যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধিতে সেদেশের অভিবাসী, মুসলিম ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদের দোষারোপ করেছেন এক সংসদ সদস্য।
যুক্তরাজ্যের ক্যাল্ডার ভ্যালির সংসদ সদস্য ক্রেগ হুইটেকার বলেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নিয়মনীতি লঙ্ঘনকারীদের বেশিরভাগই বিএএমই (কালো, এশিয়ান ও সংখ্যালঘু) সম্প্রদায়ের। আর এই মহামারিটিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে না সংখ্যালঘু এরা।
এলবিসি রেডিওতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তাকে বলতে দেখা যায়, যেসব এলাকায় করোনার সংক্রমণ বেশি দেখা গিয়েছে সেইসব এলাকার দিকে একটু ভালো করে লক্ষ্য করলে আপনারা বুঝতে পারবেন, বিএএমই সম্প্রদায়ের লোকেরা বিধিনিষেধগুলো গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে না। যতক্ষণ না লোকেরা এটিকে গুরুত্বের সঙ্গে নেবে, এই প্যানডেমিক থেকে আমরা মুক্তি পাব না।
সংরক্ষণবাদী এমপির এমন মন্তব্য রেডিওতে সম্প্রচারের পর শুরু হয় সমালোচনা। তার নির্বাচনী অঞ্চলটি যুক্তরাজ্যের উত্তরে এবং সম্প্রতি এ অঞ্চলে জনসমাগমের উপর নতুন করে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়।
৩ আগস্ট ইন্ডিপেনডেন্টে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সূত্রে জানা যায়, বর্ণবাদবিরোধী দাতব্য সংস্থা এবং বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা ক্রেগের এই মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন। হ্যালিফ্যাক্সের শ্রম বিষয়ক এমপি হোলি লিঞ্চ বলেছেন, ক্রেগের এই দাবি সত্য নয়।
তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিদিনই আমার এলাকার বিএএমই সম্প্রদায়ের সঙ্গে কথা বলি। আমরা একইসঙ্গে সমুদ্র সৈকতে জনসমাগম, ফুটবল উদযাপন এবং ডিপ্রেশনের থেকে অতিরিক্ত মদ্যপান রোধে নজর দিচ্ছি।
এদিকে ক্রেগের মন্তব্য একটি খাটি বর্ণবাদ উল্লেখ করে ওয়ারিংটন নর্থের প্রতিনিধিত্বকারী শ্রম সংসদ সদস্য শার্লোট নিকোলাস বলেছেন, এটি কোনো প্রমাণ দ্বারা বহন করে না।
বর্ণবাদবিরোধী আরেকটি সামাজিক কার্যক্রমের পরিচালক ইমাম আতা বলেন, ক্ষমা চেয়ে মন্তব্য প্রত্যাহারের জন্য ওই সংসদ সদস্যকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঈদের দিনও পরিবার পরিজনদের সঙ্গে দেখা করতে না পেরে হতাশার মাঝে বসবাস করা মুসলিমদের দোষারোপ না করে বরং সহানুভূতি সহকারে আচরণ করা উচিত সরকারের।
জানা যায়, সামাজিক দূরত্ব বিষয়ক নতুন নির্দেশটি ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে ঈদের একদিন আগে এসেছিল। তাই অনেকেই ঈদকে কেন্দ্র করেই সরকারের এই কার্যক্রমটি মিলিয়ে ফেললেও স্বাস্থ্যসচিব ম্যাট হ্যানকক জানান, ইচ্ছাকৃতভাবে তা করা হয়নি।
০৩ আগস্ট ২০২০