যুক্তরাজ্যে নতুন সরকার গঠন করেছে লেবার পার্টি। আর এই সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল তথা রাষ্ট্রের প্রধান আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন রিচার্ড হারমার। মানবাধিকার আইনজীবী হিসেবে নাম কামানো রিচার্ড হারমার ইহুদি হলেও ইসরায়েলের কড়া সমালোচক। সোচ্চার গাজার মানুষদের অধিকার নিয়ে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস অনুসারে, সরকারের আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে মানবাধিকার সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি আলোচিত মামলায় লড়েছেন রিচার্ড হারমার। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হলো—আফগানিস্তানে যুদ্ধ চলাকালে ব্রিটিশ সেনারা নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে এবং সেগুলো চেপে গেছে। এই মামলা হারমারের অবস্থানের কারণেই ব্রিটিশ সরকার সরকারি তদন্ত শুরু করে বিষয়টি নিয়ে।
ব্রিটেনে দীর্ঘ ১৪ বছর পর ক্ষমতায় এসেছে লেবার পার্টি। লেবার পার্টির সরকারে চমক হিসেবে অ্যাটর্নি জেনারেলের পদে নিয়োগ পেয়েছেন রিচার্ড হারমার। মানবাধিকার এই আইনজীবীকে সরাসরি তার আইন পেশা থেকে তুলে এনে সরকারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ব্রিটেনের ইতিহাসে এই পদে সাধারণত একজন নির্বাচিত এমপি বা কোনো একজন লর্ডকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে এই প্রবণতাকে পাশ কাটিয়ে একজন কর্মরত আইনজীবীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
গত বছর কনজারভেটিভ সরকার একটি আইন পাশ করেছিল, যার লক্ষ্য ছিল—সরকারি সংস্থাগুলোকে বিদেশি মানবাধিকার ইস্যুতে মতামত দেওয়া থেকে বিরত রাখা। সেই আইনের ওপর মতামত দেওয়ার জন্য লেবার পার্টি একটি কমিশন গঠন করে। সে সময় সেই কমিশনের সদস্য ছিলেন হারমার। ইহুদি হলেও হারমার সব সময়ই ফিলিস্তিনসহ বৈশ্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সব সময়ই সোচ্চার ছিলেন।
রিচার্ড হারমার ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের কয়েক সপ্তাহ আগে একদল আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সফরে গিয়েছিলেন। সে সময় তিনি ইসরায়েলের সামরিক আদালত, ফিলিস্তিনের মানবাধিকার পরিস্থিতি স্বচক্ষে মূল্যায়ন করেছেন। এ ছাড়া, গত অক্টোবর ফিন্যান্সিয়াল টাইমসে লেখা এক খোলা চিঠিতে যেসব ইহুদি আইনজীবী হামাসের আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছিল হারমার তাদের একজন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে, সে বিষয়ে ব্রিটেন আপত্তি জানাবে কি না—সে বিষয়েও ব্রিটিশ সরকারকে পরামর্শ দিতে পারেন রিচার্ড হারমার। লেবার পার্টির অনেক নেতাই মনে করেন, গাজা বিষয়ে লেবার পার্টি ও প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের অবস্থানকে শক্তিশালী করার জন্যই হারমারকে নিয়োগ দিয়েছেন।
সূত্রঃ ফিন্যান্সিয়াল টাইমস
এম.কে
১২ জুলাই ২০২৪