ব্রেক্সিটের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো থেকে কর্মীদের অবাধ যাতায়াত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এবং করোনাভাইরাসের পর বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধি ও সরবরাহ কমে যাওয়ায় নানামুখি চাপে পড়ে ব্রিটেনের কৃষিখাত। আর তাই ব্রিটেনের কৃষিখাতের উন্নয়নে মৌসুমভিত্তিক বিভিন্ন দেশ থেকে চলতি বছর ৪৫ হাজার কর্মী নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
তবে এই ভিসায় বাংলাদেশিদের ব্রিটেনে যাওয়ার সুযোগ খুবই কম হবে বলে ধারণা করছেন দেশটির আইনজীবীরা।
স্বল্প মেয়াদে কৃষি ভিসা মূলতঃ দু‘টি ভাগে দেওয়া হবে। একটি হচ্ছে ফুল, ফল ও সবজি বাগানে গাছ থেকে উত্তোলন ও বাগান রক্ষণাবেক্ষণ। এসব কাজের জন্য ভিসার মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ ৬ মাস। বছরের যে কোনো সময় এই ভিসার জন্য আবেদন করা যাবে।
অন্যটি হচ্ছে হাঁস-মুরগি ও পাখি লালন পালন এবং কসাই। এই ভিসায় বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর এই তিন মাস ব্র্রিটেনে অবস্থান করা যাবে। উভয় ভিসার জন্য আবেদন ফি ২৫৯ পাউন্ড, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩৬ হাজার টাকা। আর আবেদনকারীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১ হাজার ২৭০ পাউন্ড বা প্রায় ১ লাখ ৭৭ হাজার টাকা থাকতে হবে।
ইউরোপে কৃষি ভিসার উচ্চ চাহিদার ধারাবাহিকতায় ব্রিটেনের সাম্প্রতিক কৃষি ভিসার জন্য বাংলাদেশ থেকে অনেকেই উদগ্রীব হয়ে আছে। কারণ এই ভিসার জন্য ভালো ইংরেজি জানা বাধ্যবাধকতা নেই। এছাড়া খুব অল্প খরচে এই ভিসার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে। আর তাই বাংলাদেশ থেকে এক শ্রেণির এজেন্ট বা দালাল চক্র এই ভিসায় ব্রিটেনে আনার সহায়তা করতে বড় অংকের টাকা লেনদেন করছে।
তবে এই ভিসায় ব্রিটেনে যাওয়ার প্রক্রিয়া কী আর ব্রিটিশ সরকার কোন কোন প্রতিষ্ঠানকে এই ভিসায় কর্মী নেওয়ার লাইসেন্স দিয়েছে তা অনেকেরই জানা নেই। কৃষি ভিসা বিষয়ে বিস্তারিত জানা না থাকার কারণে এই ভিসায় ব্রিটেনে আসতে আগ্রহীরা প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক।
ব্রিটিশ সরকার বিভিন্ন দেশ থেকে কৃষি ভিসায় কর্মী আনতে মূলত ছয়টি কোম্পানিকে অনুমোদন দিয়েছে। এই ছয়টি কোম্পানি হচ্ছে- প্রো ফোর্স, হুপস লেবার সলিউশন, আরই রিক্রুটমেন্ট, ফ্রুটফুল জবস, কনকোর্ডিয়া এবং এজি রিক্রুটমেন্ট।
প্রো ফোর্স কোম্পানির ওয়েবসাইট প্রো-ফোর্স.কো.ইউকে ‘তে দেখা যায়, ব্রিটেনের সিজনাল ওয়ার্কার ভিসার জন্য নির্দিষ্ট কয়েকটি দেশের মাইগ্রেশন সার্ভিসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করেছেন তারা। দেশগুলো হচ্ছে- ইউক্রেন, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, কিরগিস্তান এবং ম্যাসিডোনিয়া।
ওয়েবসাইটে তারা এ কথাও উল্লেখ করেছে, ওই দেশগুলো ছাড়া অন্যকোনো দেশ থেকে তারা কর্মী নিয়োগ করছে না। এছাড়া তারা বলেছে ওই ভিসার জন্য প্রসেসিং ফি মাত্র ২৫৯ পাউন্ড। এই ফি ছাড়া কোনো ব্যক্তি কারো কাছে অন্যকোনো অর্থ দাবি করলে সেটা না দিতেও তারা অনুরোধ করে আদম দালাল থেকে সাবধান থাকতে বলা হয়েছে।
এম.কে
২০ জুন ২০২৩