বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাজনৈতিক মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর প্রবণতা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। চলতি বছরের জুন মাসে মোট ৩২৪টি ভুয়া বা বিভ্রান্তিকর তথ্যের ঘটনা শনাক্ত করেছে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)। এর মধ্যে শুধু রাজনৈতিক ভুয়া তথ্যের সংখ্যা ২৫৩টি, যা রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে জনমত প্রভাবিত করার প্রচেষ্টার স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়।
বুধবার (৩০ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানায় গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিজিএস।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জুন মাসে বিনোদন সংশ্লিষ্ট বিভ্রান্তিকর তথ্যের সংখ্যা ছিল ২৪টি। ধর্মীয় বিষয়ে ১৯টি, অনলাইন হোক্স ১৮টি, কূটনৈতিক বিষয়ে ৫টি, অর্থনৈতিক বিষয়ে ৪টি এবং পরিবেশ-সম্পর্কিত ১টি ভুয়া তথ্য শনাক্ত হয়েছে।
প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, এসব বিভ্রান্তিকর বা মিথ্যা তথ্যের প্রধান লক্ষ্য ছিল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক নেতাদের নিয়ে প্রকাশিত এমন ভুয়া তথ্যের সংখ্যা ছিল ১২৪টি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিয়ে ছড়ানো হয় ৪৮টি তথ্য। এ ছাড়া সেলিব্রেটি নিয়ে ২৫টি, ধর্মীয় বিষয়ক ১৬টি, রাজনৈতিক দলকে কেন্দ্র করে ১৩টি, সরকারি প্রতিষ্ঠান নিয়ে ১৬টি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ৬টি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ২টি এবং ধর্মীয় ব্যক্তিকে নিয়ে ১টি ভুয়া তথ্য ছড়ানো হয়।
তবে ৭৩টি ঘটনাকে ‘অনির্দিষ্ট’ শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে, যেখানে মিথ্যা তথ্য কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য করে নয়, বরং সার্বিকভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে ছড়ানো হয়।
সিজিএস-এর তথ্যমতে, এসব মিথ্যা বা ভুয়া তথ্য ছড়ানোর প্রধান মাধ্যম ছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। ৩২৪টি ঘটনার মধ্যে ৩১৬টি ঘটেছে ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, থ্রেডস ও এক্স (পূর্বের টুইটার)-এর মতো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে। মাত্র ৮টি ভুয়া তথ্য অনলাইন নিউজ পোর্টালের মাধ্যমে ছড়ানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই পরিস্থিতি দেশের ডিজিটাল শিক্ষার অভাব এবং গণমাধ্যম সচেতনতার ঘাটতির বিষয়টি স্পষ্ট করে তোলে। এমন প্রেক্ষাপটে তথ্য যাচাই এবং সচেতনতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
উল্লেখ্য, সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ ২০২৪ সালের নভেম্বর মাস থেকে দেশের ভুয়া তথ্য পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রতি মাসেই নিয়মিতভাবে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে।
সূত্রঃ সিজিএস
এম.কে
৩১ জুলাই ২০২৫