বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার জন্য বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম পোশাকের ব্র্যান্ড লিভাইসকে একটি আন্তর্জাতিক চুক্তিতে আবদ্ধ হতে চাপ প্রয়োগের জন্য প্রচারণা চালাচ্ছেন অধিকারকর্মীরা।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ট্রাজেডির পরিপ্রেক্ষিতে, ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলি একটি আন্তর্জাতিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে, যা বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে নিরাপত্তার জন্য অর্থ প্রদানে তাদের আইনত বাধ্য করেছে। অনেক শীর্ষস্থানীয় পোশাক ব্র্যান্ড এই চুক্তিতে সাইন করেছে এবং পরবর্তী সময়ে চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছে।
২০২১ সালে চুক্তির বিষয়বস্তু আরও সম্প্রসারণ করা হয় যা বাংলাদেশ ও পাকিস্তান দুই দেশের কারখানাগুলোর জন্য উপযুক্ত।
কর্মীদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিধানগুলির মধ্যে অতিরিক্ত ওভারটাইম, মাতৃত্বকালীন ছুটি, নিয়মিত বিরতি, পরিষ্কার পানি, বাথরুমের অ্যাক্সেস, কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এসব বিধান লঙ্ঘন হলে কর্মীরা গোপনে অভিযোগ জানা পারবে সেই সুযোগও দেওয়া হয়েছে।
অ্যাডিডাস, আমেরিকান ঈগল, ফ্রুট অফ দ্য লুম, এইচএন্ডএম, জারা, হুগো বস, পুমা, প্রাইমার্ক এবং পিভিএইচসহ ১৭০টিরও বেশি ফ্যাশন ব্র্যান্ড এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।
এবার মার্কিন অলাভজনক সংস্থা রিমেকের সাথে বাংলাদেশের সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, পাকিস্তানের লেবার এডুকেশন ফাউন্ডেশন, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্কার ইউনাইটেড এবং নেদারল্যান্ডের ক্লিন ক্লোথ ক্যাম্পেইন একজোট হয়ে এই চুক্তিতে আবদ্ধ হতে লিভাইসকে চাপ দিচ্ছে।
রিমেকের প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও আয়েশা বারেনব্ল্যাট বলেন, “সদ্য সম্প্রসারিত আন্তর্জাতিক চুক্তি বিল্ডিং নিরাপত্তা ছাড়াও অনেক দিক কভাব করে। সুতরাং এটি সত্যিই কর্মীদের জন্য একটি লাইফলাইন এবং কর্মক্ষেত্রের উদ্বেগ শেয়ার করার একটি উপায়।”
তিনি জানান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে লিভাইসের ২০টিরও বেশি কারখানা রয়েছে, যেখানে শ্রমিকরা উপেক্ষিত হচ্ছে।
প্রচারণার অংশ হিসেবে, কর্মীরা লিভাইসের পরিচালনা পর্ষদে শত শত ইমেল-চিঠি পাঠিয়েছেন এবং এই মাসের শুরুতে শিকাগো, ফিলাডেলফিয়া, ওয়াশিংটন ডিসি, লন্ডন, দিল্লি, বেঙ্গালুরু, ঢাকা এবং অন্যান্য কয়েকটি শহরে লেভির দোকানে কর্মসূচি করেছেন।
লিভাইসের জন্য কাজ করা বাংলাদেশের একজন কর্মী পরিচয় গোপন রেখে অতিরিক্ত গরম, ম্যানেজারের দুর্ব্যবহার ও জোর করে ওভার টাইম করানোর অভিযোগ জানিয়েছেন।
একজন মেশিন অপারেটর বলেন, “আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা তেমন নেই। আমাদের মেশিন গার্ড দেওয়া হয় না। আমরা পরিষ্কার বা ঠাণ্ডা পানি পাই না। এখানে খুবই গরম। গরমে মানুষ প্রায়ই অজ্ঞান হয়ে যায়। আমাদের চিকিৎসা সেবারও কোনো অ্যাক্সেস নেই।”
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান