ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের স্থিতিশীলতার স্বার্থেই ঢাকা-দিল্লির সুসম্পর্ক চায় আমেরিকা। সেজন্যই বাংলাদেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর দুই দেশের মধ্যে যে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে, তা দূর করতে দুতিয়ালি করছেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। সম্প্রতি তার দিল্লি-ঢাকা-দিল্লি সফরকে এভাবেই মূল্যায়ন করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকেরা।
ভূ-রাজনৈতিক পরিকল্পনায় ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলকে গুরুত্ব দিচ্ছে আমেরিকা। ৩০ বছর ধরে এ অঞ্চল ঘিরে কূটনৈতিক কৌশল সাজাচ্ছে দেশটি। বিশ্লেষকদের মতে, এ অঞ্চলে অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য ওয়াশিংটন যে ঘোষণা দিয়েছে তার মূল লক্ষ্য ইন্দো-প্যাসিফিকে চীনের প্রভাব ঠেকানো। আর এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও ভারতকে সমানভাবে পাশে চায় আমেরিকা। তাই ঢাকা-দিল্লির সম্পর্ককে গুরুত্ব দিচ্ছে ওয়াশিংটন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ফরিদুল আলম বলেন, ‘ডোনাল্ড লু নিশ্চই কোনো ম্যাসেজ দিল্লি থেকে নিয়ে এসেছেন বাংলাদেশে এবং বাংলাদেশের কোনো ম্যাসেজ তিনি নিশ্চই দিল্লির কাছে পৌঁছে দেবেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি চাচ্ছেন বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কটা স্মুথ থাকুক। এই সম্পর্ক যদি স্মুথ না থাকে তাহলে দক্ষিণ এবং দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ায় আমেরিকার যে পলিসি সেটা প্রসিড করা আমেরিকার জন্য বেশ ডিফিকাল্ট।’
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে আগামী সপ্তাহে নিউইয়র্ক যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস। সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাইড লাইন বৈঠক নিয়ে ঢাকার প্রস্তাবে এখনও সাড়া দেয়নি দিল্লি। বিশ্লেষকরা বলছেন, দুদেশের সেতুবন্ধনের কাজটি করতে পারে বাইডেন প্রশাসন।
অধ্যাপক ফরিদুল আলম বলেন, ‘দুই সরকার প্রধানের মধ্যে যদি তারা সম্পর্কটা তৈরি করে দিতে পারে এবং সেই জায়গায় আমার কাছে মনে হচ্ছে আমেরিকা অনেকটাই মধ্যস্থতাকারীল ভূমিকা নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছে।’
পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট যখন ইউএন জেনারেল অ্যাসেম্বলিতে যান উনি সাধারণত কোনো দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন না। যদি দুপক্ষের সূচি মেলে তাহলে হয়ত দেখা হওয়ার একটি সম্ভাবনা আছে।’
তাদের মতে, মিয়ানমারের পর ইন্দো-প্যাসিফিকের অন্য অঞ্চল অস্থিতিশীল হলে আমেরিকার জন্য হিতে বিপরীত হতে পারে।
সূত্রঃ দ্য ওয়ার
এম.কে
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪