22.7 C
London
July 25, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

ইংলিশ চ্যানেল পাড়ির ভয়ঙ্কর নেপথ্য কারিগরদের মুখোশ উন্মোচন করল যুক্তরাজ্য

যুক্তরাজ্য সরকার ঐতিহাসিক এক পদক্ষেপে বিশ্বের ভয়ঙ্কর মানুষ পাচারকারী চক্রগুলোর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে নাম ও ছবি প্রকাশ করেছে এবং নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ৩৫ অপরাধীর বিরুদ্ধে। তাদের মধ্যে রয়েছে ইরাক, উত্তর আফ্রিকা, বালকান অঞ্চল ও চীনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধী গোষ্ঠী, যারা চ্যানেল পাড়ি দিতে রাবারের নৌকা, ভুয়া পাসপোর্ট, সহিংসতা মাধ্যমে বহু অভিবাসীকে যুক্তরাজ্যে পাচার করেছে।

 

পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডেভিড ল্যামি দ্য মিরর-এ লেখেন, “এই প্রথমবার পাচারকারীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ব্যবহৃত হলো। আজকের দিন থেকেই এই বর্বর চক্রগুলোর বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্য অবস্থান নিচ্ছে।” এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা অপরাধীরা যুক্তরাজ্যে সম্পদ হস্তান্তর করতে পারবে না, ব্যবসা পরিচালনায় অংশ নিতে পারবে না, এবং যারা এদের সঙ্গে লেনদেন করবে, তাদেরও আইনি জরিমানার মুখে পড়তে হবে।

এই তালিকায় রয়েছে চ্যানেল পাড়ি দিতে নৌকা সরবরাহকারী ইরাকি চক্র। গোরান আসাদ জালাল, হেমিন আলি সালিহ, আজাদ ও নুজাদ খোশনাও, এবং নিহাদ মোহসিন খোশনাও একযোগে নৌকা, ইঞ্জিন, এবং ফ্রিজযুক্ত ট্রাকে করে মানুষ পাচারে জড়িত ছিলেন।

অর্থ লেনদেনের জন্য ব্যবহৃত হাওয়ালা নেটওয়ার্ক চালিয়েছেন মুহাম্মদ খাদির পিরত, মারিওয়ান জামাল ও রফিক শাকলাওয়ে। তারা ইরাক, কুর্দিস্তান ও তুরস্ক থেকে পাচারকারীদের অর্থপ্রদানে সহায়তা করতেন।

উত্তর আফ্রিকার কাজাউই ও তেতওয়ানি গ্যাং ছিল অভিবাসী নারীদের ওপর যৌন নির্যাতন, মুক্তিপণ আদায় এবং সহিংস শাস্তির জন্য কুখ্যাত। মোহাম্মদ তেতওয়ানি নিজেকে “হোরগোসের রাজা” দাবি করে পুরো একটি মানব পাচার নেটওয়ার্ক পরিচালনা করতেন।

বেলজিয়ামে বসে পুরো ইউরোপজুড়ে চক্র চালাতেন আলবেনীয় নাগরিক ব্লেদার লালা। আর সার্বিয়ার সাবেক পুলিশ অনুবাদক আলেন বাসিল দুর্নীতির মাধ্যমে ভয়ংকর নেটওয়ার্ক পরিচালনা করতেন।

বালকান অঞ্চলের কাভাচ ও স্কালজারি গ্যাং দীর্ঘদিন ধরে ভুয়া পাসপোর্ট সরবরাহ করে আসছিল পাচারকারীদের। দালিবর চুরলিক, আলমির জাহোভিচ, মার্কো পেট্রোভিচ, নিকোলা ভেইনসহ একাধিক ব্যক্তি এই চক্রে যুক্ত ছিল, যারা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে লোক পাচারে সহায়তা করত ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে।

এমনকি চীনের প্রতিষ্ঠান Weihai Yamar Outdoors Product Co-ও যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে। এই কোম্পানিটি অনলাইনে এমন রাবারের নৌকা বিক্রি করত যা চ্যানেল পার হতে ব্যবহৃত হতো।

হোম সেক্রেটারি ইয়ভেট কুপার বলেছেন, “এই পদক্ষেপ পাচারকারীদের অর্থনৈতিক ভিত্তি ভেঙে দিতে সহায়ক হবে।” এদিকে, যুক্তরাজ্য ইতিমধ্যে জার্মানির সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে যাতে পাচারের উৎসেই এই চক্রগুলোকে দমন করা যায়।

এই পদক্ষেপ শুধু অপরাধ দমনের জন্যই নয়, বরং ইউরোপে অভিবাসন ব্যবস্থাকে সুরক্ষিত ও মানবিকভাবে পরিচালনার একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। অন্যান্য দেশও এই উদ্যোগে আগ্রহ প্রকাশ করছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ ফরেন অফিস।

সূত্রঃ দ্য এক্সপ্রেস

এম.কে
২৪ জুলাই ২০২৫

আরো পড়ুন

২ বছরের মধ্যে যুক্তরাজ্যের আকাশে ফ্লাইং ট্যাক্সি উড়তে দেখা যাবে!

ব্রিটিশ মিউজিয়ামের কাছে পুরাকীর্তি ফেরত চাইছেন চীনারা

যুক্তরাজ্যে ব্যাংক জালিয়াতির ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে