9.7 C
London
March 31, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে শঙ্কার মুখে পড়তে পারে ফ্যাশন ডিজাইন শিল্প

যুক্তরাজ্যের নামকরা পোশাক ব্র্যান্ড এইচ এন্ড এম  বিজ্ঞাপন প্রচারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে।

H&M-এর একজন মুখপাত্র জানান, বিজ্ঞাপনে যেই সুন্দর টপটি দেখা যাবে, সেটি হবে বাস্তব পোশাক। কিন্তু সেটি যিনি পরিধান করছেন, সেই মডেল বাস্তব নাও হতে পারেন। ফ্যাশন জায়ান্ট H&M কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে ডিজিটাল “ক্লোন” তৈরির ক্ষমতাকে গ্রহণ করছে এবং এটি ব্যবহার করছে  বিজ্ঞাপন প্রচারে। যেখানে প্রকৃত ফ্যাশন মডেলদের ডিজিটাল অবতার দেখা যাবে।

H&M মডেল এবং তাদের মডেলিং এজেন্সিগুলোর  অংশীদারিত্বে ৩০ জন মডেলের ডিজিটাল টুইন তৈরি করছে বলে জানা গেছে। Business of fashion  এক তথ্যে জানায়, এই AI-উৎপন্ন ছবি বাস্তব বিজ্ঞাপন প্রচারে ব্যবহার করা হবে, যা সোশ্যাল মিডিয়া ও পোস্টার মার্কেটিংয়ের মতো সাধারণ প্ল্যাটফর্মে দেখা যাবে।

বিজ্ঞাপনের ছবিগুলোতে যে পোশাক দেখা যাবে, সেগুলো ডিজিটাল টুইন দ্বারা “পরিধান” করানো হবে। এজন্য বিভিন্ন কোণ ও আলোর পরিবেশে তোলা মডেলদের একাধিক ছবি AI-তে ইনপুট দেওয়া হবে, যা পর্দায় উপস্থাপনযোগ্য ডিজিটাল ইমেজ তৈরি করবে।

AI মডেলটি এরপর স্টাইলিং ও পোজিংয়ের জন্য ব্যবহার করা যাবে, যা সম্ভবত মূল মানব মডেল ছাড়াই কনটেন্ট তৈরি করতে পারবে। এর ফলে ফটোগ্রাফার, মেকআপ আর্টিস্ট, হেয়ার স্টাইলিস্ট, লাইটিং ও ওয়ার্ডরোব বিশেষজ্ঞসহ অন্যান্য কলাকুশলীদের প্রয়োজন কমতে পারে।

H&M-এর বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার লুইস লুন্ডকুইস্ট জানিয়েছেন, এই AI ক্যাম্পেইন “আমাদের কনটেন্ট তৈরির পদ্ধতিকে প্রভাবিত করবে,” তবে কিভাবে তা হবে, সে বিষয়ে এখনই নির্দিষ্ট কিছু বলা যাচ্ছে না।

এই ব্যবস্থায় মডেলদের পারিশ্রমিক কীভাবে নির্ধারিত হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে লুন্ডকুইস্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, এটি প্রচলিত চুক্তির মতোই হতে পারে। এখানে কৃত্রিম ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে, “ডিজিটাল টুইন ব্যবহারের অধিকার বাবদ পারিশ্রমিক পাবে,” যা প্রকৃত মডেলদের জন্যও লাভবান হবে।

বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, পৃথিবীতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্রুত বিকাশ ঘটছে। কিন্তু এই প্রযুক্তির ব্যবহার সংক্রান্ত আইন ও নিয়মনীতি এখনও পিছিয়ে আছে। বিশেষ করে ফটোগ্রাফার, মডেল, শিল্পীদের ক্ষতিপূরণ কিভাবে দেওয়া হবে, সেটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

এই প্রযুক্তির সুবিধা যেমন রয়েছে, তেমনি এটি বিতর্কিতও হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, কেউ যদি AI দিয়ে কন্ঠ হারানো ব্যক্তির কণ্ঠ ফিরিয়ে দিতে পারে, সেটি ইতিবাচক। কিন্তু একই প্রযুক্তি যদি বিভ্রান্তিকর ডিপফেক ছবি তৈরি করতে ব্যবহৃত হয় তাহলে এটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

H&M – একজন মুখপাত্র বলেন, আমরা ডিজিটাল টুইন প্রযুক্তির প্রতি মনোযোগী এবং এটিকে যত্নসহকারে পরিচালনা করতে চাই।

H&M-এর দৃষ্টিকোণ থেকে এটি সুবিধাজনক, কারণ এতে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হয়। তবে এই পরিবর্তন ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির অনেক কাজের ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করতে পারে। যেমন, ফটোগ্রাফার, মেকআপ আর্টিস্ট, লাইটিং বিশেষজ্ঞদের কাজের সুযোগ কমে যেতে পারে। যদি AI নিজেই চূড়ান্ত ছবিগুলো তৈরি করে, তবে ফ্যাশন প্রচারের প্রচলিত অর্থনৈতিক কাঠামো পুরোপুরি বদলে যেতে পারে।

তবে ভবিষ্যতে অন্য কোম্পানিগুলো কতটা নৈতিকভাবে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করবে, সেটিই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। Business of Fashion উল্লেখ করেছে, H&M এই বিষয়টি নিশ্চিত করছে মডেলদের সম্মতি ছাড়া তাদের ডিজিটাল টুইন ব্যবহার করা হবে না। তবে অন্য সংস্থাগুলো হয়তো এতটা সতর্ক নাও হতে পারে।

AI-নির্ভর ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরির ফলে সৃজনশীল পেশাজীবীদের আয় ও কর্মসংস্থানে কী প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে এখনও অনেক প্রশ্ন গিয়েছে।

সূত্রঃ ইঞ্চ / বিবিসি

এম.কে
২৭ মার্চ ২০২৫

আরো পড়ুন

টিউলিপ সিদ্দিককে পদ থেকে না সরানোয় ক্ষুব্ধ যুক্তরাজ্য রাজনীতিবিদেরা

হিথরো বিমানবন্দরে দুই উড়োজাহাজের সংঘর্ষ

নিউজ ডেস্ক

প্রয়োজনে তালেবানের সঙ্গে কাজ করবে যুক্তরাজ্য: বরিস জনসন