TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

টিউলিপকে নিয়ে উত্তপ্ত ব্রিটিশ পার্লামেন্ট, উঠলো ড. ইউনূসের নামও

যুক্তরাজ্যের সিটি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) পদত্যাগ করেছেন। তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে। টিউলিপের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ, যেমন শেখ হাসিনা ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির কাছ থেকে ফ্ল্যাট উপহার গ্রহণ এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ, সম্প্রতি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। এসব বিতর্কের মুখে তিনি মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে পদত্যাগের পরও তার বিরুদ্ধে সমালোচনার ঢেউ থামেনি।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ব্রিটিশ পার্লামেন্টে টিউলিপ সিদ্দিককে নিয়ে উত্তপ্ত আলোচনা হয়েছে।

এসময় টিউলিপের বিরুদ্ধে করা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অভিযোগের কথা উল্লেখ করেন দেশটির বিরোধী দলীয় নেত্রী কেমি বাডেনক। তিনি বলেন, শেয়ার বাজারে যখন অস্থিরতা চলছে তখন প্রধানমন্ত্রী সাবেক সিটি মিনিস্টারের বিরুদ্ধে ওঠা সমালোচনা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী গতকাল বলেন, তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু (টিউলিপ) পদত্যাগ করায় তিনি ব্যথিত। তিনি এমন একজনের জন্য ব্যথিত যিনি দুর্নীতি বিরোধী মন্ত্রী ছিলেন, কিন্তু নিজেই দুর্নীতির জন্য তদন্তের অধীনে আছেন।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সাবেক সিটি মিনিস্টার উপহার হিসেবে লন্ডনের যে ফ্ল্যাট পেয়েছিলেন সেটি হয়ত ডাকাতি করা অর্থের মাধ্যমে গড়া। তো প্রধানমন্ত্রী কী বাংলাদেশকে এই অভিযোগ তদন্তের জন্য আমাদের জাতীয় তদন্ত সংস্থার সহযোগিতার প্রস্তাব দেবেন। যেন জানা যায়, লন্ডনে যেসব সম্পদ চুরির অর্থে কেনা হয়েছে সেগুলো সঠিকভাবে তদন্ত করা যাবে।

এমন প্রশ্নে কিছুটা উত্তপ্ত হয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, “স্পিকার সাবেক সিটি মিনিস্টার নিজেই তার বিরুদ্ধে তদন্তের আহ্বান জানান। এতে জানা গেছে তিনি মন্ত্রিত্বের কোনো নীতি ভঙ্গ করেননি। তার বিরুদ্ধে কোনো অসঙ্গতি পাওয়া যায়নি। তদন্তে তিনি পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন। গত সোমবার তিনি নিজের বিরুদ্ধে তদন্তের আহ্বান জানান। আমি এক সপ্তাহ পর গতকাল এটির প্রতিবেদন পাই।”

এরপর বিরোধী দল ও পুরোনো একটি তদন্তের কথা উল্লেখ করে স্টারমার বলেন, “কিন্তু টিউলিপের পদত্যাগের সঙ্গে ছায়া পররাষ্ট্রমন্ত্রীর তুলনা করলে দেখা যাচ্ছে, তিনি মন্ত্রী থাকাকালে নীতি ভঙ্গ করেছিলেন। তার বিরুদ্ধে যে প্রতিবেদন তৈরী করা হয়েছিল, সেটি পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছিল। উল্টো স্বাধীন তদন্তকারীকেই পদত্যাগ করতে হয়েছিল। কারণ তিনি মনে করেছিলেন তার কথাকে আমলে নেওয়া হচ্ছে না। অথচ ছায়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী তখন নেতার দায়িত্ব পালন করছিলেন। কী বিপরীত! ব্রিটিশ জনগণকে ধন্যবাদ তারা সাবেক সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়েছে।”

এরপর বিরোধী দলীয় নেত্রী কেমি বাডেনেক বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে তদন্তে সহায়তার প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি। কেয়ার স্টারমারকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, তিনি জেনেশুনে এক প্রতারককে যোগাযোগ সেক্রেটারি বানিয়েছিলেন। যিনি কয়েকদিন আগে পদত্যাগ করেছেন। মাত্র কয়েকদিন আগেও দুর্নীতি বিরোধীমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের ওপর তার পূর্ণ আস্থা ছিল। লজ্জা নিয়ে গতকাল পদত্যাগ করেছেন তিনিও।

এম.কে
১৬ জানুয়ারি ২০২৫

আরো পড়ুন

লন্ডনে ২৪ ঘণ্টায় ৩ খুন

অনলাইন ডেস্ক

যুক্তরাজ্যে মর্টগেজ চার্টার বাতিলের চিন্তা, বাড়ছে ঘর হারানোর শঙ্কা

ক্ষতিপূরণের ফাঁদে ব্রিটেনের মাদার অ্যান্ড বেবি হোমের বেঁচে থাকা ভুক্তভোগীরা