পোষা প্রাণীর খাবারের জন্য নির্ধারিত মাংস সাধারণ ক্রেতাদের কাছে বিক্রির ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার দায়ে দুই ব্যক্তিকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দীর্ঘ তদন্ত ও বিচার শেষে এই রায় ঘোষণা করা হয়।
আদালতে প্রমাণিত হয়েছে, অ্যান্থনি ফিয়ার (৬৩) অনুপযুক্ত মাংস সরবরাহ করতেন আজার ইরশাদকে (৪০), যিনি দক্ষিণ লন্ডনে একটি কাটিং রুম চালাতেন। স্থানীয় বাসিন্দারা পচা মাংসের দুর্গন্ধ নিয়ে অভিযোগ জানানোর পর বিষয়টি তদন্তে আসে। অভিযোগে জানা যায়, ওই মাংস ধ্বংস করার কথা ছিল বা পোষা প্রাণীর খাবারে ব্যবহারের কথা ছিল, কিন্তু তা মানুষের খাওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছিল।
১২ সপ্তাহব্যাপী বিচার শেষে ইননার লন্ডন ক্রাউন কোর্ট ফিয়ারকে সাড়ে তিন বছরের জেল দেন এবং ছয় বছরের জন্য কোম্পানি পরিচালনার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। অন্যদিকে ইরশাদকে ৩৫ মাসের জেল দেওয়া হয়। ইরশাদকে আরও নিষিদ্ধ করা হয়েছে খাদ্য ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হওয়া থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত।
তদন্তে বেরিয়ে আসে, ২০২০ সালে ওয়ালওর্থ রোডের একটি দোকান থেকে পচা মাংসের গন্ধ ছড়ানোর অভিযোগের ভিত্তিতে ট্রেডিং স্ট্যান্ডার্ডস কর্মকর্তারা অভিযান চালান। সেখানে বাইরে রাখা কন্টেইনারে মাংসের ছবি স্থানীয়রা তুলেছিলেন। পরে ইস্ট স্ট্রিটে একটি গোপন অবৈধ কাটিং শপে অভিযান চালিয়ে দেখা যায়, কর্মীরা দূষিত কাঁচা মুরগি টুকরো করছিলেন বিক্রির জন্য।
সেখান থেকে উদ্ধার হয় ১.৯ টন পশুর উপজাত, যার মধ্যে ছিল পুরো মুরগি, কাটা মুরগি, ভেড়ার অণ্ডকোষ ও বিফ বার্গার। এগুলো সবই অনুপযুক্তভাবে সংরক্ষিত ছিল এবং ফিয়ারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত। উল্লেখ্য, তার প্রতিষ্ঠান মূলত পশুর উপজাত সংগ্রহ করে পোষা প্রাণীর খাদ্য উৎপাদনকারীদের সরবরাহের চুক্তিবদ্ধ ছিল।
বিচারক নোয়েল লুকাস কেসি রায়ে বলেন, “ফিয়ার একজন লোভী মানুষ, যিনি দ্রুত লাভের আশায় ভোক্তাদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছেন। নিছক লোভ ও ঔদ্ধত্য ছাড়া তার অপরাধের অন্য কোনো প্রেরণা ছিল না।”
এ মামলায় আরও কয়েকজন অভিযুক্তের সাজা হয়েছে। ফিয়ারের কোম্পানির ম্যানেজার মার্ক হুপারকে দুই বছরের স্থগিত সাজা ও ২০০ ঘণ্টা বিনা বেতনের কাজের আদেশ দেওয়া হয়। আলী আফজালকে দেওয়া হয় ছয় মাসের স্থগিত সাজা, ১৫০ ঘণ্টা বিনা বেতনের কাজ এবং ৫,০০০ পাউন্ড জরিমানা।
ন্যাশনাল ফুড ক্রাইম ইউনিটের প্রধান অ্যান্ড্রু কুইন বলেন, “এই ঘটনা প্রমাণ করে খাদ্য নিরাপত্তা বিধি উপেক্ষা করে যখন মানুষকে অনুপযুক্ত মাংস খাওয়ানোর চেষ্টা হয়, তখন তা ভোক্তাদের জন্য গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করে।”
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে
২৭ আগস্ট ২০২৫