4.7 C
London
December 22, 2024
TV3 BANGLA
বাকি বিশ্ব

কেনিয়ায় আদালত আটকে দিলেন আদানির বিমানবন্দর চুক্তি

স্থানীয় আদালতের রায়ে কেনিয়ায় আটকে গেছে আদানি এয়ারপোর্ট হোল্ডিংস লিমিটেডের একটি চুক্তির বাস্তবায়ন। সম্প্রতি ১৮৫ কোটি ডলারের চুক্তিতে নাইরোবির জোমো কেনিয়াত্তা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট (জেকেআইএ) পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছিল ভারতীয় কোম্পানিটি। কিন্তু পরবর্তী আদেশ না আসা পর্যন্ত ৩০ বছর মেয়াদি এ চুক্তি বাস্তবায়ন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

আদানিকে বিমানবন্দর ইজারা দেয়ার বিষয়ে কেনিয়া সরকারের বিরুদ্ধে আইনি চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে এ রায় দিয়েছেন আদালত। আইনজীবীদের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কেনিয়ার মানবাধিকার কমিশন এক আবেদনে বলেছে, বিমানবন্দর ইজারা দেয়ার পদক্ষেপ অসাংবিধানিক।

আবেদনে বলা হয়, কৌশলগত ও লাভজনক জেকেআইএ কোনো বেসরকারি কোম্পানিকে ইজারা দেয়া অযৌক্তিক। এ ধরনের পদক্ষেপ সুশাসন, জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা এবং জনগণের অর্থের বিচক্ষণ ও দায়িত্বশীল ব্যবহার সম্পর্কিত সাংবিধানিক নীতিগুলো লঙ্ঘন করে।

আবেদনকারীরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদে ইজারা না দিয়ে অন্য কোনো উপায়ে জেকেআইএ সম্প্রসারণে প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ করতে পারত কেনিয়ার সরকার। এর আগে কেনিয়া বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেনরি ওগোয়ে বলেছিলেন, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব আইন পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুসরণ করে প্রযুক্তিগত, আর্থিক ও আইনি পর্যালোচনার মধ্য দিয়ে প্রস্তাবটি বিবেচনা করা হবে।

আদানি এন্টারপ্রাইজের নেতৃত্বে রয়েছেন এশিয়ার দ্বিতীয় ধনী গৌতম আদানি। তার নিয়ন্ত্রণাধীন কোম্পানি বর্তমানে ভারতের আটটি বিমানবন্দর নিয়ন্ত্রণ করছে, যা শীর্ষ ১০টি ভারতীয় অভ্যন্তরীণ রুটের ৫০ শতাংশেরও বেশি ধারণ করে। বিমানবন্দরগুলো ভারতীয় উড়োজাহাজ চলাচলের ২৩ শতাংশ পরিচালনা করে এবং দেশটির মোট যাত্রীর ২০ শতাংশকে পরিষেবা দিয়ে থাকে।

সংস্থাটি বিশ্বব্যাপী সম্প্রসারণ কৌশলের অংশ হিসেবে জেকেআইএর পরিচালনা ও উন্নয়নে চুক্তি করেছে। পরিকল্পনা অনুসারে, ২০২৯ সালের মধ্যে একটি নতুন টার্মিনাল ও ট্যাক্সিওয়ের জন্য ৭৫ কোটি ডলার বিনিয়োগের কথা রয়েছে। এছাড়া ২০৩৫ সালের মধ্যে বিমানবন্দরের উন্নয়নে অতিরিক্ত ৯ কোটি ২০ লাখ ডলার খরচ হবে।

চুক্তিটি শুরুতেই কেনিয়ার পরিবহন কর্মীদের চাকরি হারানোর সম্ভাব্য উদ্বিগ্নের মাঝে বিরোধিতার সম্মুখীন হয়। তা সত্ত্বেও দেশটির সরকার আফ্রিকার অন্যতম ব্যস্ততম বিমানবন্দর উন্নয়নের এ চুক্তির পক্ষে ছিল। তবে বিক্ষোভের কারণে সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে সতর্ক করে দেন ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা জয়রাম রমেশ।

আদানি এন্টারপ্রাইজ ২০২৮ সালের মধ্যে পুঁজিবাজারে বিমানবন্দর ব্যবসা আদানি এয়ারপোর্ট হোল্ডিংসকে তালিকাভুক্ত করার পরিকল্পনা করেছে।

এদিকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিনিয়োগের মাধ্যমে আফ্রিকায় প্রভাব বিস্তারের জন্য প্রতিযোগিতা করছে ভারত ও চীন। এতে ভারতীয় পক্ষে আদানির উপস্থিতি বেশ সরব।

অবকাঠামো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও ঋণের সমস্যায় আক্রান্ত আফ্রিকান দেশগুলোর সহায়তার জন্য সম্প্রতি তিন বছরে প্রায় ৫ হাজার ১০০ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীন।

চীনের বিস্তৃত বিনিয়োগের বিপরীতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগে অর্থ ঢালা বাড়িয়ে দিয়েছে আদানি গ্রুপ। আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোন লিমিটেড তানজানিয়া ও শ্রীলংকাসহ চারটি বিদেশী অঞ্চলে বন্দর পরিচালনার পরিকল্পনা করছে। সংস্থাটির লক্ষ্য বিশ্ব বাণিজ্যে ভারতকে একটি কেন্দ্রীয় কেন্দ্র হিসেবে স্থাপন করা। এ বিষয়ে ম্যানেজিং ডিরেক্টর করণ আদানি বলেছেন, ‘আমরা ভারতকে পূর্ব থেকে পশ্চিমে সামগ্রিক সরবরাহ চেইনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করার কাজ করছি।’

আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানিও চীনের কৌশল নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ গতি হারাচ্ছে উল্লেখ করে সম্প্রতি তিনি বলেন, ‘চীনকে বিশ্বায়নের অগ্রবর্তী ভূমিকায় দেখে হলেও আমি আশা করি তারা ক্রমে বিচ্ছিন্ন বোধ করবে।’

সূত্রঃ দি ইকোনমিক টাইমস

এম.কে
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আরো পড়ুন

আলজেরিয়ায় পিটিয়ে-পুড়িয়ে এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে ৪৯ জনের মৃত্যুদণ্ড

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে জেট ফুয়েল না দেওয়ার আহ্বান অ্যামনেস্টির

প্রাকৃতিক দুর্যোগে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এশিয়াঃ ডব্লিউএমও