প্রিন্স হ্যারি লেখা স্মৃতিকথা ‘স্পেয়ার’ প্রকাশ পেয়েছিল। যেখানে হ্যারি তার বড় ভাই ব্রিটিশ সিংহাসনের পরবর্তী উত্তরাধিকারী প্রিন্স উইলিয়াম, বাবা কিং চার্লস এবং রাজপরিবারের অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে তার ও তার স্ত্রীর নানা দ্বন্দ্ব নিয়ে বেশ খোলামেলা কথা বলেছেন।
নেটফ্লিক্সে তাদের নিয়ে তথ্যচিত্র এবং টেলিভিশনে দেওয়া এ দম্পতির বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকার নিয়েও বিশ্বজুড়ে হইচই পড়ে গিয়েছিল।
জানুয়ারিতে ‘স্পেয়ার’ প্রকাশের কয়েকদিন পরই ফ্রগমোর কটেজ খালি করতে বলা হয়। রাজকীয় বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে ফ্রগমোর কটেজ থেকে হ্যারি এবং মেঘানকে উচ্ছেদ করার রাজার সিদ্ধান্ত রাজকুমারের স্মৃতিকথা প্রকাশের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে।
রাজা চার্লসের ছোট ভাই প্রিন্স অ্যান্ড্রুও অবশ্য কম বিতর্কিত নন। যৌন নিপীড়নের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাজা পাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের জেফরি এপস্টাইনের সঙ্গে বন্ধুত্ব থাকার কারণে প্রিন্স অ্যান্ড্রুকে তার রাজকীয় দায়িত্ব থেকে সরে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল।
বৃটিশ গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, প্রিন্স অ্যান্ড্রু ফ্রগমোর কটেজে যেতে আগ্রহী নন। তিনি বরং নিজের বর্তমান বাড়িতেই থেকে যেতে চান। এদিকে খবরে জানা যায় রাজা চার্লস প্রিন্স হ্যারিকে যুক্তরাজ্যের বাসভবন হিসাবে বাকিংহাম প্যালেসে একটি অ্যাপার্টমেন্ট দিতে আগ্রহী। কিং চার্লস হ্যারি এবং মেগান মার্কেলকে যে কক্ষগুলি দিতে আগ্রহী তা পূর্বে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর ছিল বলে জানা যায়।
রাজকীয় বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রিন্স হ্যারিকে ফ্রগমোর কটেজটি খালি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বিধায় রাজা চার্লস বাকিংহাম প্যালেসে অ্যাপার্টমেন্ট দিতে আগ্রহী।
বাকিংহাম প্যালেস থেকে কোনো মন্তব্য না এলেও বুধবার হ্যারি-মেগানের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘‘আমরা নিশ্চিত করে বলছি, ডিউক অ্যান্ড ডচেস অব সাসেক্সকে তাদের ফ্রগমোর কটেজ খালি করে দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। বাকিংহাম প্যালেসে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর যে পুরনো কক্ষ ছিল সেগুলো বর্তমানে খালি করা হচ্ছে।”
২০১৮ সালে বিয়ের পর হ্যারি ও মেগান ফ্রগমোর কটেজে বসবাস শুরু করেন। গ্রেড-২ তালিকার ১০ বেডরুমের এই বাড়িটি প্রয়াত রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ তাদের উপহার দিয়েছিলেন।
২০২০ সালে রাজকীয় দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর পর বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় দুই সন্তান আর্চি ও লিলিবেটকে নিয়ে স্থায়ী হয়েছেন এই দম্পতি। তবে যুক্তরাজ্যে গেলে তারা ফ্রগমোর কটেজেই উঠতেন।
ফ্রগমোর কটেজে ওঠার পর সেখানে বেশ কিছু সংস্কার কাজ করেন তারা। এজন্য প্রায় ২৪ লাখ পাউন্ড ব্যয় হয় এবং পুরো ব্যয়ভার সরকার বহন করে। রাজকীয় দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর তারা ওই অর্থও ফেরত দেন বলে জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাওয়ার পর হ্যারি-মেগান যুক্তরাজ্যে খুব একটা আসতেন না। তবে রাজকীয় নানা অনুষ্ঠানে যে কয়বার তারা যুক্তরাজ্য গেছেন, তখন ফ্রগমোর কটেজেই উঠেছেন।
নিজের বই ‘স্পেয়ারে’ হ্যারি যেভাবে ব্রিটিশ রাজপরিবারের দিকে আঙুল তুলেছেন তাতে জনসম্মুখে কিছু প্রকাশ না পেলেও তাদের সম্পর্কের যে চরম অবনতি হয়েছে তা স্পষ্ট। আগামী মে মাসে বাবা রাজা চার্লসের রাজ অভিষেক অনুষ্ঠানে হ্যারি থাকবেন কিনা তা নিয়েও বড় ধরণের সংশয় রয়েছে। তবে সূত্র জানিয়েছে যে এই দম্পতি শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মে মাসে রাজ্যাভিষেকের আমন্ত্রণ পাবেন।
এম.কে
০৬ মার্চ ২০২৩