TV3 BANGLA
আন্তর্জাতিক

চ্যানেলে সীমান্ত নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে হবে যুক্তরাজ্যকে: ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রোতাইয়ো বলেছেন, চ্যানেলের অভিবাসন সংকট নিয়ে যুক্তরাজ্যের সাথে দর কষাকষির জন্য তিনি প্রস্তুত। চলতি বছরের শুরু থেকে ফরাসি উপকূল থেকে চ্যানেল পাড়ি দিয়ে অন্তত ৭২ জন অভিবাসী মারা গেছেন।

আগামী ৯ ডিসেম্বর ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়েভেট কুপারের সাথে একটি বৈঠকে অংশ নিবেন রক্ষণশীল ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রোতাইয়ো। নেদারল্যান্ডস, জার্মানি এবং আয়ারল্যান্ডের প্রতিনিধিরাও ওই বৈঠকে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।

সম্প্রতি উত্তর ফ্রান্সের কালে উপকূল সফর শেষে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, চ্যানেলের সীমান্ত পাহার দেওয়ার পুরো দায়িত্ব ফ্রান্সের না। যুক্তরাজ্যের উচিৎ তার দায়িত্ব বুঝে নেওয়া। ব্রেক্সিটের কারণে ব্রিটিশ সররকারের সাথে ফ্রান্সের অভিবাসন বিষয়ক সকল সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গেছে।

ব্রুনো রোতাইয়ো আরো যোগ করেন, “ব্রিটিশ সরকারের উচিত অর্থনৈতিক, পারিবারিক পুনর্মিলনসহ আইনি অভিবাসনের পথ খুলে দেওয়া। এখানে একটি স্থবিরতা রয়েছে। আমি আশা করছি যে আমরা আগের অবস্থানে পৌঁছাতে পারব না। তবে আমাদেরকে অবশ্যই এই সম্পর্ক পরিবর্তন করতে হবে।”

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আমাদের উদ্যোগ হবে সোজা সাপ্টা। যদি একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এসব ব্যাপার অগ্রগতি না করে আমরা লন্ডন এবং প্যারিসের মধ্যে স্বাক্ষরিত লো টোকে চুক্তি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিতে পারি।”

উত্তর ফ্রান্স সফরকালের ব্রুনো রোতাইয়োর সাথে ছিলেন ওই অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট রাজনীতিবিদ জাভিয়ের বেরতো। তিনি বলেন, “এ অঞ্চলে সংগঠিত দুর্ঘটনার পেছনে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ এবং পাচারকারীরা জড়িত।”

২০০২ সালের শেষ দিকে উত্তর ফ্রান্সের সঙ্গাতে একটি সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রটি বন্ধ হওয়ার পরপরই ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে টোকে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যাতে করে অনিয়মিত বিদেশিদের চ্যানেল অতিক্রম করে যুক্তরাজ্যে প্রবেশে বাধা দেওয়া যায়।

২০০৩ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ২৫তম ফ্রাঙ্কো-ব্রিটিশ সম্মেলনের সময় এই চুক্তিটি সম্পন্ন হয়েছিল। এই চুক্তির ফলে চ্যানেলে অভিবাসন সংকটের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় উত্তর ফ্রান্সের কালে শহর। যেটি ইতিপূর্বে ছিল ইংরেজ উপকূলের বন্দর শহর ডোভার। চুক্তির কারণে “ব্রিটিশ সীমান্ত সরিয়ে” কালেতে নিয়ে আসা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন বহু ফরাসি রাজনীতিবিদ।

লেবার পার্টি নেতৃত্বাধীন ব্রিটেনের নতুন সরকারের কাছে নিয়মিত এবং অনিয়মিত অভিবাসনের উভয় দিকই সংবেদনশীল। গেল বৃহস্পতিবার সরকার অভিবাসীদের আগমন কমানোর জন্য একটি ‘পরিকল্পনা’ ঘোষণা করেছে।

কর্তৃপক্ষ বিদেশি কর্মী নিয়োগের শর্ত কঠোর করেছে এবং ভিসা বিধি লঙ্ঘনকারী সংস্থাগুলোর জন্য নিষেধাজ্ঞার নিয়মিত চালু করেছে।

অপরদিকে ফরাসি দিক থেকে ব্রুনো রোতাইয়ো উপকূলে পুলিশকে শক্তিশালীকরণ, মন্ত্রণালয়ে অভিবাসন বিষয়ক একজন বিশেষ প্রতিনিধি নিয়োগ এবং উপকূলে অনিয়মিত অভিবাসন ঠেকাতে একটি মিশন চালুর ঘোষণা দিয়েছেন।

উত্তর ফ্রান্সের কালে এবং ডানকের্ক অঞ্চলের জন্য ২০০ জন অতিরিক্ত লোক মোতায়েন করা হবে বলে নিশ্চিত করেছে অফিস ফর কমব‍্যাটিং স্মাগলিং অব মাইগ্রেন্টস (অল্টিম) এবং ফরাসি সীমান্ত পুলিশ (পিএএফ)। যাতে করে স্থানীয় পুলিশ স্টেশনগুলোকে শক্তিশালী করে বাস এবং ট্রেনগুলোতে নিরাপত্তা চেক করা যায়।

এর আগে ফ্রান্সের উত্তর অঞ্চলের বিভিন্ন শহরের মেয়ররা যুক্তরাজ্যের সাথে ফ্রান্সের টোকে চুক্তি পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানিয়েছিলেন।

সূত্রঃ এএফপি

এম.কে
০৪ ডিসেম্বর ২০২৪

আরো পড়ুন

গভীর হতাশায় ট্রাম্পকে ভোট দেওয়া মুসলিমরা

গ্রিসে নতুন নিয়ম, স্কুলে মোবাইল ব্যবহার করলে শাস্তি

ইসরায়েলকে সমর্থন দেওয়ায় কোকা-কোলা নিষিদ্ধ করল তুরস্ক