ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতা শুভেন্দু অধিকারীর বাংলাদেশকে নিয়ে একের পর এক মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্য যেন থামছেই না। বিজেপির এই নেতা এবার বাংলাদেশকে কটাক্ষ করে হাস্যকর বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমার কাছে খবর আছে, কলকাতা দখল করার জন্য ঢাকা থেকে ৩ লাখ হাতে টানা রিকশা রওনা দিয়েছে। যদিও বাংলাদেশে হাতে টানা রিকশার অস্তিত্ব নেই।
সোমবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দ ও নিউজ-১৮ এই তথ্য জানিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘‘আমার কাছে খবর আছে, ঢাকা থেকে ৩ লাখ হাতে টানা রিকশা রওনা দিয়েছে কলকাতা দখল করার জন্য। আরে ওদের আছেটা কী? রাফাল রাখা আছে হাসিমারায়। শুধু আওয়াজ দিলে না ওখান থেকে, প্যান্টে বাথরুম হবে।’’
পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতাসহ রাজ্যের অন্যান্য শহরে হাতে টানা রিকশার ব্যবহার থাকলেও বর্তমান বাংলাদেশের কোথাও এই রিকশা নেই। তবে বাংলাদেশে স্বল্প খরচের প্যাডেলচালিত রিকশার পাশাপাশি ব্যাটারিচালিত রিকশার ব্যবহার রয়েছে।
বাংলাদেশ ইস্যুতে সম্প্রতি বেশ সরব হয়ে উঠেছেন পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি নেতা শুভেন্দু। গতকাল এক সমাবেশে বক্তৃৃতা দিতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘‘ভারত যদি একটি রাফাল যুদ্ধবিমান পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলেই বাংলাদেশ কেঁপে উঠবে। ভারতের সামরিক সক্ষমতা সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই বাংলাদেশের। তারা যেন ভালোভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের কাছ থেকে ভারতের শক্তি সম্পর্কে জেনে নেয়।’’
এর আগে, গত ২ ডিসেম্বর বিজেপির এই নেতা বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী বনগাঁর পেট্রাপোলে এক সভায় বলেছিলেন, ‘‘ইউনুস হুঁশিয়ার, একদিনে শুধু কলকাতায় যে আবর্জনা বের হয়, ওটা ফেলে দিয়ে এলেই না ঢাকা পড়ে যাবেন আপনি। পাঙ্গা নিতে আসবেন না।’’
পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারকে ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দিয়ে সেদিন তিনি বলেন, ‘‘১৯৭১ সালে ১৭ হাজার ভারতীয় জওয়ান আত্মবলিদান দিয়ে এই বাংলাদেশ তৈরি করে দিয়ে গিয়েছেন। ভুলে যাবেন না। কেউ যদি অতীত ভুলে যান, তার ভবিষ্যৎ ভালো হয় না। ভালো হতে পারে না ভবিষ্যৎ।’’
৯ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় দেওয়া বক্তৃতায় আবারও বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘‘ হিন্দু, মুসলিম, শিখ বা খ্রিস্টানরা দাঙ্গা শুরু করেন না। সমাজ-বিরোধীরা দাঙ্গা শুরু করেন। আমাদের এমন কোনও মন্তব্য করা উচিত নয়; যা বাংলায় খারাপ পরিস্থিতি তৈরি করে। তবে আমি খুশি যে, বাংলাদেশে নিপীড়নের ঘটনায় এখানে হিন্দু এবং সংখ্যালঘু মুসলিম—উভয়ই প্রতিবাদ করছে। এটা আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ।’’
সূত্রঃ এবিপি আনন্দ
এম.কে
১০ ডিসেম্বর ২০২৪