ভারতে ইলেকট্রনিক গাড়ি ঢুকতে যে চড়া শুল্ক দিতে হয়, তা এড়াতে টেসলা যদি সে দেশে কোনো কারখানা স্থাপন করে তবে তা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘ভারি অন্যায্য’ হবে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মঙ্গলবার তার এ সাক্ষাৎকারটি প্রচারিত হয়েছে। শন হেনিটির উপস্থাপনায় এই টক শো’তে ট্রাম্পের সঙ্গে টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্কও ছিলেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, গত সপ্তাহে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় তিনি ভারতে গাড়ি বিক্রিতে চড়া শুল্কের বিষয়টি উত্থাপন করেছেন।
দুই দেশ এখন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি বাণিজ্য চুক্তি করতে ও শুল্ক নিয়ে বিরোধ মিটিয়ে ফেলতে কাজ করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
টাটা মোটরসের মতো দেশীয় গাড়িনির্মাতা কোম্পানিগুলোর সুরক্ষায় বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম গাড়ির বাজার ভারত ইলেকট্রনিক গাড়ি আমদানিতে ১০০ শতাংশের কাছাকাছি শুল্ক নিয়ে আসছে। ভারতে ইলেকট্রনিক গাড়ির ব্যবহার এখনও অনেক কম, তা সত্ত্বেও টেসলার প্রধান নির্বাহী মাস্ক দীর্ঘদিন ধরেই এমন চড়া শুল্কের সমালোচনা করে আসছিলেন।
দক্ষিণ এশীয় দেশটিতে গাড়ি বিক্রি করা মাস্কের জন্য ‘অসম্ভব’ বলেই মনে করেন ট্রাম্প।
“বিশ্বের প্রতিটি দেশ আমাদের কাছ থেকে সুবিধা নিচ্ছে, শুল্কের মাধ্যমে তারা এটি করছে। উদাহরণস্বরূপ ভারত, সেখানে গাড়ি বিক্রি করা কার্যত অসম্ভব,” বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
শন হেনিটির অনুষ্ঠানে মাস্কও ভারতে গাড়ি বিক্রিতে চড়া শুল্কের বাধার কথা জানান।
গত বছরের মার্চে ভারত ইলেকট্রনিক গাড়ির ব্যাপারে নতুন যে নীতিমালা করেছে তাতে বলা হয়েছে, কোনো গাড়িনির্মাতা কোম্পানি যদি ভারতে অন্তত ৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করে এবং একটি কারখানা স্থাপন করে তাহলে তাদের গাড়ির আমদানি শুল্ক ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে।
এই সুবিধা নিতে টেসলা চেষ্টা করছে বলে অনুমান বিশ্লেষকদের।
রয়টার্স তাদের মঙ্গলবারের এক প্রতিবেদনে জানায়, টেসলা এরই মধ্যে ভারতের নয়া দিল্লি ও মুম্বাইতে দুটি শোরুমের স্থান ঠিক করে ফেলেছে এবং মধ্যম স্তরের ১৩টি পদে লোক চেয়ে বিজ্ঞাপনও দিয়েছে।
টেসলা এখনও ভারতে গাড়ি নির্মাণ শুরু করেনি, কিন্তু মাস্ক যদি সেখানে কারখানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে তা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘অন্যায্য’ হবে, বলেছেন ট্রাম্প।
“এখন তিনি যদি ভারতে কারখানা বানান, ঠিক আছে, কিন্তু তা আমাদের জন্য অন্যায্য হবে। ভারি অন্যায্য হবে,” সাক্ষাৎকারে বলেন ট্রাম্প।
এই প্রসঙ্গে রয়টার্স ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্তব্য চাইলেও তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া পায়নি।
আমদানি করা মার্কিন পণ্যে যেসব দেশ চড়া শুল্ক দিয়ে রেখেছে, তাদের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপে ট্রাম্পের যে পরিকল্পনা তা যুক্তরাষ্ট্রের শত্রু-মিত্রসহ সবাইকে বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধে ঠেলে দিতে পারে বলে অনেকেই আশঙ্কা করছেন।
সূত্রঃ রয়টার্স
এম.কে
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫