নাগরিকত্ব আইন শিথিল ও শ্রমিক অধিকার আইন আরও শক্তিশালী করার প্রস্তাবের পক্ষে-বিপক্ষে মত দেওয়ার জন্য আজ রোববার (৮ জুন) এবং আগামীকাল সোমবার (৯ জুন) ইতালিতে গণভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
দেশের ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সরকার উভয় সংস্কার প্রস্তাবের বিরোধিতা করছে। তারা জনগণকে ‘না’ ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
বর্তমান অভিবাসন আইন অনুযায়ী, যাদের ইতালীয়দের সঙ্গে রক্ত বা বৈবাহিক সম্পর্ক নেই এবং যারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিক নন, তারা ১০ বছর বসবাসের পর নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারেন। তবে আবেদন করার পর প্রক্রিয়া শেষ হতে বছর কয়েক লাগতে পারে।
গণভোটে প্রস্তাব আনা হয়েছে এই সময়সীমা কমিয়ে ১০ থেকে ৫ বছরে নামানোর। ইতিমধ্যে জার্মানি ও ফ্রান্সে এই সময়সীমা ৫ বছর করা হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন এনজিওর নেতৃত্বে তৃণমূল পর্যায়ের প্রচারণার কারণে সরকার বাধ্য হয়ে গণভোট আয়োজন করেছে। এই সংস্কারের পক্ষের অনেকে বলছেন, এতে প্রায় ২৫ লাখ মানুষ উপকৃত হতে পারেন। মধ্যম-বামপন্থি ডেমোক্র্যাটিক পার্টি সংস্কারের সমর্থন জানিয়েছে।
জর্জিয়া মেলোনির কট্টর ডানপন্থি ব্রাদার্স অব ইতালি দল অবৈধ অভিবাসন কমানোর প্রচারণায় এই দুই আইনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। মেলোনি দাবি করেছেন, বর্তমানে নাগরিকত্ব প্রদানের প্রক্রিয়া ‘অসাধারণ’ এবং ইতালির নাগরিকত্ব দেওয়া ইউরোপের শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে।
২০২৩ সালে ২ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ জন ইতালির নাগরিকত্ব পেয়েছেন, যা ২০২০ সালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। ইউরোপীয় ইউনিয়নে নাগরিকত্ব পাওয়া মানুষের মধ্যে ২০ শতাংশই ইতালির।
নাগরিকত্বপ্রাপ্তদের মধ্যে ৯০ শতাংশই ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে থেকে আসা। অধিকাংশ এসেছে আলবেনিয়া ও মরক্কো থেকে। এরপর আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের নাগরিকরা অবস্থান করছে।
মেলোনি ও জোটের নেতারা ভোটারদের গণভোট বর্জনের আহ্বান জানাচ্ছেন।
ইতালির নিয়ম অনুযায়ী, গণভোট পাসের জন্য প্রয়োজন ৫০ শতাংশ ‘হ্যাঁ’ ভোট ও এক ভোট বেশি (ফিফটি পারসেন্ট প্লাস ওয়ান)। তবে পাস হলে ও অভিবাসন আইনের সবচেয়ে কঠোর বিধান যেমন, বিদেশি শিশুরা ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত নাগরিকত্বের আবেদন করতে না পারা, তা পরিবর্তন হবে না।
ইতালির সংবিধান অনুযায়ী, পাঁচ লাখ ভোটারের সমর্থন পেলে কোনো প্রস্তাব নিয়ে গণভোট বাধ্যতামূলক হয়।
এই সপ্তাহের ব্যালটে নাগরিকত্ব আইনের পাশাপাশি শ্রমিকদের সুরক্ষা বাড়াতে চারটি সংস্কারের প্রস্তাবও আনা হয়েছে। এতে কর্মক্ষেত্রে বিপদ, দুর্ঘটনা বা বরখাস্তকৃত শ্রমিকদের সুরক্ষা আরও বাড়ানো হবে।
বামপন্থি ট্রেড ইউনিয়ন সিজিআইএল এই প্রস্তাবগুলো নিয়ে কাজ করছে। সিজিআইএলের মহাসচিব মরিজিও ল্যানদিনি বলেন, ‘আমরা ব্যবসার স্বার্থের থেকে কর্মীদের স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দিতে চাই।’
ডেমোক্র্যাটিক পার্টি সিজিআইএলের এই প্রস্তাবগুলোকে সমর্থন জানাচ্ছে, যদিও অতীতে এই দল ক্ষমতায় থাকাকালীন কিছু আইনের বিরুদ্ধে তারা ছিল।
সূত্রঃ এএফপি
এম.কে
০৮ জুন ২০২৫