বিশ্লেষণ: সাম্প্রতিক সময়ে ইকমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যবসা পলিসি নিয়ে অভিযোগের ঝড় সবখানে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে টাকা আটকে রাখা, রিফান্ড সেবার দুর্গতি, দুর্বল ব্যবস্থাপনাসহ বহু অভিযোগের তীর ছুড়ছেন এর সেবা গ্রহণকারীরা।
পণ্য ডেলিভারি বিষয়ে ফেসবুকের একটি পাবলিক গ্রুপে বিপ্লবশীল ভুলন বলেন, এখনো পাই নি। কোন যোগাযোগও সম্ভব হচ্ছে না। ইভ্যালির শুভ কামনা করি।
অর্ডার ডিটেইলের ছবি প্রকাশ করেন তিনি। গত জুন মাসের ২২ তারিখের একটি ইনভেয়সে দেখা যায়, পেমেন্ট করার পর দুই মাসেরও বেশি সময় চলে গেছে, এরপরও পণ্যটি তার কাছে এসে পৌঁছেনি।
মাহমুদ হাসান অভি অভিযোগ করে বলেন,
গত ৩১ জানুয়ারি স্টারটেক থেকে ল্যাপটপ অর্ডার করি। ১২ মার্চ দুপুরে স্টারটেক থেকে ফোন দিয়ে আমাকে জানায় সেইম মডেলের ল্যাপটপ এসএসডি ছাড়া আছে। আমি চাইলে তারা আমাকে আলাদা করে এসএসডি লাগিয়ে দিবে। এসএসডির দাম বেশি। তারপরও তারা আমাকে এটি করে দিতে চাচ্ছে। আমার পারমিশন চাচ্ছে। আমি রাজি হই। তার ১ ঘন্টা পর ইভালি থেকে ফোন করে আমাকে বলে এই ল্যাপটপ স্টকে নেই। তাই তারা অর্ডার ক্যান্সেল করতে চাচ্ছে, ১০% ক্যাশব্যাক সহ ব্যালেন্স রিফান্ড করে দেয়া হবে।
শেষে ১৯ মে সেই ল্যাপটপের অর্ডার ক্যান্সেল হয় আমাকে কোনো কিছু না জানিয়ে কোনো এক্সট্রা ক্যাশব্যাক ছাড়াই। তাদের সাপোর্ট এ কন্টাক্ট করতে ব্যর্থ হই। ইস্যুতে প্রবলেম সাবমিট করলে সেখানে কোনো রিসপন্স পাইনি।
ফেসবুকের পাবলিক গ্রুপে করা পোস্টে অপর এক ব্যক্তি বলছেন,
১০০%-১৫০% ছাড় দেয়া পন্যগুলো আসলে তারা ম্যানেজ করে কিভাবে? কোনো কোম্পানি এত অল্প দামে পন্য খুচরা ডেলিভারি দেয় বলে মনে হয়না। আর তাদের শোরুম থাকতে ইভ্যালির মাধ্যমে অর্ধেক বা তারো কম দামে পন্য বিক্রি করার মানে কি
এভাবে বিক্রি মানে তো ব্যবসায়িকভাবে কোম্পানিগুলোরি লস। তাহলে তারা নিশ্চয় ইভ্যালিকে দিয়ে এত কম দামে তাদের পণ্য বিক্রি করিয়ে তাদের অফলাইন ব্যবসার ক্ষতি করাতে চাইবে না। যদি ইভ্যালিকে তারা একেবারে খুচরা মূল্যেও পণ্য দিয়ে থাকে তাও ১০০-১৫০% ছাড় দেয়া অসম্ভব বিষয়।
একজনকে মন্তব্য করতে দেখা যায়,
আমার মনে হয় ওরা অনেক প্রডাক্ট স্টকে রাখে না। যখন কোনো গ্রাহক অর্ডার করে ওরা তখন সেটা স্টকে আনে আর সেই প্রডাক্টটা আনতেই এত সময় লাগে। আর কোনো ভাবে ওরা পণ্যটা ওদের স্টকে আনতে না পারে তখন সেটা ক্যান্সেল করে দেয় !
বিশেষ করে এমনটা হয় ইলেক্ট্রিক জিনিসের ক্ষেত্রে কারণ এইগুলো চায়না থেকে বা অন্য কোথাও থেকে আসতেও কিছু টা সময় নেয় শিপিং এ!
এরমধ্যে, অনলাইনে পণ্য কেনাবেচার প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ ওঠায় প্রতিষ্ঠানটি এবং এর চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেলের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে।
ঘটনার প্রবাহে ইভ্যালি প্রধান রাসেল লাইভে এসে কাঁদার একটি ভিডিও অনেকের নজরে পড়ে।
বিডিনিউজের একটি খবরে বলা হয়, মুদ্রা পাচার ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন বন্ধে দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সংস্থা বিএফআইইউর প্রধান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসান বলেন, প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। সে কারণে নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি এবং এর এমডি ও চেয়ারম্যানের ব্যাংক হিসাব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
২৯ আগস্ট ২০২০
এনএইচটি