ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় চার ত্রাণকর্মী নিহত হয়েছেন। শুক্রবার ১২ জুলাই তাদের লক্ষ্য করেই এ হামলা চালানো হয়।
সূত্র মতে, ওই ত্রাণকর্মীরা আল-খায়ের ফাউন্ডেশনের যা মূলত একটি ব্রিটিশ ফাউন্ডেশন। এই ফাউন্ডেশন তুরস্কের ইস্তাম্বুল থেকে মধ্যপ্রাচ্য পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছে। গাজায় তাদের প্রচুর ত্রাণকর্মী নিয়োজিত রয়েছেন। তারা যুদ্ধের প্রথম দিন থেকে জীবনবাজি রেখে গাজায় প্রবেশ করে সহায়তা কার্যক্রম শুরু করে। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও খাদ্যসামগ্রী গাজাবাসীর কাছে পৌঁছে দিয়ে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে ফাউন্ডেশনটি।
ঘটনার সময়ও ভুক্তভোগী কর্মীরা গাজার মানুষের জন্য কাজ করছিলেন। তারা খান ইউনিসে সাহায্য বিতরণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এমন সময় খাদ্য সহায়তা ভর্তি গুদামে বোমা ফেলে ইসরায়েলি বিমান। সিনহুয়ার প্রতিবেদনে অন্তত একটি মিসাইল হামলার কথা বলা হয়েছে।
আল-খাইর ফাউন্ডেশন বলেছে, গাজা উপত্যকায় মানুষকে খাদ্য সহায়তা এবং প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি আমরা। সশস্ত্র কোনো সংশ্লিষ্টতা না থাকা সত্ত্বেও আমরা বোমার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হলাম। আজ আমাদের চার সাহায্যকর্মীকে হারিয়েছি।
ত্রাণকর্মীদের উপর ইসরায়েলের হামলা এটিই প্রথম নয়। এর আগে বিভিন্ন সময়ে ইসরায়েলি বাহিনী সাহায্যকর্মীদের লক্ষ্যবস্তু করেছে। এর মধ্যে এপ্রিল মাসে ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের গাড়ি লক্ষ্য করে বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় তোলে। কিন্তু তাতে কোনো কর্ণপাতই করেনি নেতানিয়াহু সরকার। বরং দিন দিন আক্রমণ আরও জোরাল হচ্ছে। দখলদারদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না ত্রাণকর্মী, সাংবাদিক, প্যারামেডিক সিভিল ডিফেন্স দল, চিকিৎসক কেউই।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণে দেশটিতে ১ হাজার ২০০-এর বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। হামলাকারীরা আড়াইশর বেশি জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায়। সেই দিনে অপহৃত হওয়া অর্ধেকেরও বেশি মানুষ এখনও গাজায় বন্দি রয়েছেন। এ ঘটনার পর থেকে হামাস নির্মূলের নামে গাজায় নারকীয় হামলা চলছে। তাদের হামলা থেকে রেহাই পায়নি হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদসহ ধর্মীয় স্থাপনাও। এক হিসাবে গাজার ৭০ শতাংশ স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গেছে। নিহত হয়েছেন ৩৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।
সূত্রঃ আল জাজিরা
এম.কে
১৩ জুলাই ২০২৪