সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেট ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় দেশটির বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) দুই শীর্ষ জেনারেলসহ ১১ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তেহরান। এ অবস্থায়, ইরানি হামলার ভয়ে তেহরান যেন জিপিএস ব্যবস্থা ব্যবহার করে গুরুত্বপূর্ণ ইসরায়েলি স্থাপনায় হামলা চালাতে না পারে তা নিশ্চিত করতে এই সেবা বন্ধ করে দিয়েছে তেল আবিব।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত বুধবার এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছিল, ‘পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সব ইউনিটের ছুটি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হবে। আইডিএফ যুদ্ধে রয়েছে এবং প্রয়োজন অনুসারে সেনা মোতায়েনের বিষয়টি নিয়মিতভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে।’
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আরও বলেছে, তারা আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা জোরদার করার জন্য সংরক্ষিত সেনাদের খসড়া তৈরি করেছে। জিপিএস সংশ্লিষ্ট পরিষেবাগুলো আজ বৃহস্পতিবার ব্যাহত হওয়ার খবর জানিয়েছেন রয়টার্সের সংবাদদাতা এবং তেল আবিবের বাসিন্দারা। উল্লেখ্য, ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্যবস্তু হওয়া থেকে রক্ষা পেতে ব্যবহৃত হয় জিপিএস পরিষেবা।
গত সোমবার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি দূতাবাসের কনস্যুলার ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানের পাঁচজন সামরিক উপদেষ্টাসহ দুই জেনারেল নিহত হন। এই হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে ইরান। এই হামলার দায় ইসরায়েল নিশ্চিত বা অস্বীকার কিছুই করেনি। তবে এর পেছনে ইসরায়েলি বিমানবাহিনীই ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে মধ্যপ্রাচ্যে সহিংসতা আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকেই গাজায় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। সেই সঙ্গে লেবানন সীমান্তে ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহর সঙ্গেও হচ্ছে গুলিবিনিময়। ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করেছে ইরান-সমর্থিত গ্রুপগুলো। তবে এখন পর্যন্ত সম্মুখ সমরে অংশ নেওয়া এড়িয়ে গেছে ইরান।
সাবেক ইসরায়েলি গোয়েন্দাপ্রধান আমোস ইয়াদলিন বলেছেন, দামেস্কে আঘাতের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আগামীকাল শুক্রবারকে বেছে নিতে পারে ইরান। কারণ, এটিই রমজান মাসের শেষ শুক্রবার এবং সেদিনই ইরানি কুদস দিবস। ইরান সরাসরি বা কোনো সমর্থিত গ্রুপের মাধ্যমে এই প্রতিশোধ নিতে পারে।
ইসরায়েলের বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেনেডি স্কুলের বেলফার সেন্টারের সিনিয়র ফেলো ইয়াদলিন বলেন, ‘আগামীকাল যদি ইরান প্রতিক্রিয়া দেখায়, তবে অবাক হবেন না। আতঙ্কিত হবেন না। আশ্রয়কেন্দ্রে দৌড়াবেন না। আগামীকালের জন্য প্রস্তুত থাকুন। আক্রমণের ফলাফলের ওপর নির্ভর করবে যে সহিংসতা কতটুকু বাড়বে।’
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে
০৬ এপ্রিল ২০২৪