TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

ডেনমার্কের মতো কঠোর ইমিগ্রেশন নীতির পথে যুক্তরাজ্যঃ লেবার দলে বিভাজন

যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ ইউরোপের অন্যতম কঠোর অভিবাসন ব্যবস্থা হিসেবে পরিচিত ডেনমার্কের মডেল অনুসরণে নতুন অভিবাসন নীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছেন। দ্য গার্ডিয়ান ও বিবিসি জানায়, চলতি মাসের শেষ দিকে এই নীতিগত পরিবর্তনের ঘোষণা আসবে। গত মাসে মাহমুদের নির্দেশে হোম অফিস কর্মকর্তাদের একটি দল ডেনমার্ক সফর করে দেশটির সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ও আশ্রয় নীতিমালা পর্যবেক্ষণ করেছে।

ডেনমার্কের নীতিতে পরিবারের পুনর্মিলন এবং শরণার্থীদের অস্থায়ী অবস্থানের ওপর কঠোর শর্ত আরোপ করা হয়েছে। দেশটি “নিরাপদ অঞ্চল” সংজ্ঞায় নিজস্ব মানদণ্ড ব্যবহার করে, যা জাতিসংঘ বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবস্থানের সঙ্গে নাও মিলতে পারে। ২০২২ সালে তারা সিরিয়ার দামেস্ক অঞ্চলকে নিরাপদ ঘোষণা করে প্রায় ১,২০০ শরণার্থীর বসবাসের অনুমতি নবায়ন না করে বিতর্ক সৃষ্টি করে।
যুক্তরাজ্যের হোম অফিস কর্মকর্তারা ডেনমার্কের পারিবারিক পুনর্মিলন নীতিতে বিশেষ আগ্রহ দেখিয়েছেন। ওই নিয়মে উভয় সঙ্গীর বয়স অন্তত ২৪ বছর হতে হয়, ডেনমার্কে থাকা সঙ্গীকে তিন বছর ধরে সরকারি ভাতা না নেওয়ার প্রমাণ দিতে হয় এবং একটি আর্থিক গ্যারান্টি প্রদান করতে হয়। পাশাপাশি উভয়কেই ডেনিশ ভাষা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। এছাড়া যেসব এলাকা সরকার “প্যারালেল সোসাইটি” হিসেবে চিহ্নিত করেছে — যেখানে অর্ধেকের বেশি বাসিন্দা অ-পশ্চিমা পটভূমির — সেখানকার বাসিন্দারা পরিবার পুনর্মিলনের অনুমতি পান না।
লেবার পার্টির ভেতরে এই পরিকল্পনা নিয়ে ব্যাপক বিরোধ দেখা দিয়েছে। এমপি ক্লাইভ লুইস বলেন, “ডেনমার্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটরা অভিবাসনে একধরনের চরমপন্থী অবস্থান নিয়েছে, যা আগে কেবল ডানপন্থীদের মধ্যে দেখা যেত। লেবারকে ভোটার হারানোর মূল্যে এমন পথে যাওয়া উচিত নয়।” একইভাবে এমপি নাদিয়া হুইটোমে বিবিসি রেডিও ৪–এ বলেন, “এই নীতি রাজনৈতিক, নৈতিক ও নির্বাচনী দিক থেকে একটি বিপজ্জনক পথ, যা কিছু ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে বর্ণবাদী।”
তবে মধ্যপন্থী ও “রেড ওয়াল” আসনের কিছু লেবার এমপি উল্টো মত দিয়েছেন। তাদের মতে, রিফর্ম ইউকের ভোট ব্যাংক পুনরুদ্ধার করতে হলে লেবারকে আরও কঠোর হতে হবে। এমপি জো হোয়াইট বলেন, “আমরা যদি এই পথে না যাই, তাহলে আসন্ন নির্বাচনে রিফর্ম ইউকে আমাদের আসনগুলোতে সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠবে এবং আমরা ধ্বংস হব।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর মাহমুদ লেবার সম্মেলনে ঘোষণা দিয়েছিলেন, “এই দেশে অবদান রাখা হবে অভিবাসনের শর্ত।” তার পরিকল্পনায় স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পাওয়ার সময়সীমা ৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করার প্রস্তাবও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে এ নিয়ে তিনি মানবাধিকার সংগঠন ও দাতব্য সংস্থার কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছেন। রিফিউজি অ্যাকশন, সেভ দ্য চিলড্রেন ও অক্সফামসহ শতাধিক সংস্থা তাকে “অভিবাসীকে বলির পাঁঠা বানানো”র অভিযোগে skপন্থী নীতির বদলে বাস্তবসম্মত সমাধানে মনোযোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছে।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে

আরো পড়ুন

আশ্রয়প্রার্থী শিশুদের কৃমি খাওয়ানো হলো হোম অফিসের হোটেলে

অনলাইন ডেস্ক

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যের কঠোর পদক্ষেপ চায় ৮০০ আইন বিশেষজ্ঞ

লন্ডনগামী ট্রেনে রক্তাক্ত হামলাঃ অ্যান্থনি উইলিয়ামসের বিরুদ্ধে ১১ হত্যাচেষ্টার অভিযোগ