ইস্ট লন্ডন মসজিদ ট্রাস্ট সম্প্রতি একটি বিতর্কিত বিনিয়োগ চুক্তির কারণে এক মিলিয়ন পাউন্ড হারিয়েছে। এ ঘটনায় যুক্তরাজ্যের চ্যারিটি কমিশন ট্রাস্টটিকে একটি অফিসিয়াল সতর্কবার্তা (সরকারি সতর্ক নির্দেশনা) জারি করেছে এবং ছয় মাসের মধ্যে গঠনমূলক পরিবর্তন আনার নির্দেশ দিয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ না নিলে ট্রাস্টটিকে আরও কঠোর নিয়ন্ত্রক তদারকির আওতায় আনা হবে।
চ্যারিটি কমিশনের তদন্তে উঠে এসেছে, ট্রাস্টি বোর্ড বিনিয়োগের আগে প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই করেনি এবং আর্থিক তদারকির ক্ষেত্রে গাফিলতি করেছে। যে প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করা হয়েছিল, সেটি এনএইচএস অনুমোদিত হলেও পরে দেউলিয়া হয়ে পড়ে, ফলে পুরো এক মিলিয়ন পাউন্ড হারায় মসজিদ ট্রাস্ট। ট্রাস্টিরা ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঘটনাটি স্বেচ্ছায় চ্যারিটি কমিশনকে জানায়।
কমিশন বলেছে, এত বড় অঙ্কের তহবিল ব্যবহারে চ্যারিটির পক্ষ থেকে যে ধরনের সুরক্ষা ও যাচাই-বাছাই থাকা প্রয়োজন ছিল, তা অনুপস্থিত ছিল। বিনিয়োগ চুক্তি সংক্রান্ত মূল নথিপত্র যথাযথভাবে পর্যালোচনা না করাটাও ট্রাস্টিদের দায়িত্বহীনতার প্রমাণ। পূর্বেও ট্রাস্টটিকে আর্থিক তহবিল ব্যবস্থাপনায় আরও দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, যা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা হয়নি।
কমিশনের অফিসিয়াল সতর্কবার্তায় ট্রাস্টিকে বলা হয়েছে, তারা যেন দ্রুত শক্তিশালী আর্থিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং ভবিষ্যতে তহবিলের সুরক্ষা নিশ্চিত করে। পাশাপাশি একটি স্বাধীন গভার্নেন্স পর্যালোচনা করে কমিশনে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্রাস্টিকে হারানো অর্থ পুনরুদ্ধারে সম্ভাব্য সব প্রচেষ্টা চালানোর কথাও বলা হয়েছে।
চ্যারিটি কমিশনের কমপ্লায়েন্স প্রধান জোশুয়া ফারব্রিজ বলেন, “যখন সাধারণ মানুষ চ্যারিটিতে দান করে, তারা বিশ্বাস করেন, সেই অর্থ স্বচ্ছভাবে এবং চ্যারিটির উদ্দেশ্য অনুযায়ী ব্যবহার করা হবে। কিন্তু এই ঘটনায় দেখা গেছে, ট্রাস্টিরা প্রয়োজনীয় তদারকি এবং যাচাই ছাড়াই একটি বড় বিনিয়োগে এগিয়ে গেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “এর আগেও ইস্ট লন্ডন মসজিদ ট্রাস্টকে অর্থ ব্যবস্থাপনার বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। এবার তাদের প্রতি অফিসিয়াল সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে এবং আমরা প্রত্যাশা করি তারা নির্ধারিত পদক্ষেপ দ্রুত গ্রহণ করবে। কমিশন এই চ্যারিটির অগ্রগতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে।”
উল্লেখ্য, ইস্ট লন্ডন মসজিদ ট্রাস্ট ১৯১০ সাল থেকে সক্রিয় রয়েছে এবং এটি লন্ডনের প্রাচীনতম ও অন্যতম বৃহৎ মসজিদ হিসেবে বিবেচিত। এটি ইসলাম প্রচার, ধর্মীয় শিক্ষা, ও সামাজিক সেবায় যুক্তরাজ্যের মুসলিম কমিউনিটির একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান।
সূত্রঃ ইউকে ডট গভ
এম.কে
৩১ মে ২০২৫