14.6 C
London
April 29, 2024
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

আশ্রয় ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে চায় ইইউ; নতুন পরিকল্পনায় বাংলাদেশীদের জন্য বিপদ

আশ্রয়প্রার্থী এবং অনিয়মিত অভিবাসীদের বিষয়ে ইইউর আইনের যুগান্তকারী সংস্কারের বিষয়ে বুধবার ভোট দিয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট।

এই আইনি সংস্কারের প্রধান পরিবর্তনগুলো গৃহীত হলে, ২০২৬ থেকে তা কার্যকর হবে।

এগুলো হলো:

১. ইইউ-এর ‘অ্যাসাইলাম অ্যান্ড মাইগ্রেশন নীতি’ অনুযায়ী অনিয়মিতভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশ করা অভিবাসীদের পরিচয় দেখা হবে৷

২. নিরাপত্তার বিষয়গুলো নিয়মিত খতিয়ে দেখা হবে৷ নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হবে৷ এ ছাড়াও অনিয়মিত পথে আসা অভিবাসীদের মুখের বায়োমেট্রিক রিডিং এবং আঙুলের ছাপ নথিভুক্ত করা হবে৷ এসবের জন্য সাত দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

৩. অনিয়মিত পথে আসা অভিবাসী শিশুরা বিশেষ যত্ন পাবে৷ সদস্য দেশগুলোকে স্বাধীন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা রাখতে হবে যাতে অনিয়মিত অভিবাসীদের প্রত্যেকের অধিকার বজায় থাকে।

এই আইনি সংস্কারের প্রধান কারণ হল কোন অভিবাসীদের ক্ষেত্রে দ্রুত বা স্বাভাবিক আশ্রয় আবেদন প্রক্রিয়া গ্রহণ করা উচিত এবং কাদের মূল দেশে বা ‘ট্রানজিট কান্ট্রি’-তে ফেরত পাঠানো উচিত, তা বাছাই করা সহজ হবে।

যে সব দেশের নাগরিকদের আশ্রয় আবেদন গড়ে অন্তত ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে প্রত্যাখ্যান করা হয়। সে দেশ থেকে আসা আশ্রয়-প্রার্থীদের সুরক্ষা মর্যাদা পাওয়ার সম্ভাবনা কম৷ এই প্রক্রিয়াও দ্রুততর করা হবে। বাংলাদেশ, টিউনিশিয়া এবং মরক্কোর মতো দেশের নাগরিকরা এই বিভাগের অন্তর্ভুক্ত। তাদের আবেদনগুলো ইইউ-এর “বহির্সীমানা” থেকে দূরে নয় এমন কেন্দ্রগুলোতে খতিয়ে দেখা হবে। অর্থাৎ বেশিরভাগ স্থল সীমান্ত এবং বিমানবন্দরগুলো এই কেন্দ্রের আওতায় থাকছে। কারো অনুরোধ ভিত্তিহীন বা অগ্রহণযোগ্য হিসাবে বিচার করা হলে যাতে তাদের দ্রুত ফেরত পাঠানো যায়, তাই এই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর জন্য আটককেন্দ্রগুলো ব্যবহার করা হবে। যদিও তাদের বিকল্প বিধিনিষেধ দেওয়া যেতে পারে, যেমন নির্দিষ্ট বাসস্থানে থাকার আদেশ দেয়া হতে পারে।

সঙ্গীহীন অপ্রাপ্তবয়স্কদের নিরাপত্তার ঝুঁকি থাকে। তাই নতুন ব্যবস্থার ফলে শিশুদের সঙ্গে তাদের পরিবারকেও রাখা হবে।

এই রেগুলেশন অনুযায়ী, একজন আশ্রয়প্রার্থী ডাবলিনভুক্ত প্রথম যে দেশে আসেন, সেখানেই তাকে আশ্রয় আবেদন করতে হয়। তা না করে যদি তিনি অন্য কোনো দেশে আশ্রয়ের আবেদন করেন, তাহলে তাকে প্রথম দেশটিতে ফেরত পাঠানো হয়।

বর্তমানে ইটালি, গ্রিস এবং মাল্টার উপর এর ফলে চাপ তৈরি হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্থলপথে এবং সমুদ্রপথে একাধিক অনিয়মিত অভিবাসী এই দেশগুলোয় এসেছেন।

নতুন নিয়মের অধীনে, প্রথম-দেশের দায়িত্বের ডাবলিন (থ্রি) নীতি বজায় রাখা হবে, তবে শর্তবিশেষে আশ্রয়প্রার্থীর নথি অন্য ইইউ দেশে স্থানান্তর করা যাবে।

বাধ্যতামূলক সংহতি প্রক্রিয়ার ফলে নির্দিষ্ট সংখ্যক আশ্রয়প্রার্থী গ্রহণে বাধ্য হবে সদস্য রাষ্ট্রগুলো। যদি তারা আশ্রয় দিতে না চায়, তবে আর্থিক জরিমানা দিতে হবে। এছাড়াও অন্যান্য কোনোভাবে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বা কর্মী সরবরাহের মাধ্যমে অবদান রাখতে হবে।

বছরে অন্তত ৩০ হাজার আশ্রয়প্রার্থী এই স্থানান্তর ব্যবস্থার আওতায় আসবেন। যে দেশ আশ্রয় না দেয়ার পরিবর্তে অর্থ দিতে চাইবে, তাদের বার্ষিক ৬০ কোটি ইউরো আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

অপ্রত্যাশিত অভিবাসন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এই সংস্কার অত্যন্ত জরুরি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০১৫-২০১৬ সালে এ জাতীয় সংকটের মুখোমুখি হয়েছিল। কুড়ি লাখের বেশি আশ্রয়-প্রার্থী সেই সময় ব্লকে প্রবেশ করেন। তাদের বেশিরভাগই যুদ্ধ-বিধ্বস্ত সিরিয়া এবং আফগানিস্তান থেকে এসেছিলেন। ২০২৩ সালে আশ্রয়ের অনুরোধ ১১ লাখ ৪০ হাজারে দাঁড়িয়েছে, যা ২০১৬ সালের পর সর্বোচ্চ।

নতুন নিয়মের ফলে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে আশ্রয়প্রার্থীদের সুরক্ষা কমাতে অনুমতি দেয়া হবে, ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের সীমানায় আটক কেন্দ্রগুলোতে তাদের আগের তুলনায় বেশি সময় ধরে রেখে দেয়া সম্ভব হবে।

এছাড়াও বাইরের দেশ থেকে আসা অভিবাসী প্রবাহের “ইনস্ট্রুমেন্টালাইজেশন” মোকাবেলায় নিয়মগুলো কার্যকর করতে চায় ইইউ কাউন্সিল। তাদের অভিযোগ, বেলারুশ এবং রাশিয়া ইইউকে অস্থিতিশীল করতে চায়। তাই ইইউতে প্রবেশের চেষ্টা করতে অনিয়মিত অভিবাসীদের উৎসাহ দেয়া হচ্ছে।

আশ্রয়প্রার্থীদের যাচাই করার সময় “নিরাপদ তৃতীয় দেশ” ধারণাটির অনুমোদন দেয়া হবে। এর অর্থ হলো, কোনো অনিয়মিত অভিবাসী একটি দেশ পেরিয়ে ইইউতে এসেছেন, যে দেশকে ইইউ “নিরাপদ” বলে মনে করে। সেই দেশে আবেদন না করে আশ্রয়প্রার্থীরা ইইউতে আবেদন করলে তা বাতিল করা যেতে পারে। তবে তার জন্য, আশ্রয়প্রার্থী এবং ট্রানজিট দেশের মধ্যে পর্যাপ্ত “সংযোগ” স্থাপন করতে হবে।

সূত্রঃএপি, রয়টার্স

এম.কে
১১ এপ্রিল ২০২৪

আরো পড়ুন

সিলেটের নিচে গুপ্তধনের ভান্ডার

নিউজ ডেস্ক

মধ্যপ্রাচ্যের চেয়ে বাংলাদেশের তাপমাত্রা বেশি, স্মরণকালের ভয়াবহ তাপপ্রবাহ

বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না সিলেটের মুরারিচাঁদ কলেজের

অনলাইন ডেস্ক