10.6 C
London
February 22, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

অ্যাপল যুক্তরাজ্য সরকারের অনুরোধে ডেটা সুরক্ষা টুল সরিয়ে নিল

যুক্তরাজ্য সরকারের অনুরোধে অ্যাপল এক নজিরবিহীন পদক্ষেপ নিয়েছে। অ্যাপল ব্যবহারকারীদের জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী ডেটা সুরক্ষা টুলটি সরিয়ে নিয়েছে তারা। যুক্তরাজ্য সরকার অ্যাপল ব্যবহারকারীদের ডেটার “ব্যাকডোর” অ্যাক্সেস দাবি করে আসছিল।

এখন থেকে যুক্তরাজ্যের অ্যাপল ব্যবহারকারীরা অ্যাডভান্সড ডাটা প্রোটেকশন (ADP) টুল ব্যবহার করতে পারবে না। এই টুলটি এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন ব্যবহার করে, যা শুধুমাত্র অ্যাকাউন্টধারীদের তাদের iCloud-এ সংরক্ষিত ফটো, ডকুমেন্টসহ অন্যান্য ডেটা দেখতে দেয়।

অ্যাপল জানিয়েছে, ব্রিটিশ ব্যবহারকারীদের জন্য এই নিরাপত্তা ফিচার সরিয়ে নিতে বাধ্য হওয়ায় তারা “গভীরভাবে হতাশ”।

সংস্থাটি আরও বলেছে, এই টুল অপসারণের ফলে ব্যবহারকারীরা ডেটা চুরি ও অন্যান্য সাইবার হুমকির আরও বেশি ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। একইসঙ্গে, এটি অ্যাপলকে ব্যবহারকারীদের সমস্ত ডেটার অ্যাক্সেস উন্মুক্ত করতে বাধ্য করা হল। যা পূর্বে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর জন্য আদালতের পরোয়ানার মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব হতো।

এই মাসের শুরুতে, হোম অফিস অ্যাপলকে ইনভেস্টিগেটরি পাওয়ারস অ্যাক্ট এর আওতায় একটি অনুরোধ পাঠায়, যেখানে ব্যবহারকারীদের এনক্রিপ্টেড ডেটায় অ্যাক্সেস চাওয়া হয়—যা এমনকি অ্যাপল নিজেও দেখতে পারে না।

২১ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টার পর পরিবর্তন কার্যকর হওয়ার পর, নতুন ব্যবহারকারীরা আর ADP টুল ব্যবহার করতে পারবে না এবং বর্তমান ব্যবহারকারীদেরও নির্দিষ্ট সময়ের পর এটি বন্ধ করতে হবে। তবে, iMessage ও FaceTime আগের মতোই এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপটেড থাকবে।

অ্যাপল বলেছে, “আমরা গভীরভাবে হতাশ যে ক্রমবর্ধমান ডেটা লঙ্ঘন এবং গ্রাহকদের গোপনীয়তার হুমকির মধ্যে ADP-র সুরক্ষা যুক্তরাজ্যের গ্রাহকদের জন্য থাকবে না। ক্লাউড স্টোরেজের নিরাপত্তা উন্নত করা এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি জরুরি।”

অ্যাপল আরও জানিয়েছে, “আমরা আমাদের ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত ডেটার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ভবিষ্যতে যুক্তরাজ্যে এটি পুনরায় চালুর আশা রাখছি। আমরা আগেও বলেছি, এবং আবার বলছি—আমরা কখনোই কোনো ব্যাকডোর তৈরি করিনি এবং করব না।”

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ অ্যালান উডওয়ার্ড, ইউনিভার্সিটি অফ সাসেক্সের অধ্যাপক, অ্যাপলের এই পদক্ষেপকে “অসাধারণ একটি ঘটনা” বলে অভিহিত করেছেন।

তিনি বলেন, “ব্রিটিশ সরকার যদি ভাবে তারা অ্যাপলকে যা খুশি তাই করতে বাধ্য করতে পারবে, তাহলে তা একেবারেই অবাস্তব চিন্তা। বড় মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর উপর সরাসরি চাপ প্রয়োগ করে কোনো সিদ্ধান্ত কার্যকর করা সম্ভব নয়। বরং তাদের সাথে কূটনৈতিক উপায়ে সমাধানে পৌঁছানো উচিত ছিল।”

তিনি আরও বলেন, ” যুক্তরাজ্যের ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা হ্রাস করায় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কোনো কার্যকর সুবিধা পাবে না।”

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ পিটার সোমার বলেন, গত ৩০ বছর ধরে প্রযুক্তিবিদরা একটি “ফুলপ্রুফ ব্যাকডোর” তৈরি করার চেষ্টা করলেও সফল হতে পারেননি।

তিনি বলেন, “একটি সার্বজনীন সমাধানের পরিবর্তে, হোম অফিসের উচিত লক্ষ্যভিত্তিক এনক্রিপশন ভাঙার কৌশল খুঁজে বের করা, যাতে শুধুমাত্র উপযুক্ত পরোয়ানার মাধ্যমে নির্দিষ্ট তদন্ত পরিচালনা করা যায় এবং নিরপরাধ ব্যক্তিদের গোপনীয়তা অক্ষুণ্ণ থাকে।”

হোম অফিসের এক মুখপাত্র বলেছেন, “আমরা চলমান কার্যকরী বিষয়ে কোনো মন্তব্য করি না, যার কারণে এই বিষয়ে মন্তব্য করতে অপারগ।”

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আরো পড়ুন

লন্ডন শহরে পরিদর্শকদের জন্য চমৎকার জায়গা ছোট্ট শহর আমারশাম

যুক্তরাজ্য ভ্রমণের আগে করোনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক

ব্যক্তিগত ইনফ্লেশন ক্যালকুলেটর: জেনে নিন মূল্যবৃদ্ধি আপনাকে কীভাবে প্রভাবিত করবে

অনলাইন ডেস্ক