10.1 C
London
April 19, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)শীর্ষ খবর

আদাল‌তে কাঁদলেন এম‌পি আপসানা

নি‌জের পা‌রিবা‌রিক ও ব্যক্তিগত জীব‌নের নানা অপ্রকাশ‌্য বিষয় নি‌য়ে এবার আদাল‌তে  কান্নায় ভে‌ঙ্গে পড়ে‌ছেন ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বাংলা‌দেশি বংশোদ্ভূত এম‌পি আপসানা বেগম। সরকারি আবাসন নি‌য়ে প্রতারণার মামলায় আদাল‌তে বিচা‌রের মু‌খো‌মুখি হ‌য়েছেন লন্ড‌নের পপলার ও লাইমহাউস আসনের এম‌পি আপসানা। সোমবার (২৬ জুলাই) আদাল‌তে আপসানা দেওয়া বক্তব‌্য নি‌য়ে প্রতি‌বেদন প্রকাশ করে‌ছে কয়েকটি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম।

 

ই‌ভিনিং স্ট্যান্ডার্ডের প্রতিবেদ‌নে বলা হয়, স্নেয়ার্সব্রুক ক্রাউন কো‌র্টের শুনানি‌তে ৩১ বছর বয়সী পার্লামেন্ট সদস্য আপসানা বেগম কান্নায় ভে‌ঙ্গে প‌ড়েন।  আদালত‌কে আপসানা ব‌লেন, তার ভাই যখন তা‌কে অনুসরন ক‌রে কা‌জের জায়গা অব‌ধি যান, সেই সময় পরিবা‌রের সন্মান রক্ষায় তি‌নি নির্যা‌তনের শিকার হতে পা‌রেন- এমন আশঙ্কায় তি‌নি ২০১৩ সা‌লের ২১ শে মে পু‌লি‌শের কা‌ছে যান।

 

আপসানা আদালতকে ব‌লেন, তি‌নি যখন ক‌মিউ‌নিটি লিডারশিপ নি‌য়ে পোস্ট গ্রাজু‌য়েট ডি‌প্লোমা করছিলেন তখন টাওয়ার হ‌্যাম‌লেটস কাউ‌ন্সিলের বর্তমান কাউন্সিলার এহ‌তেশামুল হ‌কের সা‌থে তার প‌রিচয় হয়। কিন্তু, এহ‌তেশাম তার চে‌য়ে সাত বছ‌রের বড় এবং আগে দুই বার বিবা‌হিত হওয়ায় আপসানার প‌রিবার এহ‌তেশাম‌ ও তা সম্প‌র্কের পক্ষে ছিল না।

 

আপসানা আদালত‌কে জানান, তার ভাই তা‌কে একজন ঈমা‌মের সা‌থে দেখা কর‌তে ব‌লেন- কেননা আপসানা এহ‌তেশা‌মের সা‌থে তার সম্পর্ক নিবন্ধন কর‌ছি‌লেন না। এসব নি‌য়ে বাদানুবা‌দের জের ধ‌রে আপসানার ভাই তাকে তা‌দের পুর্ব লন্ড‌নের বাড়ির লি‌ভিং রু‌মে আট‌কে রা‌খেন। আদালতে তিনি ব‌লেন, ‘আমি আমার মায়ের জন্য চিৎকার শুরু করি কিন্তু তি‌নি  সাড়া দিচ্ছি‌লেন না। আমি জানতাম না যে পরে কী ঘটবে।’ তিনি বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম আমার ভাই আমাকে মারতে পা‌রে।’

 

আপসানা আদালতকে জানান,তিনি ৯৯৯ নাম্বারে কল করতে সক্ষম হন এবং অফিসাররা এলে তিনি কেবল তার হ্যান্ডব্যাগটি নিয়ে তা‌দের পা‌রিবা‌রিক ঘর ছে‌ড়ে বে‌রি‌য়ে যান।

 

সোমবার শুনানির এক পর্যা‌য়ে আদাল‌তের একজন কর্মী আপসানা বেগ‌মকে টিস‌্যু এ‌গিয়ে দেন। সোমবার সাদা শার্ট এবং ধূসর রঙের মাথার স্কার্ফ পরে আদাল‌তে উপ‌স্থিত হন আপসানা। তিনি ব‌লেন, তার ব‌্যবহৃত জি‌নিসপত্র উডস্টক টেরেসে তার বাড়ির বাইরে তার পরিবার কালো ময়লার ব্যাগে ভ‌রে রেখেছিল। তিনি সেখান থে‌কে তার  জিনিসপত্র সংগ্রহ ক‌রেন।

 

আপসানা আদাল‌তে তার বিরু‌দ্ধে ২০১৩ সা‌লের জানুয়ারি থে‌কে ২০১৬ সা‌লের মার্চ পর্যন্ত আনীত আবাসন জালিয়াতির অ‌ভি‌যোগ অস্বীকার করেছেন। এই অভিযোগ এনেছে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল। তাদের অভিযোগ আপসানার কার‌নে কাউন্সিলের ৬৩ হাজার ৯২৮ পাউন্ড ব‌্যয় হয়ে‌ছে। আপসানার বিরুদ্ধে কাউন্সিলকে অবহিত না করার অভিযোগ উঠেছে।

 

আপসানা জা‌নি‌য়ে‌ছেন, স্যোশাল হাইজিংয়ে আবেদন করার পর তি‌নি এহ‌তেশামুল হ‌কের সা‌থে চ‌লে যান।  তার দাবি,  বেশি জনাকীর্ণ ওই  আবাসে বাস করেননি। তি‌নি কাউন্সিলকে তা জা‌নি‌য়ে‌ছেন।

 

আপসানা আদালত‌কে ব‌লেন, পরিবারের সাথে তার সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার এবং তার কয়েক মাস আগে তার বাবা‌কে হারান। আফসানা আরও দাবি করেছেন যে এহ‌তেশামুল হক তাকে নিয়ন্ত্রণ কর‌তে চাইতেন, বাধ‌্য কর‌তেন।

 

আপসানা বেগম বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে একটি নতুন জীবন শুরু করেছিলাম- এটি সহজ ছিল না তবে এটিই বেছে নিয়েছিলাম।’ তিনি বলেন, ‘আমি তখন প্রচণ্ড অশান্তির মাঝ দিয়ে যাচ্ছিলাম। এবং পরে বুঝতে পেরেছিলাম যে তিনি (মিঃ হক) খুব, খুব অভদ্র ছিলেন।’

 

আপসানা জানান,  ২০১৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে তি‌নি এহ‌তেশামুল হকের কাছ থে‌কে আলাদা হ‌য়ে যান। এহ‌তেশামের   মদ্যপানের সমস্যা সম্পর্কেও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তিনি। ২০১৬ সালের নভেম্বরে আপসানা পুলিশকে ফোন করে জানিয়েছিলেন যে এহ‌তেশামুল হক তাকে  ক্রমাগত ফোন এবং টেক্সট করেন এবং পরে তাকে অনুসরণ করেছিলেন।

 

আপসানা ব্রিটে‌নের সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচ‌নে লন্ড‌নের সব‌চে‌য়ে বে‌শি বাংলা‌দেশী বহুল এলাকা পপলার লাইমহাউস এলাকা থে‌কে লেবা‌র পা‌র্টির  ম‌নোনয়ন পে‌য়ে চম‌কের সৃ‌ষ্টি ক‌রেন। লেবার পা‌র্টির নিরাপদ এ আসন‌টি থে‌কে ম‌নোনয়ন পাওয়া মা‌নেই অনেকটা নি‌শ্চিত বিজয়। য‌দিও সে ম‌নোনয়ন যু‌দ্ধে খোদ বাঙালি‌দেরও বি‌রোধিতার মু‌খোমু‌খি হ‌তে হয় তাকে।

 

গত নির্বাচনে কনজারভেটিভ প্রার্থী শিউন ওককে প্রায় ২৯ হাজার ভোটে হারিয়ে এমপি নির্বাচিত হন লেবার পার্টির প্রার্থী আফসানা। তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা টাওয়ার হ্যামলেটসে হলেও বাংলাদেশে তার বাবার বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে। আফসানার বাবা মনির উদ্দিন টাওয়ার হ্যামলেটসের কাউন্সিলর ছিলেন।

 

২৭ জুলাই ২০২১
সূত্র: বাংলাট্রিবিউন

আরো পড়ুন

আইরিশ-স্কটিশ-ওয়েলশ ভাষায় প্রকাশ পেল বঙ্গবন্ধুর ভাষণ

অনলাইন ডেস্ক

পার্টিগেট তদন্ত নিয়ে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি মেট পুলিশ

ব্রিটিশ আটককেন্দ্রে নির্যাতন ও বর্ণবাদের শিকার অভিবাসীরা