সারা শরিফের বাবা ‘মনস্টার ম্যানশন’-এ স্থানান্তরিত হয়েছেন যেখানে কুখ্যাত খুনি ইয়ান হান্টলি ও লেভি বেলফিল্ড কারাবন্দি অবস্থায় আছেন বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়।
মি. শরিফ তার সেলে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন, কারণ তিনি জানেন তার উপর বড় ধরনের আক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে।
১০ বছর বয়সী সারা শরিফকে নির্যাতন ও হত্যা করার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তার বাবা উরফান শরিফকে “মনস্টার ম্যানশন” নামে পরিচিত ফ্রাঙ্কল্যান্ড জেলে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
উরফান শরিফ তার মেয়েকে হত্যার জন্য ৪০ বছরের ন্যূনতম সাজা নিয়ে কারাবন্দি। তাকে অত্যন্ত কঠোর নিরাপত্তার ফ্রাঙ্কল্যান্ড জেলে স্থানান্তর করার পর থেকে তিনি তার সেলে ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় রয়েছেন।
ডারহামের এই কারাগারটিতে কুখ্যাত খুনি ইয়ান হান্টলি, লেভি বেলফিল্ড এবং প্রাক্তন পুলিশ কর্মকর্তা ওয়েইন কাউজেন্সসহ বহু সন্ত্রাসী ও খুনিরা বন্দি। মি.
শরিফকে দক্ষিণ লন্ডনের বেলমার্শ কারাগার থেকে ফ্রাঙ্কল্যান্ডে স্থানান্তর করা হয়, বেলমার্শ কারাগারে নববর্ষের দিনে একটি টুনা ক্যানের ঢাকনা দিয়ে তার গলা ও মুখে আঘাত করা হয়েছিল।
একটি সূত্র জানায়, “যখন শরিফকে আনা হয়েছিল, তখন কারাগারের সমস্ত বন্দি তালাবদ্ধ ছিল, যাতে কেউ তার কাছে পৌঁছাতে না পারে। কিন্তু খুব দ্রুত সবাই জানতে পারে যে সে নিজের কন্যার হত্যাকারী।”
সূত্রটি আরও বলে, “শিশু হত্যাকারীদের প্রতি ঘৃণা সব জায়গাতেই থাকে, এমনকি ফ্রাঙ্কল্যান্ডের মতো জায়গাতেও। শরিফ এখন এতটাই ভীত যে তিনি তার সেল থেকে বের হতে সাহস করছেন না। তিনি জানেন, বেলমার্শের মতো এখানেও তার উপর আক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে।”
২০২৩ সালের আগস্টে সারাকে সারের ওকিংয়ে তার পরিবারের বাড়িতে বিছানায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। বিচার চলাকালীন জানা যায়, শরিফ ও তার স্ত্রী বেইনাশ বাটুল সারাকে বছরের পর বছর ধরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছিল।
বিচারক রায়ে বলেন, “সারার মৃত্যু ছিল বছরের পর বছর অবহেলা, ক্রমাগত আঘাত ও নির্যাতনের চূড়ান্ত পরিণতি।”
শরিফ তার অপরাধ স্বীকার করে বলেন, “হ্যাঁ, সে আমার জন্য মারা গিয়েছে।”
সারাকে রক্ষা করার জন্য ১৫টি সুযোগ থাকলেও সামাজিক সেবা ও স্কুল কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয় কিশোরী মেয়েকে রক্ষা করতে।
এই নির্মম ঘটনার পর সারাকে হত্যাকারী শরিফ, বাটুল এবং মালিক পাকিস্তানে পালিয়ে গিয়েছিল। পরে ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাদের যুক্তরাজ্যে ফিরিয়ে আনা হয়।
সারার হত্যার ঘটনা ব্রিটিশ জনগণকে হতবাক করে দিয়েছে, এবং এই নির্মম অপরাধের স্মৃতি অনেকদিন ধরে মানুষের মনে গেঁথে থাকবে বলে মনে করা হয়।
সূত্রঃ দ্য সান
এম.কে
২৯ জানুয়ারি ২০২৫