কার্ডিফের একটি নাইটক্লাব থেকে এক তরুণীকে অনুসরণ করে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে ফাওয়াজ আলসামাউ (৩৩) নামে এক সিরীয় আশ্রয়প্রার্থীকে ৩৭ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের আদালত। সাজা শেষে তাকে দেশ থেকে বহিষ্কার করারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, রাজধানীর পালস নাইটক্লাবে সাদা টি-শার্ট, জিন্স ও গিলেট পরিহিত অবস্থায় আলসামাউ ক্লাবের ভেতরে ঘোরাঘুরি করছেন এবং এক তরুণীর পিছু নিচ্ছেন। পরে ভোর ৪টার দিকে ওই তরুণী ক্লাব থেকে বেরিয়ে বাড়ির পথে রওনা হলে আলসামাউ তাকে অনুসরণ করে ক্যাথেইস এলাকার রেলসেতুর নিচে গিয়ে আক্রমণ করে।
প্রসিকিউটর ট্যাবিথা ওয়াকার আদালতকে জানান, আলসামাউ গলা চেপে ধরে তরুণীর ওপর যৌন হামলা চালায় এবং সাত সেকেন্ড ধরে তাকে নির্যাতন করে। তরুণী শেষ পর্যন্ত ধাক্কা দিয়ে হামলাকারীকে সরিয়ে দেন এবং দৌড়ে গিয়ে পুলিশে খবর দেন। পুলিশের তদন্তে সিসিটিভির মাধ্যমে আলসামাউকে শনাক্ত করা হয় এবং পরে ইয়র্কশায়ারে ১৬০ মাইল দূরে আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে তার অবস্থান জানা যায়।
ভুক্তভোগী আদালতে বলেন, এই হামলা তার জীবনে স্থায়ী দাগ রেখে গেছে। “আমি এখন সবসময় পেছনে তাকিয়ে থাকি, অন্ধকারে ভয় পাই। কাজ করতে পারতাম না, দুই সপ্তাহ ঘর থেকে বের হইনি। মানসিক স্বাস্থ্যে গভীর প্রভাব পড়েছে, ঘুম আসে না, দুঃস্বপ্ন দেখি,”—বলেন তিনি।
আলসামাউ আদালতে যৌন নির্যাতন ও ইচ্ছাকৃত শ্বাসরোধের অভিযোগ স্বীকার করেন। তবে তার আইনজীবী ডেভিড পিনেল জানান, প্রথমে তিনি দোষ স্বীকার করলেও পরে তা অস্বীকার করেন, ফলে প্রতিরক্ষার যুক্তি উপস্থাপন করা কঠিন হয়ে পড়ে।
রায় ঘোষণাকালে বিচারক সেলিয়া হিউজ বলেন, “এটি ছিল রাতে একা হাঁটতে থাকা এক নারীর ওপর ভয়াবহ আক্রমণ। প্রতিটি নারীর অধিকার আছে নিরাপদে বাড়ি ফেরার, কিন্তু আপনি সেই অধিকার কেড়ে নিয়েছেন।” তিনি আরও যোগ করেন, “আপনি নিজেকে ধর্মপ্রাণ মুসলিম দাবি করেন, কিন্তু সেদিনের আচরণ আপনার বিশ্বাসের চর্চাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।”
বিচারক আলসামাউকে যৌন নির্যাতনের দায়ে ৩৭ মাসের কারাদণ্ড দেন এবং বলেন, “তুমি সাজা ভোগ শেষে সম্ভবত যুক্তরাজ্য থেকে বহিষ্কৃত হবে।”
সূত্রঃ দ্য টেলিগ্রাফ / বিবিসি
এম.কে

