চায়ে ভালো স্বাদ পেতে এক মার্কিন গবেষক লবণ মেশাতে বলায় ব্যাপক আলোচনা হয়েছে যুক্তরাজ্যে; বিষয়টি নিয়ে পরে মার্কিন দূতাবাসও কথা বলেছে।
ভালো এক কাপ চা তৈরির জাদু ভালোভাবেই জানেন ব্রিটিশরা; প্রতিদিন প্রায় ১০ কোটি কাপ চা তারা পান করেন।
কিন্তু যুক্তরাজ্যের জাতীয় এ পানীয়র স্বাদ কীভাবে আরও নিখুঁত করে তোলা যায়, সেই উপায়ের কথা বলে ‘হইচই’ তুলেছেন মার্কিন এক গবেষক।
অধ্যাপক মিশেল ফ্রাঙ্কল তার এক গবেষণার বরাতে বলছেন, অন্যান্য উপাদানের সঙ্গে একটু লবণ যোগ করে নিলেই নিখুঁত চায়ের স্বাদ পাওয়া যাবে। কিন্তু ব্রিটিশরা এর যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছেন না।
বিবিসি লিখেছে, বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়েছে চা-প্রেমী ব্রিটিশদের মধ্যে। এমনকি মার্কিন দূতাবাসও কূটনৈতিক পর্যায়ে কথাবার্তা বলছে।
যুক্তরাজ্যে মার্কিন দূতাবাস এক্সে লিখেছে, “আমরা যুক্তরাজ্যের মানুষদের নিশ্চিত করতে চাই, ব্রিটেনের জাতীয় পানীয়তে লবণ যোগ করার অকল্পনীয় ধারণা মার্কিন সরকারী নীতি নয়, আর সেটি কখনো হবেও না।”
চা নিয়ে আটলান্টিকের দুই পাড়ের উভয় দেশে বিতর্ক বা আলোচনা এই প্রথম নয়। ১৭৭৩ সালে ঔপনিবেশিক ম্যাসাচুসেটসের বস্টনে ব্রিটিশ করের প্রতিবাদে বন্দরে ৩০০ বাক্সভর্তি চা ঢেলে প্রতিবাদ হয়েছিল, যা আমেরিকান বিপ্লবকে ত্বরান্বিত করেছিল।
চায়ে লবণ যোগ করার কথা নিয়ে মার্কিন দূতাবাসের বিবৃতির পর গবেষক ফ্র্যাঙ্কল বিবিসিকে বলেন, “অবশ্যই আমি কূটনৈতিক কোনো ঘটনা ঘটাতে চাইনি।”
পেনসিলভ্যানিয়ার ব্রাইন মাওর কলেজের রসায়ন বিভাগের এই অধ্যাপক বলেন, “আমার ইমেইল ভরে গেছে। ঘুম থেকে উঠার পর চায়ে লবণ যোগ করা নিয়ে এত বেশি মানুষকে যে কথা বলতে দেখব, সেটি কল্পনাও করিনি।”
বিবিসি জানিয়েছে, চায়ে লবণ যোগ করার ধারণাটি নতুন নয়। অষ্টম শতাব্দীর চীনা পাণ্ডুলিপিতেও এ উপাদানের কথা বলা হয়েছে। ফলে অধ্যাপক ফ্রাঙ্কল মূলত তার চায়ের রেসিপি নিখুঁত করার ব্যাপারেই বিশ্লেষণ করছিলেন।
তিনি বলেন, “নতুন বিষয়টি হল রসায়নবিদ হিসেবে এই উপাদান নিয়ে আমাদের বোঝাপড়া। এক চিমটি লবণ চায়ের তিক্ততা কমাতে পারে। এটি অবশ্য চায়ে চিনি যোগ করার মত নয়। আমি মনে করি, লোকজন চায়ে লবণের স্বাদ নিতে পারবে কিনা, সেটি নিয়ে তারা শঙ্কিত।”
তবে ফ্রাঙ্কল খোলা মন নিয়ে চা-প্রেমী ব্রিটিশদের তার গবেষণা নিয়ে পূর্বধারণা করার অনুরোধ জানিয়েছেন। বিষয়টি তিনি তার নতুন বই ‘স্টিপড: দ্য কেমিস্ট্রি অব টি’-তে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। রয়্যাল সোসাইটি অব কেমিস্ট্রি বইটি প্রকাশ করছে।
ফ্রাঙ্কল বলেন, “এটা পরীক্ষার জন্য ঠিক আছে। আমার কিচেনেও এটা নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছি। আপনার ভেতরের বিজ্ঞানমনস্কতাকে জাগিয়ে তুলুন।”
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে
২৯ জানুয়ারি ২০২৪