TV3 BANGLA
ফিচার

গাছই এখন খনিঃ বিরল মৃত্তিকা ধাতু তৈরি করে ‘জাদুকরি’ ফার্ন

বিরল মৃত্তিকা ধাতু আহরণের প্রচলিত পদ্ধতিকে সম্পূর্ণ বদলে দিতে পারে এমন এক বিস্ময়কর আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। Blechnum orientale নামের সাধারণ চেহারার ফার্ন গাছটি মাটি থেকে রেয়ার আর্থ এলিমেন্ট শুষে নিয়ে নিজের শরীরেই সেগুলোকে ক্রিস্টালে রূপান্তর করছে। গবেষকদের মতে, এই ক্ষমতা উদ্ভিদ জগতে নজিরবিহীন।

 

সম্প্রতি চাইনিজ একাডেমি অব সায়েন্সেসের ভূ-বিজ্ঞানী লিউকিং হে ও তার গবেষণা দল জানিয়েছেন, ফার্নটি নিওডিমিয়াম, ল্যান্থানাম ও সেরিয়ামের মতো আধুনিক প্রযুক্তির অপরিহার্য ধাতু নিজের টিস্যুতে জমা করে রাখে। শুধু জমিয়েই রাখে না, সেগুলোকে মোনাজাইট নামের ক্ষুদ্র ক্রিস্টালে রূপান্তরিত করে, যা সাধারণত ভূগর্ভে প্রচণ্ড তাপ ও চাপের মাধ্যমে তৈরি হয়।

বিজ্ঞানীরা অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে দেখেছেন, গাছটি তার পাতার ভেতর এক ধরনের ‘রাসায়নিক বাগান’ তৈরি করছে—যেখানে দামি সব রেয়ার আর্থ ধাতু সাজানো থাকে দানাবৎ কাঠামোয়। কোনো ল্যাবরেটরি বা কৃত্রিম পরিবেশ ছাড়াই, সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে গাছটি এই জটিল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছে, যা খনিজবিদ্যার প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।

রেয়ার আর্থ এলিমেন্ট ছাড়া স্মার্টফোন, কম্পিউটার, ব্রডব্যান্ড কেবল, বৈদ্যুতিক মোটর কিংবা বিশাল উইন্ড টারবাইন চলতেই পারে না। কিন্তু মাটি থেকে এই ধাতুগুলো আহরণ করতে খনন যেমন ব্যয়বহুল, তেমনই পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। তাই এই আবিষ্কারকে বিজ্ঞানীরা সম্ভাব্য ‘সবুজ বিপ্লব’ হিসেবে দেখছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ফার্ন গাছের অনন্য ক্ষমতা ফাইটোমাইনিং প্রযুক্তিতে এক নতুন যুগের সূচনা করতে পারে—যেখানে ভারী যন্ত্র নয়, বিশাল সবুজ বাগানই হয়ে উঠবে খনিজ আহরণের উৎস। পরিবেশের কোনো ক্ষতি ছাড়াই রেয়ার আর্থ সংগ্রহের এই পদ্ধতি ভবিষ্যতের গ্রিন এনার্জি ও টেকনোলজি সেক্টরে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।

গবেষণা দল জানিয়েছে, এখন লক্ষ্য হলো গাছটির সম্ভাবনা আরও গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা এবং বড় স্কেলে রেয়ার আর্থ সংগ্রহের উপযোগী পদ্ধতি তৈরি করা। সফল হলে, খনিজ আহরণে পৃথিবী প্রথমবারের মতো খনি নয়, উদ্ভিদের ওপরই নির্ভর করতে পারে।

সূত্রঃ সায়েন্স এলার্ট

এম.কে

আরো পড়ুন

গুগলের সার্ভার ডাউন, জিমেইল-ইউটিউব সেবায় সমস্যা

ফেসবুক প্রোফাইল থেকে সরে যাচ্ছে ধর্ম-রাজনৈতিক বিশ্বাস

অনলাইন ডেস্ক

ফ্রান্সের অ্যামবার গ্রামে বাড়ির দাম মাত্র ৮৬ পেনি! জনসংখ্যা বাড়াতে অভিনব উদ্যোগ