4.9 C
London
December 29, 2024
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

কারাগার থেকে বিশ্বমঞ্চে সুনামগঞ্জের হামিদা বানু

একসময় জীবনযুদ্ধে কারাগারে যেতে হয়েছিল হামিদা বানুকে। সেখান থেকে মুক্তি মিলেছে, তাও গানের বদৌলতে। হাসন রাজার বাড়িতে গৃহপরিচারিকা ছিলেন। ‘দিলারাম’ গানের সুবাদে এখন পুরো বিশ্ব চেনে হামিদা বানুকে। সুনামগঞ্জের এই শিল্পীর জীবন-সংগ্রামের গল্প নিয়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর প্রচ্ছদ প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিকে। শিরোনাম ছিল ‘জেলখানা থেকে সংগীতের মঞ্চে’।

সেই প্রতিবেদনটি নজরে আসে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের। শিল্পী হামিদা বানুর আবাসনের ব্যবস্থা করছে তারা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় তাকে একটি বাড়ি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক বলেন, ‘হামিদা বানুকে নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে আমরা খোঁজখবর নিতে শুরু করি। সম্প্রতি তার খালি কণ্ঠের গানও শুনি। তিনি একটি একটি বাড়ি চেয়েছিলেন। এখন একটি বসতবাড়ি তৈরি করে দেব আমরা। জেলা প্রশাসন তাকে হারমোনিয়ামও উপহার দিয়েছেন। হামিদা বানু আড়ালের এক মেধাবী শিল্পী। তিনি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আগামীতে আরো ভালো করবেন।’

সুনামগঞ্জের রঙ্গারচর ইউনিয়নের বনগাঁওতে জন্ম হামিদার। বাবা লাল মিয়া বয়াতিও শিল্পী ছিলেন। বাবার সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেতেন। একসময় বিভিন্ন ওরস মাহফিলে চলে যেতেন গাইতে। এমনই এক অনুষ্ঠানে এক দিন সুনামগঞ্জের তৎকালীন মেয়র ও হাসন রাজার প্রপৌত্র মমিনুল মউজদীনের সঙ্গে পরিচয়। তিনি হামিদাকে আমন্ত্রণ জানান হাসন উৎসবে গাইতে।

এর কিছুদিন পর তার বিয়ে হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় গান গাওয়া! একসময় ভাগ্যবদলের আশায় সীমান্ত পাড়ি দিয়েছিলেন। কিন্তু অনুপ্রবেশের দায়ে ধরা পড়েন। ১৬ বছরের জেল হয় তার। তবে প্রায় সাড়ে তিন বছর জেল খাটার পর মুক্তি মিলল। জেলখানায় একবার এক দুর্গাপূজায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনটি গান পরিবেশনের সুযোগ পেয়েছিলেন হামিদা বানু। ঘটনাচক্রে সেখানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হামিদার গানে মুগ্ধ হয়ে তিনি তাকে সাজা কমিয়ে মুক্ত করার উদ্যোগ নেন। পরে অবশ্য আবারও কাশ্মীর গিয়ে আট বছর ছিলেন। দেশে ফিরলে স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পরে তার ঠাঁই হয় হাসন রাজা জাদুঘরে। একমাত্র কন্যাকে নিয়ে এখন হাসন রাজার প্রপৌত্র ও হাসন রাজা মিউজিয়ামের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামারীন দেওয়ানের আশ্রয়ে আছেন।

হাসন রাজার প্রায় দুই শতাধিক গান জানেন হামিদা। গত ৯ সেপ্টেম্বর হামিদার কণ্ঠে হাসন রাজার ‘দিলারাম’ গানটি প্রকাশ করে কোক স্টুডিও বাংলা। বাকি জীবন গান নিয়েই থাকবেন হামিদা বানু। তিনি বললেন, ‘এখন গান নিয়েই পড়ে আছি। গান নিয়েই থাকব। গানের বাইরে আমার আর কোনো জীবন নেই।’

এম.কে
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আরো পড়ুন

১৫ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

বাংলাদেশের উন্নতি দেখে এখন লজ্জিত হইঃ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশে ভারতীয়দের সাবধানে চলাচলের পরামর্শ