TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

“ইতিহাস গড়া কূটনীতিকঃ শরণার্থী থেকে ব্রিটেনের হাইকমিশনার কানবার হোসেইন-বোর”

একজন শরণার্থী হিসেবে যুক্তরাজ্যে পা রাখা এক শিশুর গল্প এখন এক অনন্য অর্জনের নাম। ইরান থেকে পালিয়ে আসা কানবার হোসেইন-বোর যুক্তরাজ্যের প্রথম শরণার্থী হিসেবে হাইকমিশনারের মর্যাদাপূর্ণ পদে নিযুক্ত হয়েছেন। সম্প্রতি তাকে ফিজিতে ব্রিটেনের নতুন হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

৪৪ বছর বয়সী হোসেইন-বোর ১৯৮৭ সালে মাত্র ছয় বছর বয়সে ইরান ছেড়ে পাকিস্তানের দুর্গম সীমান্ত পেরিয়ে যুক্তরাজ্যে আসেন। তার মা আগে থেকেই শরণার্থী হিসেবে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছিলেন। শিশুকালে ইংরেজি না জানলেও আজ তিনি বালোচি, আরবি ও ফারসি ভাষায় পারদর্শী একজন দক্ষ কূটনীতিক।

দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে তিনি আজ ব্রিটেনের ফরেন অফিসের একজন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি। ওয়ারউইক ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন পড়াশোনা শেষে ব্যারিস্টার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন। এরপর ফরেন অফিসে আইন উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দিয়ে কূটনৈতিক জগতে প্রবেশ করেন। ২০০৭ সালে ইরাকে মার্কিন ‘সার্জ’ অভিযানের সময় ব্রিটিশ কূটনীতিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “অনেকেই মনে করে শরণার্থীরা কেবল নেয়, কিছুই দেয় না। কিন্তু আমি আমার ক্যারিয়ারের মাধ্যমে দেখাতে চেয়েছি, আমি কীভাবে এই দেশকে ফিরিয়ে দিতে পেরেছি।”

হোসেইন-বোর বিশ্বাস করেন, যুক্তরাজ্য জাতি ও অভিবাসন বিষয়ে বিশ্বের অন্যতম সফল গল্প গড়েছে। “আমি চাই, আমার মতো মানুষের গল্প শুনে নতুন প্রজন্ম অনুপ্রাণিত হোক,”—বলেছেন তিনি।

তার অতীতের সাথে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক ইতিহাসের একটি ব্যতিক্রমী মিল রয়েছে। তার পূর্বপুরুষরা ছিলেন সেসব ‘বিদ্রোহী গোত্র’-এর অংশ, যাদের দমন করতেন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক কর্মকর্তা স্যার রবার্ট স্যান্ডেম্যান। আজ সেই কর্মকর্তারই প্রশাসনিক উত্তরসূরি হিসেবে ব্রিটিশ স্বার্থ রক্ষা করছেন হোসেইন-বোর।

ফরেন অফিসের একজন মুখপাত্র জানান, “আমরা গর্বিত যে আমাদের কূটনৈতিক দপ্তর মেধাভিত্তিক এবং বৈচিত্র্যময়। কানবার হোসেইন-বোরের গল্পই তার প্রমাণ।”

এই নিযুক্তি শুধুমাত্র একটি কূটনৈতিক অর্জন নয়, বরং তা ব্রিটেনের বহুত্ববাদী ও উদার সমাজব্যবস্থার এক জীবন্ত উদাহরণ।

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
১৬ মে ২০২৫

আরো পড়ুন

টিউলিপকে লন্ডনে ১০ কোটির ফ্ল্যাট দেন আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী

যুক্তরাজ্যে সেনা ঘাঁটিতে আশ্রয়প্রার্থী স্থানান্তরঃ স্থানীয়দের নিরাপত্তা ও পরিষেবা চাপে

যুক্তরাজ্যে চোরের দাপটে বিপর্যস্ত লন্ডনঃ ওয়েস্ট এন্ডে দিনে দিনে বাড়ছে ফোন ছিনতাই