গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল হতে পারে— এমন ‘ইঙ্গিত’ দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে এখনই কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে না। গার্ডিয়ানের হাতে আসা ইইউর এক গোপন নথিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েল সম্ভবত ইইউ-ইসরায়েল অ্যাসোসিয়েশন অ্যাগ্রিমেন্টের ২ নম্বর অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করছে।
এই নথি সোমবার ইউরোপীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সামনে উপস্থাপন করবেন ইইউ পররাষ্ট্র প্রধান কায়া কাল্লাস। এতে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের মূল্যায়ন তুলে ধরা হলেও বলা হয়েছে, এটি কোনো ইউরোপীয় কর্মকর্তার নিজস্ব মত নয়।
নেদারল্যান্ডসের নেতৃত্বে ১৭টি দেশ চুক্তি পর্যালোচনার দাবি জানায়। তারা ইসরায়েলের গাজা অবরোধকে আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী হিসেবে অভিহিত করেছে। গাজায় এখন পর্যন্ত ৫৫,৬০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক।
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক ইরানে বিমান হামলার কারণে ইইউর ভেতর রাজনৈতিক হিসাব জটিল হয়ে পড়েছে। আবার কমিশন প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইনের পক্ষ থেকে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন দেওয়া হয়েছে।
ইইউ-ইসরায়েল চুক্তির আওতায় বার্ষিক €৬৮ বিলিয়ন মূল্যের বাণিজ্য হয়। ইসরায়েল হরাইজন প্রোগ্রামের আওতায় €৮৩১ মিলিয়নের বেশি গবেষণা অনুদানও পেয়েছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ ১১৩টি সংগঠন চুক্তি স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলেছে, দেরিতে হলেও ইইউর পদক্ষেপ জরুরি, না হলে ইসরায়েল আরও বর্বর হয়ে উঠবে।
বেলজিয়ামের উদ্যোগে আটটি দেশ দখলকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চল থেকে পণ্য ও সেবা আমদানি বন্ধের দাবি জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক আদালতের এক মতামতের আলোকে তারা ইইউর কাছ থেকে সময়সীমাসহ পদক্ষেপ চায়।
ইইউর অভ্যন্তরীণ বিভাজনের কারণে চুক্তি পুরোপুরি স্থগিত করা কঠিন। হাঙ্গেরি, চেক প্রজাতন্ত্র ও জার্মানির সম্ভাব্য ভেটো এটিকে জটিল করে তুলছে।
ইইউর সাবেক পররাষ্ট্রপ্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, ইউরোপ গাজার ইস্যুতে নৈতিক দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে। তার মতে, ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানতে বাধ্য করতে চুক্তিকে চাপের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা উচিত।
কায়া কাল্লাস জানান, নিষেধাজ্ঞা পাস করাতে ২৭টি দেশের সম্মতি দরকার। তাই আগে থেকেই ব্যর্থ হবে এমন প্রস্তাব দিয়ে “নীরবতা ভাঙার ভান” করে লাভ নেই।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
২২ জুন ২০২৫