প্রধানমন্ত্রী স্যার কেয়ার স্টারমার এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর মধ্যে নতুন ‘ওয়ান ইন, ওয়ান আউট’ অভিবাসন চুক্তির ঘোষণা দেওয়ার ২৪ ঘণ্টাও পার হয়নি, তার মধ্যেই ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে বহু ছোট নৌকা যুক্তরাজ্যে প্রবেশের চেষ্টা চালিয়েছে। ব্রিটেনের কোস্টগার্ড জানিয়েছে, ১০ ও ১১ জুলাই তারা একাধিক ছোট নৌকার বিষয়ে সাড়া দিয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি সপ্তাহে সর্বোচ্চ ৫০ জন অভিবাসীকে ফ্রান্সে ফেরত পাঠানো হবে। এর বিনিময়ে ক্যালেই এলাকা থেকে ‘বৈধ দাবি’ রয়েছে এমন একজন করে শরণার্থীকে ব্রিটেনে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে নিরাপদ, আইনি ও নিরাপত্তা যাচাইয়ের ভিত্তিতে। তবে যারা ইতিপূর্বে অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টা করেছে, তারা এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হবে না।
সরকারের দাবি, এই চুক্তি মানবপাচারকারী চক্রের ব্যবসার মডেল ভাঙার এক ‘আক্রমণাত্মক ও বাস্তববাদী’ পদক্ষেপ। তবে চুক্তির আওতায় বছরে ২,৬০০ জন ফেরতের ব্যবস্থাও দেশের অভিবাসন সংকটের তুলনায় খুবই নগণ্য—২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত চ্যানেল পাড়ি দিয়ে এসেছে ২১,১১৭ জন, যা গত বছরের তুলনায় ৫৬ শতাংশ বেশি।
চুক্তির বাস্তবতা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছে বিরোধীদল কনজারভেটিভ পার্টি। শ্যাডো হোম সেক্রেটারি ক্রিস ফিলিপ একে ‘লোকদেখানো নাটকীয় ঘোষণা’ আখ্যা দিয়ে বলেন, “স্টারমার ও কুপারের অধীনে অবৈধ আগমনের রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। তারা ব্যর্থ হয়েছেন, ভবিষ্যতেও হবেন।”
ইমিগ্রেশন সার্ভিস ইউনিয়নের প্রধান লুসি মর্টন বলেন, চুক্তিতে এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই যে ফেরত পাঠানো অভিবাসীরা পুনরায় প্রবেশের চেষ্টা করবে না। তিনি এটিকে সংকট সমাধানের স্থায়ী সমাধান বলে মনে করেন না।
হোম সেক্রেটারি ইভেট কুপার জানিয়েছেন, এই পাইলট প্রকল্প ধাপে ধাপে চালু হবে এবং নির্দিষ্ট সংখ্যার কোনো নিশ্চয়তা এখনো নেই। তিনি বলেন, “এটি একটি স্থির প্রক্রিয়া হবে। সময়মতো তথ্য দেওয়া হবে।”
চুক্তি কার্যকর হলে প্রথমবারের মতো চ্যানেল পাড়ি দেওয়া প্রাপ্তবয়স্ক অভিবাসীদের দ্রুত ফেরত পাঠানোর জন্য ‘ডিটেনশন নোটিশ’ ইস্যু করা হবে এবং খরচ বহন করা হবে হোম অফিসের বর্তমান বাজেট থেকেই।
তবে এই ঘোষণার মধ্যেই যেভাবে নতুন অভিবাসীরা সমুদ্রপথে যুক্তরাজ্যে আসতে শুরু করেছে, তা সরকারের এই উদ্যোগের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। বাস্তবতা হচ্ছে—‘একজন ফেরত, একজন প্রবেশ’ নীতির মাঝে চ্যানেল পারের বাস্তবতা থেমে নেই।
সূত্রঃ দ্য সান
এম.কে
১১ জুলাই ২০২৫