টিভিথ্রি ডেস্ক: ছোট নৌকায় করে ২০ জনের যে দলটি ইউরোপের মূল ভূখণ্ড থেকে ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে যুক্তরাজ্যে এসেছিল তাদেরকে আবার ফেরত পাঠানো হবে এমন কথা জানায় সেদেশের স্বরাষ্ট্র দফতর। এ ঘোষণার পর নিজেদের অপসারণ ঠেকাতে আইনী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন কয়েকজন আশ্রয় প্রার্থী।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যায়, ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা আফগানিস্তান, ইরান, কুয়েত এবং ইয়েমেন থেকে এসেছেন। একদিকে নিজ দেশে অত্যাচার অন্যদিকে বিপজ্জনক ভ্রমণের ফলে অনেকের গুরুতর মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন তারা।
দ্য গার্ডিয়ান সূত্রে জানা যায়, অপসারণের আশংকায় থাকা প্রায় ১৭ জন আশ্রয়প্রার্থী সরকারের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে এরইমধ্যে স্বরাষ্ট্র অফিস কমপক্ষে পাঁচজনের অপসারণের নির্দেশনা পিছিয়ে দিয়েছে।
২৪ বছর বয়সী এক আশ্রয়প্রার্থী গণমাধ্যমকে জানান, ইয়েমেনের সংঘাতের সময় তিনি আহত হওয়ার পর সেখান থেকে অনেক কঠিন পথ অতিক্রম করে যুক্তরাজ্যে পৌঁছান এবং গত ৩০ জুলাই গ্রেপ্তার হন। ডিঙ্গি নৌকায় করে ইংলিশ চ্যানেল পার হওয়ার আগে পাচারকারীদের ৭০০ পাউন্ড দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, চোরাচালানকারীদের ব্যবহার খুব খারাপ ছিল। তারা বিভিন্নভাবে আমাদের উপর অত্যাচার চালায়। নৌকায় উঠার আগে আমাদের জিনিসপত্র নিয়ে নেয় তারা। যুক্তরাজ্যে পৌঁছে আমি খুব স্বস্তি পেয়েছিলাম এই ভেবে যে, আমি শেষ পর্যন্ত নিরাপদ। কিন্তু এখনতো আমি গ্রেপ্তার হয়ে আছি।
তিনি জানান, গ্রেপ্তারের পর থেকে তিনি ট্রমায় ভুগছেন এবং কয়েক দিন ধরে খাওয়াদাওয়া করতে পারেননি। তাই তাকে ডিটেনশন সেন্টারের কর্মীরা চব্বিশ ঘণ্টা নজরদারি করছেন।
সম্ভাব্য বাধ্যতামূলক অপসারণকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডানকান লুইস সলিসিটারের তৌফিক হোসেন বলেন, আমরা যেসব ক্লায়েন্টকে প্রতিনিধিত্ব করি তাদের আন্তর্জাতিক সুরক্ষা পাবার অধিকার আছে। কারণ তারা সত্যিকার অর্থেই শরণার্থী। তাদের দাবিগুলো যৌক্তিক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী প্রীতি প্যাটেলের উচিত, যুক্তরাজ্যে প্রবেশকারী শরণার্থীদের অবজ্ঞা করা এবং তাদেরকে ফেরত পাঠানোর উদ্দেশ্যে সম্ভাব্য বেআইনী উপায়ে ষড়যন্ত্রের পরিবর্তে তাদের জন্য নিরাপদ ও যথাযথ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা।
হোম অফিসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, আমরা দেখতে চাই অবৈধ ও বিপজ্জনকভাবে ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে আসা অভিবাসীরা ইউরোপের মূল ভূখণ্ডে ফিরে গিয়েছে। তবে আমরা চলমান আইনী প্রক্রিয়া সম্পর্কে মন্তব্য করতে অক্ষম। সরকারের আইনী প্রচেষ্টা ব্যর্থ করার উদ্দেশ্যে আইনজীবিরা প্রায়ই বর্তমান আইনী কাঠামোটির অপব্যবহার করেন।
রূপান্তর: শামীমা আলম (লন্ডন)
১৯ আগস্ট ২০২০
এনএইচটি