জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স স্ট্রাইকের ঘোষণা দিয়েছিলেন। স্বৈরচার শেখ হাসিনা সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত প্রবাসী আয় না পাঠাতে ক্যাম্পেইনও করেছিলেন তারা। ৫ আগস্টে হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার তিন দিন পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরপর তিনি প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর আহ্বান জানান। সেই আহ্বান ও নিজেদের দেওয়া কথা রেখে চলেছেন প্রবাসীরা। চলতি মাসেও পাঠিয়েছেন ২৪০ কোটির বেশি মার্কিন ডলার।
বৈধ পথে অর্থ পাঠানোর প্রবণতা বাড়ায় দেশে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স বেড়েছে। বিদায় সেপ্টেম্বরে (১ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর) প্রবাসী আয় এসেছে ২৪০ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। আজ মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, আগের বছরের (২০২৩ সাল) সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৩৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। আর চলতি বছরের (২০২৪ সাল) সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী আয় এসেছে ২৪০ কোটি ৫০ লাখ ডলার। সেই হিসেবে এই সময়ের মধ্যে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৮২ দশমিক ২০ শতাংশ।
আগের বছরের ১ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্ষন্ত প্রবাসী আয় এসেছিল ৪৯০ কোটি ৭০ লাখ ডলার। আর চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্ষন্ত প্রবাসী আয় দেশে এসেছে ৬৫৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার। একই সময়ে গত বছরের তুলনায় এবার প্রবাসী আয় বেড়েছে ৩৩ দশমিক ৩০ শতাংশ।
প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে সচেতনতা বাড়ানোর কারনে এখন হুন্ডি বা অবৈধভাবে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা কমেছে। এতে বর্তমানে প্রবাসী আয়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
আগের বছরের (২০২৩ সাল) সেপ্টেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের (২০২৪ সাল) সেপ্টেম্বরের একই সময়ে প্রবাসী আয়ের প্রবদ্ধি ৮০ দশমিক ২০ শতাংশ জানিয়ে হুসনে আরা শিখা বলেন, অর্থ পাচার পুরোপুরি বন্ধ করা গেলে এই প্রবাসী আয় আরও বাড়বে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১১ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার। ফেব্রুয়ারিতে আসে ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার, মার্চে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ ৭০ হাজার ডলার, এপ্রিলে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ ৩০ হাজার ডলার, মে মাসে ২২৫ কোটি ৪৯ লাখ ৩০ হাজার ডলার, জুনে ২৫৩ কোটি ৮৬ লাখ ডলার, জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার এবং আগস্টে ২২২ কোটি ৪৫ লাখ ৫০ হাজার ডলার এসেছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৯ কোটি ১২ লাখ ৬০ হাজার ডলার, নভেম্বরে ১৯৩ কোটি ৪০ হাজার ডলার, অক্টোবরে ১৯৭ কোটি ১৪ লাখ ৩০ হাজার ডলার, সেপ্টেম্বরে ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার, আগস্টে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার এবং জুলাইয়ে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।
সূত্রঃ বাংলাদেশ ব্যাংক
এম.কে
০১ অক্টোবর ২০২৪