আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা মন্তব্য করেছেন, রাজ্যটিতে বসবাসকারী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মানুষের সংখ্যা যদি আরও ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়, তবে আসাম ‘স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত’ হয়ে যাবে। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই বক্তব্য দেন, যা ঘিরে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশের একজন রাজনৈতিক নেতার আসামকে একীভূত করার বিষয়ে দেওয়া বক্তব্য সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে হিমন্ত বলেন, বর্তমানে আসামের জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। এই হার যদি আরও বাড়ে, তাহলে পরিস্থিতি ভারতের জন্য গুরুতর হয়ে উঠবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তার ভাষায়, “আর ১০ শতাংশ বাড়লেই আমরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব।”
এই মন্তব্যের পেছনের প্রেক্ষাপটে রয়েছে গত সপ্তাহে ঢাকায় অনুষ্ঠিত একটি রাজনৈতিক সমাবেশ। সেখানে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্য—যা ‘সেভেন সিস্টার্স’ নামে পরিচিত—ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করার হুমকি দেন বলে অভিযোগ ওঠে। ওই বক্তব্য ভারতীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়।
হাসনাত আব্দুল্লাহর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, গত এক বছর ধরে বারবার উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোকে বাংলাদেশের অংশ করার কথা বলা হচ্ছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “ভারত একটি বিশাল দেশ, পারমাণবিক শক্তিধর এবং বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি। তাহলে বাংলাদেশে এসব চিন্তা কীভাবে আসে?”
উল্লেখ্য, হিমন্ত বিশ্ব শর্মা দীর্ঘদিন ধরেই আসামের বাংলাভাষীদের একটি বড় অংশকে ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করে আসছেন। অতীতে তিনি আসাম বিধানসভার ১২৬ জন সদস্যের মধ্যে প্রায় ৪০ জনকে অনুপ্রবেশকারী আখ্যা দিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। মানবাধিকার সংগঠন ও বিরোধী দলগুলো তার এই বক্তব্যকে ভাষাভিত্তিক বিভাজন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যা দিয়েছে।
হিমন্তের সর্বশেষ এই মন্তব্য নতুন করে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক, উত্তর-পূর্ব ভারতের জনসংখ্যাগত বাস্তবতা এবং সংখ্যালঘু রাজনীতিকে আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে।
সূত্রঃ রাইজিং বিডি
এম.কে

