TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

কেমব্রিজ বিজনেস পার্কে ৮ হাজার চাকরিঃ নতুন ঘর ও সবুজ এলাকা নিয়ে বিশাল উন্নয়ন পরিকল্পনা

ক্রাউন এস্টেট কেমব্রিজ বিজনেস পার্কের জন্য নতুন মাস্টারপ্ল্যান প্রকাশ করেছে। এই পরিকল্পনায় প্রায় ৮,০০০ নতুন চাকরি, বিস্তৃত ল্যাব ও অফিস স্পেস, আবাসন, রেস্টুরেন্ট এবং উল্লেখযোগ্য পরিমাণ গ্রিন স্পেস অন্তর্ভুক্ত থাকবে। লক্ষ্য হলো উত্তর-পূর্ব কেমব্রিজকে একটি পূর্ণাঙ্গ ইনোভেশন ডিস্ট্রিক্ট হিসেবে গড়ে তোলা।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রায় ১.৭ মিলিয়ন স্কয়ার ফুট নতুন ল্যাব ও অফিস স্পেস তৈরি হবে, যা বিজ্ঞান, গবেষণা ও প্রযুক্তি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে আকর্ষণ করবে। একই সঙ্গে ১০ একর পাবলিক গ্রিন স্পেস থাকবে, যেখানে হাঁটা পথ, সাইকেল রুট, জলাধার ও সামাজিক যোগাযোগের খোলা এলাকা থাকবে।

নতুন আবাসনের জন্য ২১০টি আবাসিক ইউনিট এবং ২০০–২৫০টি কো-লিভিং ইউনিট নির্মাণের প্রস্তাব রয়েছে। এতে একক ভাড়াটিয়াদের জন্য ব্যক্তিগত রুমের পাশাপাশি শেয়ার্ড সুবিধা থাকবে। আবাসন, কর্মক্ষেত্র ও খুচরা বাণিজ্য একত্রে পার্কটিকে একটি সম্পূর্ণ মিশ্র-ব্যবহারযোগ্য কমিউনিটিতে রূপান্তর করবে।

চারটি ভিন্ন চরিত্রের অঞ্চল পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত: মেইন স্কয়ার, টেস্টবেড, মিক্সড-ইউজ নেবারহুড এবং পার্ক এজ। এই অঞ্চলগুলোতে ল্যাব-অফিস কমপ্লেক্স, রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে, কো-লিভিং স্পেস, মবিলিটি হাব, পারিবারিক আবাসন, গ্রিনফিল্ড পার্ক, খেলার মাঠ ও ওয়াইল্ডলাইফ-সমৃদ্ধ জলাধার নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

পরিবহন ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। পার্কিং সুবিধা মূল সড়ক থেকে সরিয়ে দুইটি মাল্টি-স্টোরি মবিলিটি হাবে কেন্দ্রীভূত করা হবে। হাঁটা ও সাইকেল চলাচলের পথ বাড়ানো হবে এবং নিকটবর্তী গাইডেড বাস রুটের সঙ্গে সংযোগও শক্তিশালী করা হবে। পুরো প্রকল্পে জল সাশ্রয়ী প্রযুক্তি, টেকসই নকশা এবং পুরনো ভবন পুনঃব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

কেমব্রিজ, যা সিলিকন ফেন নামে পরিচিত, উচ্চপ্রযুক্তি ও গবেষণা খাতের কেন্দ্র। ক্রাউন এস্টেট আগামী ১৫ বছরে বিজ্ঞান ও ইনোভেশন খাতে ১.৫ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে, যার বড় অংশ কেমব্রিজে বাস্তবায়িত হবে।

নতুন মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়িত হলে স্থানীয় অর্থনীতি ও শ্রমবাজারে বড় পরিবর্তন আসবে। নতুন চাকরির পাশাপাশি আবাসন, রিটেইল, হসপিটালিটি ও গ্রিন স্পেস রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত কাজও সৃষ্টি হবে। আবাসনের বৈচিত্র্য বাড়ালে স্থানীয় কর্মী ও নতুন আগতদের জন্য বসবাস আরও সুবিধাজনক হবে।

পরামর্শ প্রক্রিয়া ১৩ নভেম্বর থেকে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। ২০২৬ সালের গ্রীষ্মে রূপরেখা পরিকল্পনার অনুমোদন জমা দেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। এরপর ধাপে ধাপে আলাদা ভবনের বিস্তারিত নকশা ও নির্মাণ কার্য শুরু হবে। পুরো প্রকল্পের সময়কাল ১২–১৮ বছর।

প্রকল্প বাস্তবায়নে পরিবেশগত প্রভাব, স্থানীয় অবকাঠামো, স্কুল-চিকিৎসা সেবা, পরিবহন চাপ ও সামাজিক অন্তর্ভুক্তির মতো চ্যালেঞ্জ রয়েছে। টেকসই নকশা এবং ধাপে ধাপে নির্মাণ-পরিকল্পনা যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হওয়াই প্রকল্পের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।

দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা সফল হলে কেমব্রিজ বিজনেস পার্ক শুধু একটি ব্যবসায়িক কেন্দ্র নয়—বরং একটি উদ্ভাবন চালিত, আবাসন-বান্ধব, টেকসই ও আধুনিক শহুরে এলাকায় রূপ নেবে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও কমিউনিটির মিলনেই গড়ে উঠবে কেমব্রিজের পরবর্তী প্রজন্মের নগর পরিবেশ।

সূত্রঃ ক্যাম্ব্রিজ ইন্ডিপেন্ডেন্ট

এম.কে

আরো পড়ুন

ব্রিটেনে গির্জাকে ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড ‘জরিমানা’

বেপরোয়া গাড়ি চালানোয় মৃত্যু, ব্রিটিশ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

অনলাইন ডেস্ক

যুক্তরাজ্যে বিদেশি কেয়ার কর্মী ভিসা বন্ধে আশঙ্কায় রিফর্ম পার্টির কাউন্সিল নেতা