সম্প্রতি কক্সবাজারে মার্কিন সেনাবাহিনী ‘ঘাঁটি স্থাপন করেছে’—এমন একটি গুজব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ও জনমনে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ ও বিভ্রান্তি ছড়ালেও বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন।
সরকারি সূত্র ও ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, কক্সবাজারে কোনো মার্কিন সামরিক ঘাঁটি নেই। বরং ২০২১ সাল থেকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি চুক্তির আওতায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে মার্কিন জরুরি উদ্ধার বিশেষজ্ঞরা, যা মূলত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও উদ্ধার অভিযানে সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যেই পরিচালিত হচ্ছে।
সম্প্রতি এই প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে “Swift Water Rescue Training” নামে একটি উচ্চতর উদ্ধার কোর্স সফলভাবে সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস। প্রশিক্ষণটি পরিচালনা করে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ প্রশিক্ষক দল, যারা বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে আসেন এবং শুধুমাত্র মানবিক ও কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করেন।
বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, “আমরা সম্পূর্ণ সরকারি অনুমোদনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছি যাতে আমাদের উদ্ধার কার্যক্রম আরও দক্ষ হয়। এটি কোনো সামরিক চুক্তি নয়, বরং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা।”
একাধিক সরকারি কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক এই গুজবকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিভ্রান্তিকর বলে অভিহিত করেছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, “গুজব ছড়িয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা একটি অপরাধ। যে বা যারা এই তথ্য প্রচার করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশে বিদেশি সহায়তা ও কারিগরি প্রশিক্ষণকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে জনমনে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য একটি গোষ্ঠী বারবার এ ধরনের গুজব ছড়ায়।
কক্সবাজারে মার্কিন সেনা ঘাঁটির কোনো অস্তিত্ব নেই। যা ঘটছে, তা হলো আন্তর্জাতিক সহযোগিতার আওতায় একটি পেশাদার প্রশিক্ষণ কার্যক্রম—যা বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। গুজবের বদলে তথ্যভিত্তিক সচেতনতা বাড়ানো এখন সময়ের দাবি।
সূত্রঃ স্যোশাল মিডিয়া
এম.কে
২২ মে ২০২৫