা এখন অনিশ্চয়তায় ভুগছে।”

ওয়েলশ লেবার এমপি স্টিভ উইদারডেন সতর্ক করে বলেন, অপেক্ষার সময় দ্বিগুণ হলে খরচও দ্বিগুণ হবে, যা অনেক পরিবারকে আর্থিক সঙ্কটে ফেলবে। তবে কনজারভেটিভ এমপি কেটি ল্যাম দাবি করেন, যারা অপরাধ করেছে বা রাষ্ট্রীয় সহায়তা নিয়েছে, তাদের স্থায়ী বসবাস বাতিল করা উচিত।

হোম অফিস বলেছে, যুক্তরাজ্যে স্থায়ী বসবাস কোনো অধিকার নয়, বরং একটি বিশেষ সুযোগ। তবে অভিবাসন অধিকার সংগঠনগুলো এই বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছে। রিইউনাইট ফ্যামিলিস ইউকে, মাইগ্রান্ট ভয়েস, র‌্যামফেল ও প্র্যাক্সিসের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, “লেবার সরকারও কনজারভেটিভদের মতো একই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। কঠোরতর অভিবাসন নীতি শুধু ডানপন্থীদের রাজনৈতিক মঞ্চ তৈরি করবে।”

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্যে প্রপার্টি মার্কেটে ভারতীয়রা এগিয়ে

পার্টিগেট কেলেঙ্কারির কারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের এমপির পদত্যাগ

যুক্তরাজ্য মৎস খাতে দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট