ট্র্যাম্পের জন্য ‘গলা ফাটিয়েছিল ‘ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকানরা। মার্কিন নির্বাচনে জেতার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু পদে বসেই ভারতের বিরুদ্ধে ১০০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর হুমকি দিলেন ট্রাম্প।
অতীতেও একবার ভারতকে হুমকি দিয়েছিলেন ট্র্যাম্প। যদিও প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প এই কাজ করবেন না বলে আশা করছে ভারত। কিন্তু ক্ষমতায় বসেই ফের একই হুমকি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারত-সহ ব্রিকসের সকল দেশগুলির বিরুদ্ধে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার হুমকি দেন তিনি।
ট্রাম্প বলেছেন, ” যদি ব্রিকস দেশগুলি মার্কিন ডলারের পরিবর্তে অন্য কোনও মুদ্রায় লেনদেনের পদক্ষেপ নেয় তবে আমরা তাদের সঙ্গে ব্যবসায় কমপক্ষে ১০০ শতাংশ শুল্ক বসাব।”
ব্রিকস দশটি দেশের একটি সংগঠন – রাশিয়া, ভারত, চিন, দক্ষিণ আফ্রিকা, মিশর, ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইরান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত এই দেশগুলি ব্রিকসের অন্তর্গত। ডিসেম্বর মাসেও ট্রাম্প ব্রিকস দেশগুলোকে এই ধরনের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সতর্ক করেছিলেন।
অতীতেও এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ডিসেম্বরে তিনি বলেছিলেন, ”ভারত কখনই ডি-ডলারাইজেশনের পক্ষে ছিল না। ব্রিকসে আলাদা মুদ্রা রাখার কোনও প্রস্তাব নেই ভারতের।”
কিন্তু ২০২৪ সালের অক্টোবরে ব্রিকস দেশগুলির এক শীর্ষ সম্মেলনে ডলারের বিকল্প মুদ্রার প্রসঙ্গ তুলেছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছিলেন, আমেরিকা আসলে মার্কিন ডলারকে “অস্ত্র” হিসাবে ব্যবহার করেছে। এটি তাদের সবচেয়ে “বড় ভুল”। পুতিন সেই সময় বলেছিলেন, ” আমরা ডলার ব্যবহার করতে অস্বীকার করিনি। কিন্তু আমাদের যদি কাজই করতে না দেওয়া হয়, তাহলে আমরা কী করতে পারি? আমরা বিকল্প খুঁজতে বাধ্য হচ্ছি।”
গতবারের ব্রিকস সন্মেলনেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের হাতে একটি মুদ্রার ছবি দেখা যায়। সম্ভবত ব্রিকস কারেন্সির বাস্তবায়ানে সেই ছবি সবথেকে বড় জল্পনার জন্ম দেয়। যার পর থেকেই চিন্তা বাড়ে আমেরিকার। এখন সেই চিন্তাই ফুটে উঠেছে সদ্য জয়ী ট্রাম্পের মুখে। রাশিয়া বিশেষভাবে একটি নতুন পেমেন্ট সিস্টেম তৈরির করতে চাইছে। যা গ্লোবাল ব্যাঙ্ক মেসেজিং নেটওয়ার্ক, SWIFT এর বিকল্প হিসাবে কাজ করবে। মস্কো এর মাধ্যমে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে এই মুদ্রার মাধ্যমে অংশীদারদের সঙ্গে বাণিজ্য করতে চায়।
বিশ্বের অর্থনৈতিক মানচিত্র বলছে, মার্কিন ডলার এখনও পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ব্যবসায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত মুদ্রা। অতীতে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েও টিকে আছে এই মুদ্রা। যদিও বর্তমান বিশ্বে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলি বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিতে আমেরিকার আধিপত্য নিয়ে বিরক্ত। সেই কারণেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নতুন মুদ্রা চাইছে উন্নয়নশীল দেশগুলি।
সূত্রঃ এবিপি ইন্ডিয়া
এম.কে
২১ জানুয়ারি ২০২৫