TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

খালেদা জিয়ার বাসার সামনে বালুর ট্রাকঃ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাসভবনের সামনে ২০১৩ সালে বালুর ট্রাক রাখার ঘটনায় রাজধানীর গুলশান থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। ট্রাক রাখা ও অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি ও নাগরিক অধিকার হরণের দায়ে দায়ের করা মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর গুলশান থানায় মামলাটি দায়ের করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) লতিফ হল শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য শরিফুল ইসলাম শাওন।

মামলার এজহারে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে এক নম্বর এবং দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে। এছাড়া, এ মামলার উল্লেখযোগ্য আসামির মধ্যে রয়েছেন সাবেক আইজিপি এ কে এম শহিদুল হক, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া ও সাবেক এসবি প্রধান মনিরুল ইসলাম।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অবৈধ নির্বাচন কমিশন দ্বারা সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দেয় তখনকার আ.লীগ সরকার। নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে বিএনপি আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলনের রূপরেখা হিসেবে ২৯ ডিসেম্বর ২০১৩ মার্চ অব ডেমোক্র্যাসি বিএনপি সমাবেশের ডাক দেন। যেখানে খালেদা জিয়ার বক্তব্য দেয়ার কথা। এর আগেই ২৮ ডিসেম্বর দিবাগত গভীর রাতে বালু ভর্তি পাঁচ-ছয়টি ট্রাক বেগম খালেদা জিয়ার ফিরোজা বাসভবনের গেটের সামনেসহ আশপাশে অবৈধভাবে এলোমেলো করে রেখে উল্লিখিত আসামিরা রাস্তার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান-২ এর ফিরোজা বাসভবনের গেট বন্ধ করে দেয়। বেগম খালেদা জিয়া যেন সমাবেশে যোগ দিতে না পারে সে জন্য রাস্তার উপরে ত্রাস সৃষ্টি করে গণতন্ত্র অধিকারকে হরণ করে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।

এতে উল্লেখ করা হয়, মামলার আসামিরা গোপন বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেন, ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর যেকোনোভাবে খালেদা জিয়াকে বাসা থেকে বের হয়ে সমাবেশে অংশ নিতে দেয়া যাবে না। পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আসামিরা মারণাস্ত্র, লাঠি, বন্দুক, টিয়ারশেলসহ যুদ্ধক্ষেত্রের মতো সজ্জিত হয়ে গুলশান-১ ও ২, বনানী, বারিধারা ডিওএইচএস ও আমেরিকান দূতাবাসসহ আশপাশের এলাকায় র‌্যাব, পুলিশ ও ডিবিসহ ২৮ ডিসেম্বর থেকে অবস্থান নেয়। সঙ্গে অস্ত্রের মহড়া দেয় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। সে সময় আশপাশের বিএনপি নেতাকর্মীদের মারধর ও গণহারে গ্রেফতার করা হয়।

এজাহারে আরো বলা হয়, ২৯ ডিসেম্বর ‘মার্চ ফর ডেমোক্র্যাসির’ ডাক দেয়ার পর খালেদা জিয়ার বাসার সামনে বালুর ট্রাক এনে রাখা হয়েছিল। এভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ রেখে ২০১৪ সালে একটি একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। বলা হয়, ওই ঘটনার পরই কার্যত দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে ফেলে তারা। ওই সময় পেপার স্প্রে প্রয়োগ করে খালেদা জিয়াকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন বাদি।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন ঢাকা রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, সাবেক ডিআইজি মো. ইকবাল বাহার, ডিএমপির সাবেক কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, ডিআইজি মীর রেজাউল আলম, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি খন্দকার লুৎফুল কবির, অতিরিক্ত ডিআইজি আয়েশা সিদ্দীকা, সাবেক ডিআইজি শেখ নাজমুল আলম, গুলশান জোনের সাবেক এসি মো. নুরুল আলম, তৎকালীন গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, এম এ কাদের খান (সহ-সভাপতি, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ), গুলশান থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান হোসেন, বনানী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম জসিম উদ্দিন, বশির আহমেদ (সহ-সভাপতি, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ) ফরটিস গ্রুপ ও সারা অ্যান্ড রিসোর্টের মালিক শাহাদাত হোসেন, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নাসির ওরফে কালা নাছির, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, ৩৭ নম্বর ওয়ার্ড সাবেক কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর জাকির হোসেন বাবুল, ১৯ নম্বর ওয়ার্ড সাবেক কাউন্সিলর মফিজুর রহমান, ৪২ নম্বর ওয়ার্ড সাবেক কাউন্সিলর আইয়ুব আনসার মিন্টু, ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ঢালী, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড সাবেক কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম বাসেক, বাড্ডা থানা যুবলীগের আহবায়ক কাওসার আহম্মেদ ওরফে গলাকাটা কাওসার, ২১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মহারাজ, ২১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি জাকির হোসেন ও সহ-সম্পাদক কেন্দ্রীয় উপকমিটি আওয়ামী লীগ সাজ্জাদ হোসেন।

এম.কে
০৫ অক্টোবর ২০২৪

আরো পড়ুন

মুগ্ধর মৃত্যুর বর্ণনা দিয়ে যা লিখল মার্কিন গণমাধ্যম

পাপনের পদত্যাগ, বিসিবির নতুন সভাপতি ফারুক আহমেদ

পেঁয়াজ রপ্তানির শর্ত শিথিল করল ভারত