যুক্তরাজ্যের ৬০টিরও বেশি দাতব্য প্রতিষ্ঠান ইমিগ্রেশন লিগ্যাল এইড নিয়মের পরিবর্তন করতে আওয়াজ তুলেছে। এই সকল দাতব্য প্রতিষ্ঠান ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত আইনী সহায়তায় প্রদান করে থাকে। দাতব্য প্রতিষ্ঠান সমূহ জরুরিভিত্তিতে আইন পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছে বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়।
অভিবাসীদের সংগঠন অভিবাসী কল্যাণ কাউন্সিল (জেসিডাব্লুআই) এবং অন্যান্য ৬০টিরও বেশি সংস্থা গত সপ্তাহে নাগরিকদের আইনী সহায়তা ব্যবস্থার বর্তমান সংকটকে তুলে ধরে। তাছাড়া এই সকল প্রতিষ্ঠান ইমিগ্রেশন আইনী সহায়তা ব্যবস্থার জরুরি সংস্কারের আহ্বান জানায়। এরজন্য একটি যৌথ ব্রিফিংও প্রদান করে তারা।
উক্ত ব্রিফিংয়ে ব্যাখ্যা করা হয়েছে কীভাবে আইনী সহায়তা কঠিন হয়ে পড়েছে,কেনইবা এর পরিবর্তন প্রয়োজন। সাজা এবং অপরাধ আইন ২০১২ (এলএএসপিও) শাস্তি আইনী সহায়তার জন্য মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। যার কারণে যুক্তরাজ্যের প্রচুর পরিমাণ লোক আইনী সহায়তা ফান্ড হতে বঞ্চিত হচ্ছে বলে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।
জেসিডাব্লুআই এবং অন্যান্য সংস্থাগুলি জানায়, তাদের তথ্য অনুযায়ী বর্তমান সময়ে ৫০% এরও অধিক লোক আইনী সহায়তা পেতে ব্যর্থ হন, যারা আশ্রয় আবেদন বা এসাইলামের জন্য আবেদন করে থাকেন। তাছাড়া এসাইলাম আবেদনের সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। আগের সরকারের সময়ে নেয়া ভুলভাল সিদ্ধান্তে সৃষ্টি হয়েছে মামলার জট। এই জট হতে মুক্তি পেতে গিয়েও আইনী সহায়তা বা লিগ্যাল এইড পাচ্ছে না শরনার্থী বা আশ্রয়প্রার্থীরা। সিদ্ধান্ত নেয়ার দীর্ঘসূত্রতা অন্যদিকে সরকারের খরচ ঠিকই বৃদ্ধি করে যাচ্ছে। কারণ যতক্ষণ একটি কেইস শেষ হচ্ছে না ততক্ষণ সরকার শরনার্থীদের খরচ চালিয়ে যেতে বাধ্য থাকে।
এই সকল কারণে আইনী সহায়তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সমূহের কাজ ক্রমবর্ধমানভাবে কঠিন হয়ে পড়ছে। প্রতিষ্ঠান সমূহের স্থবিরতা শরনার্থীদের জীবনেও প্রভাব ফেলছে এবং মামলার জট খুলতেও বাধার সৃষ্টি করে যাচ্ছে।
তাছাড়া আইনী ব্রিফিংয়ে আইনী সহায়তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিদের ন্যায্য বেতনের উপরও জোর দেওয়া হয়। বেতন বৃদ্ধির জন্য তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তের প্রতি নজর দিতে অনুরোধ জানানো হয়। তাছাড়া প্রতি ঘন্টা হারে ফি বিলুপ্তির পক্ষেও মতামত জানানো হয় ব্রিফিংয়ে।
উল্লেখ্য যে, দাতব্য সংস্থাগুলি যুক্তরাজ্যে ইমিগ্রেশন ব্যবস্থার নানামুখী সমস্যা সমাধানে সরকারকে দ্রুত কাজ করার আহ্বান জানায়। তাদের দাবি লিগ্যাল এইড সহায়তা পেতে কঠিন নিয়ম করে বরং সরকার ভিন্নদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অভিবাসীদের প্রতি ‘প্রতিকূল পরিবেশ’ নীতির পরিসমাপ্তি করা প্রয়োজন। অভিবাসীদের নিয়ে বৈরী বক্তৃতা দ্রুত সময়ে বন্ধ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে লেবার সরকারকে। তাছাড়া আইনী প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনা করে অভিবাসন সহায়তা ফান্ড নীতি বা নিয়ম করার পরামর্শ ব্রিফিংয়ে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে জানা যায়।
সূত্রঃ ইআইএন
এম.কে
০৩ অক্টোবর ২০২৪