আবারও ২ মাসের ব্যবধানে রোহিঙ্গাদের খাদ্য ভাউচারের পরিমাণ কমাতে যাচ্ছে জাতিসংঘ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)।
ডব্লিউএফপি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘তহবিল ঘাটতির কারণে জাতিসংঘ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি তাদের খাদ্য ভাউচারের পরিমাণ কমিয়ে ৮ মার্কিন ডলার বা আনুমানিক ৮৬০ টাকায় নিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছে, যা খাবার-প্রতি মাত্র ৯ সেন্ট বা আনুমানিক ১০ টাকার সমপরিমাণ। ইতোমধ্যেই এ বছরের মার্চে তহবিল ঘাটতির কারণে ডব্লিউএফপি খাদ্য ভাউচারের অর্থ জনপ্রতি প্রতিমাসে ১২ মার্কিন ডলার থেকে ১০ মার্কিন ডলারে কমিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছিল।’
বাংলাদেশে ডব্লিউএফপির রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ ও কান্ট্রি ডিরেক্টর ডম স্কালপেল্লি বলেন, ‘আমরা জরুরিভিত্তিতে সহায়তার জন্য আবেদন করছি, যেন যত দ্রুত সম্ভব আগেরমতো সম্পূর্ণ পরিমাণে রেশন দেওয়া যায়।
জনপ্রতি সহায়তার পরিমাণ ১২ মার্কিন ডলারের কম হলে তা মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনে, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের পুষ্টি এবং ক্যাম্পে অবস্থানরত সকল রোহিঙ্গার সুরক্ষা ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এই শরণার্থী সংকট শুরুর ৬ বছরেও প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে কোনো জীবিকার সুযোগ ছাড়াই বেঁচে থাকার জন্য সম্পূর্ণভাবে মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভর করে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকতে হচ্ছে।
এমনকি ডব্লিউএফপির খাদ্য সহায়তা পাওয়ার পরেও প্রতি ১০টির মধ্যে ৪টি রোহিঙ্গা পরিবার পর্যাপ্ত খাবার গ্রহণ করতে পারছিল না। ১২ শতাংশ শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছিল। এটি খাদ্য সহায়তা কমানোর আগের চিত্র।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘খাবারের ঘাটতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে শরণার্থীদের কাছে নেতিবাচক পদ্ধতি অবলম্বন করা ছাড়া বিকল্প নেই। শিশুদের স্কুল থেকে ঝরে পড়া বা মেয়েদের বাল্যবিবাহ দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে।
রোহিঙ্গারা অবৈধ কর্মসংস্থানের সন্ধান করলে তার ফলে তারা শোষণ ও অপব্যবহারের উচ্চঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারে এবং রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে পারে। যারা সমুদ্রপথে অন্যত্র যাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে চেষ্টা করবে, তারা বিপজ্জনক যাত্রা ও অনিশ্চিত ভাগ্যের মুখোমুখি হতে পারে। রোহিঙ্গারা ক্রমাগত চরম জলবায়ুর হুমকির মধ্যে বসবাস করছে। ১৪ মে ঘূর্ণিঝড় মোখার সরাসরি আঘাত থেকে কক্সবাজার রক্ষা পেলেও, ক্যাম্পগুলোতে বেশ কিছু আশ্রয়স্থল এবং অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছিল।’
স্কালপেল্লি বলেন, ‘ডব্লিউএফপির খাদ্য সহায়তা রোহিঙ্গাদের কাছে খাদ্যের একমাত্র নির্ভরযোগ্য উৎস। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত সকল অবদানের জন্য আমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ, কিন্তু এখনো আমাদের ৫৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার তহবিল দরকার, যেন এই বছরের শেষ পর্যন্ত রোহিঙ্গাদেরকে পূর্ণ মাত্রায় রেশন দেওয়া যায়।’
এম.কে
০৬ জুন ২০২৩